Daily
একদিকে যখন রাশিয়াকে কার্যত চেপে ধরছে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলো, তখন রাশিয়াও প্রমাণ করতে মরিয়া যে তারাও হাল ছাড়ার পাত্র নন। বিভিন্নরকম নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানির সম্পর্ক নষ্ট করা। ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলো হয়তো আর কোনও উপায়ই বাকি রাখেনি রাশিয়াকে কোন ঠাসা করতে। অবশ্য রাশিয়া এতকিছুর পরেও দুনিয়ার কাছে এটাই প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের বিন্দুমাত্রও যায় আসেনি। অন্তত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত জেনদি গাতিলভের মন্তব্যে এমনটাই বোঝা যাচ্ছে। কারণ এবার ইউক্রেনের সঙ্গে শস্য রপ্তানি সংক্রান্ত যে চুক্তি করেছিল রাশিয়া, তার থেকে পিছ পা হতে চায় পুতিনের দেশ। এমনটাই জানালেন সেই দেশের রাষ্ট্রদূত। চলতি বছর জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি হয়েছিল। এখন অবশ্য সেই চুক্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘে নথিও জমা দিয়েছে রাশিয়া।
অনেকেই হয়তো এই বিষয়টি জানেননা যে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ কৃষি পণ্য সরবরাহকারী দেশ হল এই ইউক্রেন। প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ইউক্রেন প্রায় সাড়ে চার কোটি টন শস্য রপ্তানি করে থাকে। কিন্তু রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কার্যত দিশাহীন হয়ে পড়ে ইউক্রেনের রপ্তানি ব্যবস্থা। আর ঠিক এমন সময়ই, রীতিমত আলাদিনের জিনের কাজটা করে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় তৈরি হওয়া চুক্তিটি। এই চুক্তির হাত ধরেই যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থাতেও নিরাপদে শস্য রপ্তানির সুযোগ পেয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধতে যে শত্রুকে কোনোরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়না সে কথাই আবারও প্রমাণ করল রাশিয়া। ইউক্রেনকে বড়সড় ঝুঁকির মুখে ফেলতে তাই এই চুক্তি থেকে বেড়িয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিল পুতিন সরকার। এমনকি এই বিষয়ে শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক সম্মেলনে দাবি করেন, ইউক্রেন সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ না করলে শস্য রপ্তানির এই করিডর বন্ধ করে দেবে রাশিয়া।
রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রান যায়। বর্তমানে প্রবাদ বাক্যটির বাস্তবিক রূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ। বলা বাহুল্য, ৯ মাস হতে চলল যুদ্ধের বয়স। যুদ্ধের কারণে যে কেবল এই দুই দেশেরই ক্ষতি হয়েছে এমনটা কিন্তু নয়। এর ফল ভুগছে গোটা বিশ্ব। করোনা মহামারির জেরে একেই খুঁটি উপড়ে গিয়েছিল বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর। তাহলে কি এই যুদ্ধের কারণে কফিনের শেষ পেরেকটিও পোতা বাকি রইলনা।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ