Daily
শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেমন প্রয়োজন রয়েছে টিকাকরণের, তেমনই ফসলের সুরক্ষায় প্রয়োজন রয়েছে বীজ শোধনের। কৃষি দফতরের এই বার্তা কৃষকদের প্রথম থেকেই মনে রাখাটা জরুরি। কারণ, সম্প্রতি বেশ কয়েক বছর ধরে কৃষকরা ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন না এমন অভিযোগ বারবার উঠে আসছিল। ধান গাছের রোগপোকার সমস্যা কারণে ভালোরকম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের। যে কারণে কীটনাশক এবং রোগদমনের জন্য যে ওষুধ তাদের প্রয়োগ করতে হচ্ছে, সেখানেও মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হতে হচ্ছে তাঁদের। ফলে ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রি হবার মতন অবস্থা হচ্ছে তাঁদের। তার অন্যতম কারণ কি?
বাংলার বহু কৃষক ধান চাষ থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুরে দেখা যাচ্ছে, বহু চাষি ধান চাষ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন মাছ চাষে। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না, কোলাঘাট, শহীদ মাতঙ্গিনী, তমলুক, হলদিয়া, নন্দকুমাী, চন্ডীপুর, খেঁজুরী, নন্দীগ্রাম সহ একাধিক ব্লকের চিত্রটা এখন এমনই। হেক্টরের পর হেক্টর জমি এখন ধান চাষের বদলে চলছে মাছ ও চিংড়ি চাষ। আর এই কারণে রীতিমতো চিন্তিত কৃষি বিভাগ। আর এখানেই কৃষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে চাইছে কৃষি বিভাগ। চাষিদের জানানো হচ্ছে, সামান্য পয়সা খরচ করে এবং বুদ্ধি প্রয়োগ করলেই কিন্তু কৃষকরা লাভবান হবেন। যদি বীজ তলা তৈরীর পূর্বে সামান্য দু- পাঁচ টাকা ব্যয় করে যদি বীজ শোধন করে বীজতলা ফেলেন তবে ধান চাষের ক্ষেত্রে রোগ আক্রমণ অনেকাংশেই কম হবে।
ধানজমিতে যে-সকল রোগ বেশি দেখা যায় সেগুলি হল মাটি বাহিত, বাতাস বাহিত এবং বীজ বাহিত। বীজের মাধ্যমে যে রোগগুলো যায়, সেগুলো এই বীজ শোধনের মাধ্যমেই অনেকটা মুক্ত হয়ে যেতে পারে। আর বীজ শোধনের খরচও কিন্তু খুব বেশি নয়। তাই বীজ শোধন করতে হলে কৃষকদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।
বাংলার প্রধান কৃষিজ ফসল ধান। এই ধান চাষ করেই বহু চাষি নিজেদের উপার্জনের পথ মসৃণ করছেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন কিভাবে, সেই দিশা প্রথম থেকেই দেখিয়ে আসছে কৃষি দফতর। অকারণে খরচের ভয় পেয়ে যে এভাবে ধান চাষ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা, সেটা কোনভাবেই কাম্য নয়। তাই কৃষি দফতর বলছে, বীজ শোধন অবশ্যই প্রয়োজন। তবেই কৃষি অর্থনীতি মজবুত হবে।