Story
বাংলার ইতিহাসের সাক্ষী শান্তিপুরের রাস উৎসব। আর রাস উৎসবের ঐতিহ্য ভাঙা রাস। তবে নাম ভাঙা রাস হলেও এই সময় বাংলার অর্থনীতির সঙ্গে দারুণভাবে জুড়ে যায় গোটা নদীয়ার অর্থনীতি। এক বিরাট আর্থিক কর্মকাণ্ড চলে গোটা শান্তিপুর জুড়ে। তার সঙ্গে আনন্দ, উন্মাদনা সবই ওতপ্রোতভাবে জুড়ে থাকে। সম্প্রতি শান্তিপুরে হয়ে যাওয়া এই ভাঙা রাস উৎসবের ছবিটাই তুলে ধরল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
শান্তিপুরের প্রায় কুড়ি থেকে বাইশটি বিগ্রহ নিয়ে শান্তিপুরের রাজপথ ধরে নগরকীর্তনে বেরিয়ে পড়েন বাড়ির সদস্যরা। পাল্লা দিয়ে রাজপথে দেখা যায় বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলোকেও। তারাও প্রতিমা নিয়ে শান্তিপুরের রাজপথে নগরকীর্তনে বেরিয়ে যায়। আর এই গোটা কর্মকাণ্ড দেখতে শান্তিপুরের রাস্তায় ঢল নামে দর্শনার্থীদের। রাধা কৃষ্ণকে যেমন এই সময় সাজানো হয় সুন্দরভাবে তেমনি গাড়িগুলিকেও মুড়ে দেওয়া হয় আলো এবং ফুল, মালায়। উৎসবের আনন্দ বাড়াতে সঙ্গে যোগ দেন ঢাকিরা। সব মিলিয়ে শান্তিপুরের ভাঙা রাস যেন উৎসবের মেজাজ পূর্ণ মাত্রায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। তার সঙ্গে অনেকটা সচল হয় অর্থনীতির চাকা।
এমনিতেই করোনার আবহে গোটা রাজ্য জুড়ে বহু মানুষের সংসার অচল হয়ে পড়েছিল। উৎসবের মেজাজ ফিকে থাকায় ঢাকি থেকে সকল ফুল-মালা বিক্রেতাদের কপালে নামে চিন্তার ভাঁজ। একইসঙ্গে আলো ব্যবসাতেও নামে লোডশেডিং। এই অবস্থায় যখন উৎসবকেন্দ্রিক অর্থনীতি অনেকটাই ধাক্কা খায়, ঠিক তখনি প্রশাসনের নির্দেশে উৎসব চালু হওয়ায় প্রত্যেকের মুখেই ফিরে আসে হাসি। ঢাকি থেকে শুরু করে উৎসবের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকটি মানুষ উপার্জনের দিশা দেখতে পান। শান্তিপুরের রাস উৎসব যেন সেই ছবিটাই ফের তুলে ধরল বঙ্গবাসীর সামনে। তবে করোনা আবহের মধ্যে ভাঙা রাসের উৎসব সচল থাকায় গোটা শান্তিপুর মুড়ে ফেলা হয় কড়া প্রশাসনিক নিরাপত্তায়। গোটা শান্তিপুরবাসীও প্রশাসনিক বিধি নিষেধকে মান্যতা দিয়ে মেতে ওঠেন ভাঙা রাসে। প্রতিমা বিসর্জনের ঘাটগুলিতে নিয়োগ করা হয় প্রচুর পুলিশ।
এমনিতেই শান্তিপুরের রাস উৎসব এক জলজ্যান্ত ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে থেকে যায়। দু’দিন ধরে আলোকসজ্জা থেকে শুরু করে মন্ডপ সজ্জায় মাতোয়ারা হয়েছে শান্তিপুরবাসী। তার সঙ্গে জুড়ে যায় ভাঙা রাস। সবমিলিয়ে রাস উৎসব যেমন শান্তিপুরবাসীর মধ্যে ফিরিয়ে আনে উৎসবের মেজাজ। তেমনি নদীয়ার অর্থনীতি বাংলার মানচিত্রে ফুটিয়ে তোলে ব্যাপক প্রভাব।
রনি চ্যাটার্জী
নদীয়া