Trending
ব্রিটেনে হায়ার স্টাডিজ বা রিসার্চ ওয়ার্ক করতে চাইছেন? শেষ হলেই চাকরি না পেলে? হোটেল, রেস্তোরাঁয় কাজ পেয়েছেন? সেখানেও কিন্তু সঙ্কট। ব্রিটেন যেন নতুন করে সমস্যা তৈরি করল। কারণ ভিসা নিয়ে খুব কড়াকড়ি করছে ব্রিটেন। আর এটা ভারতের জন্য খুব প্রবলেমেটিক। ঝামেলা পোহাতে হবে ভারত থেকে আসা পড়ুয়া, কর্মীরা। মানে মোদী-সুনক কেমিস্ট্রি কোনভাবেই কাজে লাগছে না। গতি আনতে পারছে না সম্পর্কে। ঠিকই যে এই কড়াকড়ি শুধু ভারতীয়দের জন্য নয়। সব দেশের জন্যই সেটা অ্যাপ্লিকেবল। কিন্তু ব্রিটেনে প্রায় ১৮ লক্ষ ভারতীয় থাকে। তাদের অবস্থা এবার কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? ব্রিটেন দিয়েছে সেই নিদান। সুনক সরকার নিয়মে কড়াকড়ি করছে ঠিকই, তবে মানতে পারলে কিন্তু ব্রিটেনে আসা পড়ুয়া এবং কর্মীরা কোন ঝামেলায় পড়বেন না। তাহলে কোন কোন নিয়মে বদল এলো সেটাই বলব আজকের প্রতিবেদনে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক এক্স হ্যান্ডলেতে জানিয়েছেন, অভিবাসন খুব বেড়ে যাবার কারণেই এখন কমানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউকে। এই বদলটা এতদিন কোন সরকার না করার জন্য অভিবাসনের চাপে হাঁসফাঁস করছিল ব্রিটেন। তাই সুনক গভর্নমেন্ট এই স্টেপ নিতে চলেছে। কি স্টেপ নিচ্ছে? ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি তাঁদের পার্লামেন্টে নতুন করে ৫ দফা ভিসা আইনবিধি নিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন, সেটা অ্যাপ্লিকেবল হবে সামনের বছর থেকে। ভারতীয় পড়ুয়া এবং কর্মীদের জন্য এটা খুব ইম্পরট্যান্ট। ভিসাতে নতুন কী কী বদল এলো? সেদিকে চোখ বোলানো যাক।
২০১২ সাল থেকে ব্রিটেনে ওয়ার্কিং ভিসা নিয়ে একটা শর্ত বজায় ছিল। যেখানে বলা হয়েছিল ওয়ার্কিং ভিসা পেতে গেলে, ইয়ারলি মিনিমাম স্যালারি হতে হত ২৬ হাজার ২০০ পাউন্ড। কিন্তু কামিং এপ্রিল থেকে স্যালারির সেই বার বাড়িয়ে করা হল ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড। মানে কম স্যালারি নিয়ে ব্রিটেনে গেঁড়ে বসার দিন- টাটা…বাইবাই..গয়া। এতে আমাদের ভারতীয়দের জন্য কী প্রবলেম তৈরি হল? অনেক ভারতীয় ব্রিটেনের হোটেল-রেস্তোরাঁয় যে মোটামুটি একটা মাইনের কাজ নিয়ে ব্রিটেন পাড়ি দিতেন, সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে ব্রিটেন। তবে হেলথ-কেয়ার সার্ভিসে সেই ছাড় রয়েছে। কিন্তু গেড়ো এক্ষেত্রেও অন্য একটা জায়গায়। নয়া আইনের মতে, নিজের লাইফ পার্টনার, বা ফ্যামিলির কাউকে ব্রিটেনে নিয়ে আসা যাবে না। অর্থাৎ সমস্যা এক্ষেত্রে আবার অন্য জায়গায়।
ভিসার নতুন আইন মোতাবেক লাইফ পার্টনারের ক্ষেত্রেও একটা সমস্যা তৈরি করছে সুনক সরকার। সেটা আবার খোদ ব্রিটিশ নাগরিকদের সমস্যায় ফেলে দেবে। ব্রিটেনের কোন সিটিজেন যদি ভিনদেশি কাউকে বিয়ে করে ব্রিটেনে সংসার পাতার কথা ভাবেন, তাহলে রয়েছে বেজায় চাপ। সেক্ষেত্রে ঐ ব্রিটিশ নাগরিককে ইয়ারলি ইনকাম করতে হবে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড, এতদিন সেটা ছিল ১৮ হাজার পাউন্ড। তবে, ভিসা নিয়ে আইনের রদবদলের কারণে সমস্যায় পড়বেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। পড়ুয়ারা হায়ার স্টাডিজ বা রিসার্চের জন্য ব্রিটেন আসতেই পারেন, প্রথম সেক্ষেত্রে তাঁদের একাই আসতে হবে। আর সেকেন্ডলি, ব্রিটেনে পড়াশোনা শেষ করার পর চাকরি পাবার জন্য যে দু’বছরের টাইম স্প্যান পেতেন, সেটা মনে হয় সুনক সরকার অ্যালাও করবে না। তার মানে ভারতীয়রা কোন কোন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্থ হলেন?
যে সকল ভারতীয় ছোট বা মাঝারি কাজ নিয়ে ব্রিটেনে গিয়েছেন এবং ভারতীয় মহিলার সঙ্গেই বিবাহের গাঁটছড়া বাঁধার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁদের অবস্থা শোচনীয়। ব্রিটেনের বহু রেস্তোরাঁয় ইন্ডিয়ান কুকের ডিম্যান্ড রয়েছে। তাঁরা অপেক্ষাকৃত কম মাইনেতে কাজ করেন। সেটা বেশ কঠিন হয়ে যাবে। তৃতীয়তঃ হেলথ-কেয়ার সার্ভিসে ফ্যামিলি নিয়ে আসার ব্যপারে কড়াকড়ি করার কারণে বহু ভারতীয় মেন্টালি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। মোদ্দা কথা কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি করার যাবতীয় সুযোগ একেবারে খুলে দিল সুনক সরকার। তবে এই সরকারের তরফ থেকে কড়াকড়ি করার ব্যপারে একটা সাফাই দেওয়াও হয়েছে। গত বছর জুনে একটা রিপোর্ট তারা প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এক বছরে ব্রিটেনে অভিবাসীর সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছিল ৭ লাখের ওপর। সেটা নাকি নয়া নিয়মে এক ধাক্কায় ৩ লাখ কমবে।
দিনের শেষে ব্রিটেন ভিসা নিয়ে যা সব আইন নিয়ে আসছে, আপনার কি মনে হয় এই সব আইনের গেরোয় পড়ে ভারতীয়দের মধ্যে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হবে না? টেমস নদীর দেশে গিয়ে সেটলড হবেন এমন স্বপ্ন বহু ভারতীয়র ছিল। আর দুই দেশের কর্মসংস্থানে যে গতি ছিল সেটা ব্রিটেন এবং ইন্ডিয়ার ইকোনমিকে ভালোরকম বুস্ট করত। কিন্তু নতুন যে আইন তারা নিয়ে এলো, সেখান থেকে পরিষ্কার- উচ্চ বেতন, উচ্চ পদ এসব না থাকলে এখন ব্রিটেন যাওয়া বেশ কঠিন। কারণ কম মাইনের চাকরি নিয়ে গেলে কিন্তু ভাগ্য টলোমলো হবেই। আপনারাও কি একমত? জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে ভিসা নিয়ে এই প্রতিবেদন শেয়ার করুন আপনাদের চেনা-পরিচিতদের মধ্যে যারা ব্রিটেনে গিয়ে কর্মভাগ্য ঘোরাবার কথা ভাবছেন। আর নতুন হলে ভুলবেন না সাবস্ক্রাইব করতে আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ