Daily
করোনা আবহে থমকে গিয়েছিল মেলার চাকা। ধাক্কা খেয়েছিল মেলায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিক্রেতাদের উপার্জন। কারণ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে মেলা হওয়ার ঐতিহ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন, তা আখেরে বিক্রেতাদের কাছে ছিল আশীর্বাদের মতনই। করোনার জন্য এইসকল মেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় ডুবে যান রাজ্যের অসংখ্য হস্তশিল্পীরা। তবে পালটাচ্ছে পরিস্থিতি। পালটাচ্ছে সময়। তারই এক ছোট ছবি ধরা পড়ল বহরমপুরে। যেখানে রমরমিয়ে কয়েকদিন ধরে চলল সোনাঝুড়ি হাট।
সম্প্রতি ক্রিয়েটিভ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও মুর্শিদাবাদ জেলা হস্তশিল্প গোষ্ঠীর উদ্যোগে এবং বহরমপুর পৌরসভার সহযোগিতায় এই সোনাঝুড়ির হাট বসল বহরমপুরে। শুধু বহরমপুর বলে নয়। হাওড়া, হুগলি, মালদা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুরের মত রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলা থেকে এই হাটে এসেছিলেন বিক্রেতারা। নিজেদের হাতের তৈরি বিভিন্ন চারুকলা বিক্রির আশায়। যেখানে প্রতিটি চারুকলাতেই রয়েছে পরিশ্রম, মেধা এবং অধ্যবসায়ের ছাপ।
এই হাটের ফিতে কেটে শুভ উদ্বোধন করেন বহরমপুর পৌরসভার মুখ্য উপদেষ্টা নাড়ুগোপাল মুখার্জি। এই ধরণের মেলার প্রয়োজন যে রয়েছে, সেই বিষয়েও জানালেন বিজনেস প্রাইম নিউজকে। শুধু সোনাঝুড়ি হাট নয়, এই ধরণের মেলা যে হস্তশিল্পীদের জন্য দুর্দান্ত একটি সুযোগ, তাকে অস্বীকারের ভাষা নেই।
দীর্ঘ দু’বছর ধরে বন্ধ ছিল মেলা। দীর্ঘ দু’বছরে ক্রমেই অবস্থা খারাপ হচ্ছিল এইরকম ছোট ছোট হস্তশিল্পীদের। যে কারণে একটা সময় তাঁদের রাতের ঘুম পর্যন্ত উড়িয়ে দিয়ে গিয়েছিল। তবে বাজার যে আবার আগের অবস্থায় ফিরছে, এতেই যেন ধরে খানিকটা প্রাণ ফিরে পেলেন বিক্রেতারা।
এই হাটে আসতে পেরে খুশি যেমন বিক্রেতারা, তেমনি হাসির ঝিলিক দেখা গেছিল ক্রেতাদের ঠোঁটেও। বহুদিন বাদে মেলার আবহাওয়া ফিরে আসায় ক্রেতারাও ভিড় জমিয়েছিলেন নিজের মতন।
এই হাটে ছিল ৪৮টি স্টল। বিভিন্ন জেলা থেকে শিল্পীরা ভিড় জমিয়েছিলেন এখানে। দীর্ঘ দু’বছরের বিরতি এবং জড়তা কাটিয়ে। বিক্রি মোটের উপর খারাপ হয়নি। বিক্রেতাদের পরিশ্রম, আশা কোনটাই জলাঞ্জলি যায়নি। বরং প্রতিদিনই ক্রেতারা সোনাঝুড়ি হাটমুখো হয়েছেন। পরিস্থিতি বদলের যে চাকা ঘুরতে শুরু করেছে, তাতে কার্যত দিশা দেখতে পেয়েছেন হস্তশিল্পীরা। বারবার ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এখন তাঁরা চাইছেন মেলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাক। আর মেলার সংখ্যা বাড়লে যে বাড়বে বিক্রিও।
কুশল শরিফ
বহরমপুর