Daily

করোনা জ্বরে আবারও কাঁপছে বাংলা। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই দুর্ভোগের সেই চেনা ছবিটা আবারও প্রতিদিন স্পষ্ট হচ্ছে একটু একটু করে। অথচ সাধারণ মানুষের হুঁশ ফিরছে বলে মনে হচ্ছে না।
রাস্তায়, বাসে, হাটে, বাজারে ভিড়ের সেই চেনা ছবিটাই যেন বলে দিচ্ছে করোনা হয়ত আর নেই।
রাজ্যে করোনার দৈনিক সংক্রমণ যখন ৮ হাজারের গণ্ডি পার করছে ঠিক তখনই পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনে বাতিল হল ২৫টি লোকাল ট্রেন। রেলসূত্রে জানানো হয়েছে, চালক ও গার্ড মিলিয়ে মোট ২০ জন করোনায় আক্রান্ত।
ভয়াবহ ছবি ধরা পড়েছে মুর্শিদাবাদ জেলাতেও। জেলায় প্রতিদিনই আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে। হাসপাতালে শয্যার জন্য হাহাকার যেমন রয়েছে, রয়েছে টিকার অভাবও। গত ৪৮ ঘণ্টায় দুই প্রার্থী সহ মোট ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই জেলায়। হাসপাতাল থেকে বেরচ্ছে একের পর এক পিপিই পরা লাশ। করোনার সার্বিক চিত্র নিয়ে যখন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শোনাচ্ছেন একের পর এক সতর্কতামূলক বিধি ব্যবস্থা, ঠিক তখনই বাঁকুড়ার শাসপুর রেলস্টেশনে ক্যামেরায় ধরা পড়ল সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র।
ভারতীয় রেল ইতিমধ্যেই স্টেশনে ও ট্রেনে মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। রয়েছে জরিমানার ব্যবস্থাও। অথচ সেই স্টেশনে যাত্রীদের অধিকাংশের মুখেই নেই মাস্কের বালাই। কারণ জানতে চাইলে উঠে আসল অদ্ভুত সব উত্তর। কেউ বলছেন ভুলে গিয়েছি। কেউ বলছেন, জানিনা। আর হকার ভাই তো হেসেই বাঁচছেন না। ভাবখানা এমন যেন মুখ লুকনোর জায়গা নেই। স্টেশনে বেরাতে এসেছেন বিকেল বেলায়। হাতে মোবাইল, সাজুগুজুতেও আছে পরিপাটি। মাস্কের বেলাতেই হয় ভুলচুক।
স্টেশন থেকে একটু বাইরে বেরোতেই খোলা আকাশের নিচে চেয়ারে মোবাইলে মগ্ন ইনি। যথারীতি বালাই নেই মুখে মাস্কের। তবে রেল যে জরিমানা চালু করেছে সে কথা জানালেন স্টেশনের বুকিং এজেন্ট। ট্রেনের কামরায় কার মুখে মাস্ক আছে আর কার নেই, সেটা দেখার দায়িত্ব টিটির। বলেই ঘাড় থেকে দায়িত্ব ঝেরে ফেললেন ট্রেনের গার্ড।
কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ সহ বিভিন্ন জেলায় করোনা যখন গ্যালোপিং গতি পেয়েছে তখন শাসপুর স্টেশনের এই ছবিটা মানানসই কি? বিবেচনা করুন আপনারাই।
কলকাতা থেকে মানস চৌধুরির সঙ্গে বহরমপুর থেকে কুশল শেরিফ ও বাঁকুড়া থেকে আব্দুল হাইয়ের রিপোর্ট