Story
আটপৌরে বাঙালির সুখী গৃহকোণে আজও শোভা পায় তাঁতের শাড়ি। বলা যেতে পারে, বাংলা এবং বাঙালির তাঁত শিল্প কবে থেকে যে হাত ধরাধরি করে চলে আসছে এই বাংলার বুকে সেটা কেউই হলফ করে বলতে পারেনা। এতটাই সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যশালী বাংলার তাঁত শিল্প। কিন্তু সময়ের গতিতে ক্রমশ পিছিয়ে পড়া বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে আরও একবার সামনের সারিতে টেনে নিয়ে আসতে বলা ভালো শিল্পের সঙ্গে জড়িত মহিলাদের স্বনির্ভর করতে একরকম সংকল্প নিয়েই ফেলল সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশন।
মিশনের আশ্রমের পরিবেশে তাঁতের খটাখট শব্দে আর মহারাজদের সুদক্ষ পরিচালনায় সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশনে দাঁড়ালেই আপনি অনুভব করবেন শান্তিপুরের তাঁতশিল্পের ঐতিহ্য। মিশনের তরফ থেকে যেমন বসানো হয়েছে উন্নতমানের তাঁত শিল্পের মেশিন। তেমনই সুতো সরবরাহ থেকে কাপড় বিক্রি করার ব্যবস্থা পর্যন্ত করে দিচ্ছে মিশন। পরিবর্তে দৈনিক মজুরি পেয়ে যথেষ্ট আত্মনির্ভর হয়ে উঠছেন তাঁরা।
একদিনে তিন থেকে চারটে শাড়ি তৈরি করছেন তাঁরা। সংসার সামলে তাঁতের শাড়ি তৈরি করে একদিকে যেমন নিজেও স্বনির্ভর হয়েছেন তেমনই পরিবারকেও আর্থিকভাবে যথেষ্ট সাহায্য করছেন তাঁরা।
কেউ এখানে কাজ করছেন ৪ বছর তো কেউ আবার করছেন দীর্ঘ ২২ বছর ধরে। শাড়ি তৈরির ওপর নির্ভর করছে তাঁদের মজুরী। কেউ পাচ্ছেন ২৫০ টাকা, কেউ পাচ্ছেন ৪০০ টাকা আবার কেউ পাচ্ছেন ১২০০ টাকা।
কিন্তু কেন এই উদ্যোগ? কিভাবেই বা শুরু হল এই তাঁত শিল্পকে বাঁচানোর উদ্যোগ? বললেন সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি স্বামী বিশ্বমায়ানন্দজী।
সুতি, পাট প্রয়োজনে সিনথেটিকেরও সামান্য ব্যবহারও হয়ে থাকে। শাড়ি, ধুতি এমনকি তাঁতের অবশিষ্টাংশ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে আসন। বিভিন্ন মেলাতে পৌঁছে যাওয়ার পর এই সকল পন্যগুলোই যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশনের এই বিরাট কর্মকাণ্ড দেখতে আসছেন অনেক উৎসাহীরা।
বর্তমানে এই রামকৃষ্ণ মিশনে তুলিকা মণ্ডল বা আশা মণ্ডলের মত ৪০ জন মহিলা কাজ করে চলেছেন একভাবে। একদিকে যখন তাঁতের শিল্প ক্রমশই হারিয়ে যেতে বসেছে কালের গর্ভে, ঠিক তখন সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে।
দেবস্মিতা মণ্ডল
মুর্শিদাবাদ