Trending

সন্দেশখালির পদ্ম কন্যা তিনি। কিন্তু ভোটে হারার পর তাড়া খেয়েছেন ঘাসফুল শিবিরের সমর্থকদের কাছে। তবে ভোট মিটতেই আবার ফিরেছেন নিজের মেজাজে। সেই রেখা পাত্র এবার বলছেন, আর অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। কিন্তু কেন রেখা পাত্র এমন বলছেন? একদা যার হাত ধরে বিজেপি চেয়েছিল বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে জয় ছিনিয়ে আনবে, সন্দেশখালির বিজেপির মুখ সেই রাখা পাত্রের কাতর আর্জি। অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। কিন্তু অত্যাচারটা কিসের? ভোট পরবর্তী হিংসার।
লোকসভা নির্বাচন মিটে গেছে। ফলাফল প্রকাশিত। হারজিতের নতুন কোন সমীকরণ এখন আর দেখার নেই। কিন্তু ভোট পরবর্তী হিংসায় খামতি নেই। আর এই হিংসার শিকার কে হচ্ছেন? বিজেপির নেতা কর্মীরা। সেখানে নাকি এখনো তৃণমূলের অত্যাচারের আবহ। বারবার সেই অত্যাচারের মুখে পড়ছেন বিজেপি নেতা কর্মীরা। আর তাঁদের বাড়িই ছুটে ছুটে যাচ্ছেন রেখা পাত্র। সেখানে গিয়ে তিনি দেখছেন কেমন আছেন বিজেপির নেতা-কর্মী সকলে। সেটা দেখতে গিয়েই তাঁকে শুনতে হচ্ছে অত্যাচারের পর্ব। অনেকেই বলেছিলেন যে, ৩ লাখ ভোটে হারার পর রেখা পাত্র নাকি রাজনীতির ময়দান থেকে খানিক হাওয়া হয়ে গেছিলেন। নির্বাচনের আগে যেভাবে রেখা পাত্রকে দাপিয়ে বেরাতে দেখা যেত গোটা সন্দেশখালিতে, সেই রেখা পাত্রকেই একেবারে হারিয়ে যেতে দেখা গেছিল নির্বাচনের পর। অনেকেই বলেছিলেন বিজেপির ভরাডুবির পর নাকি একেবারে উধাও হয়ে গেছেন রেখা পাত্রকে। কিন্তু আসলে কী তাই? একেবারেই না। যদি রেখা পাত্রের ফেসবুক পোস্টে নজর দেন, তাহলে দেখবেন রেখা পাত্র কিভাবে সেখানে অ্যাক্টিভ রয়েছেন। তবে সেটা শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে নয়। তিনি যে পথে পথে ঘুরে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন সেটা তিনি দেখাচ্ছেন।
এই যেমন এখানে তিনি বলছেন, সন্দেশখালির বিধানসভার রাজবাড়ির ৩৩ নং বুথের বিজেপি কারজকর্তা সাধন রণজিৎ মহাশয়ের পরিবার ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছিলেন। আজ ওনার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এলাম। যেকোন পরিস্থিতিতে ভারতীয় জনতা পার্টি কর্মী সমর্থকদের পাশে থাকতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। যদি ভালো করে লক্ষ্য করেন, দেখবেন এই পোস্টগুলো করার সময় রেখা পাত্র কাদের ট্যাগ করেছেন। রয়েছেন প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, অমিত মালব্যর মত একাধিক বিজেপির মাথারা। আবার কিছুক্ষণ পরের পোস্টে রেখা পাত্র কাতর আর্জি জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। সেখানে তিনি বলেছেন, আর কর্মীদের উপর অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। দাদা তুমি সত্যের জয় করে দেখিও। সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর একটা ছবি দিয়েছেন। যেখানে রয়েছে লেখাঃ তৃণমূলের চার সাংসদের ভবিষ্যৎ কি অনিশ্চিত? সেখানে লেখা রয়েছে ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী ডায়মন্ড হারবার, বসিরহাট, জয়নগর এবং ঘাটাল- এই চার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীরা কলকাতা হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করবেন। তৃণমূল শুনে রাখুক, এই ইলেকশন পিটিশন ৪-৫ বছর ধরে ঝুলে থাকবে না। ৬ মাসের মধ্যে যাতে এর নিষ্পত্তি হয় সেই ব্যবস্থা করছি।
রেখা পাত্র আছেন রেখা পাত্রের জায়গায়। সন্দেশখালির বিজেপির মুখ তিনি। সহজে পিছু হটবেন না সেটাও বোঝা যাচ্ছে। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে রেখা পাত্র যে কার্যত উবে গেছিলেন, এখন তাঁর ফেসবুক পোস্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে সেটা একেবারেই অমূলক একটি বিষয়। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের ঘরে ঘরে তিনি ঘুরছেন। সঙ্গে আর্জি জানাচ্ছেন, আর অত্যাচার সহ্য করতে পারছি না। এখন বিজেপির মাথারা কিভাবে রেখা পাত্রকে এবং সন্দেশখালির আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের অত্যাচার থেকে বাঁচার রক্ষাকবচ দেন সেটাই দেখার।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ