Daily
তাল গাছ যেন কল্পতরু। তালের রস থেকে গাছের রস, এমনকি তালের শাঁসটুকুও দিয়ে দেয় উদারহস্তে। চিঁড়েচ্যাপটা গরমের ভ্যাপসা ভাব থেকে একটু মুক্তির জন্য বাজারে গিয়ে তাল শাঁসের খোঁজ করেন না এমন লোকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। তার উপর সামনেই আবার উৎসবের ভরা মরশুম। আর এই উৎসবের দিনে তালকে কেন্দ্র করে একটা বিরাট ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড চলে বাংলার বাজারজুড়ে। বিশেষত তাল শাঁসের ডিম্যান্ড থাকে চরমে। কাজেই এই সময়টায় বাজার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তালের শাঁস। তাল পারা থেকে শুরু করে তালের শাঁস বিক্রি, এবং এই কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি মানুষের জীবন-জীবিকার কাহিনী উঠে এসেছে আমাদের ক্যামেরায়।
বছরে দেড় থেকে দু’মাস তাল শাঁসের কাজ হয়। তাল কেটে দৈনিক ১৫০০ টাকা মত রোজগার হয় তাদের। বছরের অন্যান্য সময় চাষের কাজ বা রাজমিস্ত্রির কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন তারা। তাই এই সময়টুকুই আর্থিকভাবে ভরিয়ে রাখে তাদের। গোটা বছরের সঞ্চয় বলতে যা বোঝায়, তা এই সময়টাতেই ঘরে তোলেন তারা।
তবে, আগের চেয়ে তাল গাছের সংখ্যা এখন বেশ কম। চাষের জমিতে তাল গাছের পাতা পরে বলে, অনেক তাল গাছ কেটে ফেলা হয়েছে ইতিমধ্যেই। তাই নদীয়া জেলার যেই জায়গাগুলোতে সারি বাঁধা তাল গাছ নজরে আসত, সেই জায়গাগুলোতে এখন গাছের চাপ অনেকটাই কম। কাজেই রোজগার কমেছে, এই কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের। যদিও নারায়নপুর, হরিণঘাটা অঞ্চলে তাল গাছের সংখ্যা বেশি হওয়ায় তারা তালের শাঁস বিক্রি করে দিন গুজরান।
বছরের অন্যান্য সময় অন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এই সময়টা যেন তাদের সংকটমোচনের সময়। আয় একটু বেশি বলে ঋণ পরিশোধ কিংবা জরুরী প্রয়োজনের জন্য দরকারি টাকা তারা এই সময়টাতেই রোজগার করেন। তাই চাতক পাখির মত গোটা বছর জুড়ে ঠিক এই সময়টার জন্যেই অপেক্ষা থাকে তাদের। কাজেই জ্যৈষ্ঠের এই সময় যে তাল ব্যবসায়ীদের লক্ষ্মীলাভের সময়, তা বলাই যায়।