Daily
এক দেশ, এক নিশান আর এক রেশন। এই স্লোগান মানেই নরেন্দ্র মোদি। মোদি মানেই বিজেপি। বিশেষত জিএসটি চালু পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে হামেশাই ঘুরে ফিরে আসতো এক দেশ এক করের পর এক দেশ এক রেশন।
করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ বেআব্রু করে দিয়েছে ভারতের অর্থনীতিতেকে। করোনা না আসলে বোধহয় ভারতবাসী জানতেই পারতো না পরিযায়ী বলে একটা শব্দ অভিধানে আছে।
নগদের স্বল্পতায় ভুগতে থাকা অর্থনীতিতে নতুন জোয়ার আনতে অর্থনীতিবিদদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা যখন বলছেন, সরকারকে জনগণের হাতে পর্যাপ্ত নগদের জোগান দিতে হবে। তখনই যাবতীয় পরামর্শকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে মোদি সরকার দু-দুবার কৌশলী আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। ঘোষণা করেছেন রেশন দেওয়ার নীতিও। কিন্তু নীতি ও বাস্তবের মধ্যে বেশ কয়েক যোজনের ফারাক রয়েছে বলেই বিরোধীদের অভিযোগ।
বিরোধীদের অভিযোগ একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতো নয় তা টের পাওয়া গেল সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনায়। এক দেশ এক রেশন চালু নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চূড়ান্তভাবে হুঁশিয়ারি দিল দেশের শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ ও ভর্ৎসনা রীতিমতো উদ্বেগ বাড়িয়েছে দেশের। এক দেশ এক মিশন চালু নিয়ে কোর্টের তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক। বিচারপতিরা সরাসরি বলেন, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের ভূমিকা ক্ষমার অযোগ্য।
এক দেশ এক রেশন প্রকল্পের জন্য সরকারকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল যে, সরকার ঠিকমত কাজ করছে না। আদালতের তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের নীতি। শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালত জানায়, আগামী ৩১ জুলাই এর মধ্যে সরকারকে এক দেশ এক রেশন নীতি বাস্তবায়িত করতে হবে। একইভাবে আদেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতেও।
অতিমারি পরবর্তী অর্থনীতিতে মানুষের হাতে কাজ ও খাদ্যের জোগান সুনিশ্চিত করতে পারলেই ঘুরে যাবে অর্থনীতির চাকা। দেখতে হবে না পরিযায়ীদের দুর্দশার ছবি।
হাতে কাজ থাকলেই বাড়বে হাতে নগদের জোগান। আর নগদের জোগান বাড়লেই বাড়বে চাহিদা রেখা। চাহিদা রেখার বৃদ্ধি অর্থনীতিতে ইতিবাচক দিক। অর্থনীতিবিদদের আশা, একমাত্র জিডিপি বাড়তে পারে চাহিদা রেখা বাড়লেই। তখন মানুষ বাজারে কেনাকাটা করবে। আর সেই অর্থ ছড়িয়ে পড়বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তৈরি হবে অর্থনীতিতে চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য।
দেশে মোদি বিরোধীরা আরো অভিযোগ করেন, মোদিজি নাকি বলেন বেশি কাজ করেন কম। তবে সুপ্রিম কোর্টে তোপের মুখে পড়ে আগামী এক মাসের মধ্যে কিভাবে দেশজুড়ে এক দেশ এক রেশন চালু করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন দেশের বড় অংশের মানুষরা।
ব্যুরো রিপোর্ট
বিজনেস প্রাইম নিউজ।