Agriculture news
অগ্নিসাগর কলা, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম। কলার কথা বলতে গেলেই হলুদ অথবা সবুজ কলার কথাই আমাদের মাথায় আসে। কিন্তু স্বাদে এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর এই অগ্নিসাগর কলা বা লাল কলার চাহিদা বাজারে বরাবরই শীর্ষে থাকে। চাষ লাভজনক হওয়ায় চাষিদের মধ্যেও এই কলা চাষের আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। প্রচুর পরিমাণে আয়রনে সমৃদ্ধ হওয়ায় এই কলার খসার রংটা লালচে হয়। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই কলা চাষ হলেও পশ্চিমবঙ্গে খুবই বিরল। আর এবার সেই বিরল কলা চাষেই নজির গড়ল উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বারাসাত ১ নং ব্লক। চলুন দেখে আসা যাক কীভাবে সেখানে লাল কলার চাষ করছেন চাষিভাইরা।
আজ থেকে প্রায় ১০ মাস আগে বারাসাত ১ নং ব্লকের ছোট জাগুলিয়াতে আছেমা বিবির জমিতে এই নতুন ধরণের কলা চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। চাষের সমস্ত খরচ দেওয়া হয় পঞ্চায়েত থেকেই। ১০০ টি মতো কলা গাছের চারা বসানো হয় তাঁর জমিতে। দীর্ঘদিন যত্ন করে চাষ করার পর প্রতিটি গাছেই ফল হয়। আর আজ এই লাল কলা চাষ সেই এলাকায় এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে আশে পাশের এলাকা থেকে প্রচুর লোক ভিড় জমাচ্ছেন, ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন, এমনকি নিজেরাও এই লাল কলা চাষের আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
সাধারণ কলা চাষের সঙ্গে এই প্রজাতির কলা চাষের সামান্য কিছু পার্থক্য রয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় কৃষক সইদুল আলী। কীভাবে লাল কলা চাষ করতে হবে সে বেশিয়েও জানালেন বিস্তারিতভাবে। তিনি বলেছেন এই চাষ সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে হয়। এই চাষের জন্য প্রয়োজন সার , তেল সবটাই আলাদা ভাবে লাগে । চারা বড় হওয়ার পর থেকে সার দিতে হবে গোঁড়ায় জল দিতে হবে । সপ্তাহে তিনদিন স্প্রে করে যেতে হবে ।
যেহেতু গ্রাম বাংলায় আয়রনের অভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তাই জন্যই এই লাল কলা চাষে তৎপর হয় সরকার। আর এই লাল কলায় যেহেতু আয়রন ভরপুর, তাই গ্রাম বাংলার আয়রনের অভাব দূর করতে এই লাল কলা চাষ বেশ ভালো রকম সারা ফেলবে বলে আশা রাখছে বারাসাত ১ নং ব্লকের বিডিও সৌগত পাত্র। আগামীদিনে আরও অনেক চাষি এই চাষে আগ্রহ দেখানেব বলেও আশাবাদী তারা।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই কলা চাষ করে আয়ও যেমন ভালো হচ্ছে, তেমনই নতুন ধরণের কলা চাষে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে চাষিভাইদের। তাই আগামীদিনে এই লাল কলা চাষ করার বিষয়ে চাষিভাইদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।
বিক্রম লাহা
উত্তর ২৪ পরগণা