Daily

লাদাখ থেকে সুন্দরবন। আর্সেনিক হোক বা শিল্পবর্জ্য বা শৌচকর্ম। দূষিত হচ্ছে জল। আর এই জল দূষণ নিয়েই দীর্ঘ দু’দশক ধরে তাঁর অক্লান্ত গবেষণা। শুধু দেশেই নয়, বিদেশের মাটিতেও তিনি জলদূষণ নিয়ে করেছেন পরীক্ষা নিরীক্ষা। উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকা, চিন সহ ১২টি দেশের গবেষণাগারে তিনি ধরে রেখেছেন সাফল্য। অবশেষে পরিশ্রমের ফসল হিসেবে স্বীকৃতি এলো জিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ আমেরিকা থেকে। সেখানকার ফেলো নির্বাচিত হলেন কালীঘাটের অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বঙ্গসন্তান হিসেবে তো বটেই প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইতিহাসে জুড়ে গেল এক বাঙালির নাম। তাঁর হাত ধরে বিশ্ববিজ্ঞানের মঞ্চে খড়গপুর আইআইটির মুকুটে যুক্ত হল নতুন পালক।
১৮৮৮ সালে জিওলজিক্যাল সোসাইটি অফ আমেরিকার যাত্রা শুরু। তারপর থেকে এতদিন পর্যন্ত কোন বাঙালিই সেখান থেকে ফেলো নির্বাচিত হননি। অবশেষে খবরটা এলো তিন মাস আগে। বিশ্বের যে ৩০ জন ভূ-পদার্থবিদকে ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে কালীঘাটের অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নামও। সাউথ পয়েন্ট থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তারপর পড়াশুনোর জন্য পৌঁছে যাওয়া আমেরিকার কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর বছর তিনেক কানাডার অ্যালবার্টা জিওলজিক্যাল সার্ভেতে চলে তাঁর গবেষণা। কিন্তু বিদেশের মাটি নয়। দেশের মাটিতেই তিনি গবেষণা চালানোর জন্য ফিরে আসেন ভারতে। টানা ১০ বছর ধরে চালিয়ে যান অধ্যাপনা। পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে গবেষণার কাজও। বর্তমানে তিনি খড়গপুর আইআইটি’র জিওলজি অ্যান্ড জিওফিজিক্স বিভাগের অধ্যাপক।
তবে বিদেশের মঞ্চ থেকে সাফল্য আসার আগে দেশের মাটিতে তিনি সাফল্য কুড়িয়ে নিয়েছেন। ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত থেকে পেয়েছেন ন্যাশনাল জিওসায়েন্স অ্যাওয়ার্ড। ২০২০ সালে দেশে বিজ্ঞানের সেরা সম্মান শান্তিস্বরূপ ভাটনগর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন তিনি। ৫০ বছরের কম বয়সী দেশের সেরা ৫০ জন বিজ্ঞানীদের মধ্যেও নাম রয়েছে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। অভিজিৎ এই বিরল সম্মান পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত খড়গপুর আইআইটির অধিকর্তা অধ্যাপক বীরেন্দ্রকুমার তিওয়ারি। তিনি জানিয়েছেন, এটা শুধু খড়গপুর আইআইটির জন্যই গৌরবজনক খবর নয়, ভারতের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছেই এটা প্রাপ্তি সংবাদ।
ব্যুরো রিপোর্ট