Trending
প্রকৃতি সদয় নাকি মোদীর ভাগ্য একটু বেশিই ভালো? নাকি মোদী সরকার আসার আগে সরকারের উদাসীনতা ছিল ভালো রকম? সেটা আপনারা বিপিএনের দর্শকরা ঠিক করবেন। কিন্তু কয়েক মাস যাবত ভারত যেভাবে একের পর এক জ্যাকপট হাতে পাচ্ছে, তাতে মনে করা হচ্ছে, ভারত এবার তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে। অন্য দেশের দিকে হাপিত্যেশ করে তাকিয়ে বসে থাকবে না। বরং ভারতের অর্থনীতিতে এক বড় রকম জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে পুরোটাই। লিথিয়াম, ইউরেনিয়ামের পর এবার ভারতভূমি থেকে পাওয়া গেল ১৫টি রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট। সেগুলো কি, পরে বলছি। কিন্তু আগে এটা বলে রাখি যে, এই রেয়ার আর্থ এলিমেন্টগুলোই কিন্তু দেশের ভাগ্য চিরতরে বদলে দিতে পারে।
কয়েক দিন আগেই জম্মু-কাশ্মীরে বিপুল পরিমাণ লিথিয়ামের সন্ধান পাওয়া যায়। আমরা সবাই জানি, লিথিয়ামের ভ্যালু আজকের দিনে কতটা। কোন দেশ যদি হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ লিথিয়ামের খোঁজ পেয়ে যায়, তাহলে অন্য দেশ যেমন চিন বা আমেরিকা যারা ম্যানুফ্যাকচারিং দুনিয়ায় ছড়ি ঘোরায়, তাদের অবস্থা একটু কাহিল হয়ে পড়ে। চিন্তার ভাঁজ পড়ে তাদের কপালে। কিন্তু এবার লিথিয়াম নয়। বরং বলা ভালো এক ধাক্কায় ১৫টি রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট খুঁজে পেল ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিন-জাপান-আমেরিকার কপালে সত্যি সত্যি দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলছে প্রকৃতি। কারণ, এই রেয়ার আর্থ এলিমেন্টগুলো বহু সেক্টরে ব্যবহার করা হবে। যা দেশের অর্থনীতির জন্য কার্যত জ্যাকপট হতে চলেছে। কোন কোন সেক্টরে- সেটা বলার আগে একবার রেয়ার আর্থ এলিমেন্টগুলো কী কী সেটা বলে নেওয়া যাক।
রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট তাদেরই বলে, যেগুলো এই দুনিয়ার সর্বত্র পাওয়া মুশকিল। অবশ্যই যে কারণে রেয়ার বলা হয়। পর্যায় সারণীর এই সকল মৌলগুলো খুবই বিরল। মূলত ল্যান্থানাইড সিরিজের মৌলগুলি এক্ষেত্রে খুঁজে পাওয়া গেছে। যার মধ্যে রয়েছে ল্যান্থানাম, সেরিয়াম, প্র্যাসিওডিয়াম, নিওডিমিয়াম, হাফনিয়াম, ট্যান্টালামের মতন বিভিন্ন মৌল। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, পর্যায় সারণিতে ল্যান্থানাইড এবং অ্যাক্টিনাইট সিরিজের মধ্যে এই খনিজগুলি রয়েছে। ১৫টি ধাতব মৌলের সমন্বয়ে তৈরি এগুলি হল ল্যান্থানাইড সিরিজের বিশেষ শ্রেণি। এই শ্রেণির মৌলগুলোর পারমাণবিক সংখ্যা থাকে ৫৭ থেকে ৭১-এর মধ্যে। যে ১৫টি রেয়ার আর্থ এলিমেন্ট পাওয়া গেছে, সেগুলি যদি ঠিকঠাকভাবে ব্যবহার ভারত করতে পারে, তাহলে ইন্ডিয়ান ইকোনমির জন্য সেটা গেম চেঞ্জার হতে পারে।
এই খনিজ পদার্থগুলি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা সম্ভব? বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধরণের বিরল মৌলগুলি মহাকাশ, প্রতিরক্ষা, সেলফোনের মতন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলায় মাটি খুঁড়ে এই দুর্লভ মৌলের সন্ধান পেয়েছেন ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। বলাই বাহুল্য, ৫৯ লক্ষ টন লিথিয়ামের ভাণ্ডার জম্মু-কাশ্মীরে খুঁজে পেয়েছিল জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। যা ভারতকে বিশ্বে এক নম্বর অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার হিসেবে দাঁড় করাতে পারে। তারপরেই আবার রেয়ার আর্থ এলিমেন্টের খোঁজ যেন গোটা বিশ্বের কাছে ভারতের পক্ষ থেকে একটা বার্তা ছুঁড়ে দেওয়া হল। ভারত যে আত্মনির্ভর হতে চাইছে, সেটা মনে হয় খোদ প্রকৃতিও বুঝতে পারছে। না-হলে এতদিন এই সব খনিজ ভাণ্ডার কোথায় ছিল?
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ