Trending
ম্যাকিয়াভিলি বলেছিলেন, পলিটিক্স ইজ আ কনস্ট্যান্ট স্ট্রাগল ফর পাওয়ার। মোদী স্ট্রাগল করেছেন আপ্রাণ। তবে পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারেন নি। স্ট্রাগল করে গদি বাঁচিয়েছেন। আবার অন্যদিকে কংগ্রেসের ইন্ডিয়া জোট তারাও স্ট্রাগল করেছে। দিনের শেষে চিন্তার ঘাম জমাতে পেরেছে এনডিএ জোটের কপালে। এসব দেখেই মনে হচ্ছে এনডিএ-র পতন অবশ্যসম্ভাবী। আপনারা কি মনে করেন? রাজনীতির বর্তমান হালহকিকত সেদিকেই কি ইঙ্গিত করেছে? চলুন, এই বিষয়ে একটু আলোচনা করে দেখা যাক।
রাহুল গান্ধীর ধামাকেদার ব্যাটিং আমরা সকলেই দেখেছি। মোদীর কপাল ছুঁয়ে বলটা বেরিয়ে যাচ্ছিল, তবে দিন শেষে ক্যাচটা ধরতে পেরেছেন তিনি। যাই হোক, দেশবাসী যা দেখছে তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার হচ্ছে, মোদীর এবারে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাটা ইন্ডিয়া জোটের টাইমিং-এর প্রবলেমের জন্য। তারপর অন্য আঞ্চলিক দলের সঙ্গে তো তাদের রেষারেষি ছিলই। ফলে এনডিএ জোটকে হারানোর তীরটা একটু ভুল সময়ে ছোঁড়া হয়। কিন্তু দিন শেষে দেখা যাচ্ছে মোদী এবার নরম-সরম। মোদী চাইছেন সবাইকে নিয়ে এবার এগোতে। এনডিএ জোট এবং ইন্ডিয়া জোট সকলে যেন একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার কথা ভাবেন। আর এখানেই যেন দিন দিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে পুরো বিষয়টা। আদৌ কী রাহুল আর মোদীর সুর একই সুরে বাঁধা হবে? সেই আশায় সেগুড়ে বালি। আর মোদীর ভাগ্য এবারে খুব খারাপ। নির্বাচনী ফলাফল থেকেই ফাঁড়ার লম্বা লাইন। প্রথমে ফলাফলে ভরাডুবি। তারপর রেল দুর্ঘটনা। তারপর অটল সেতুতে চিড়। আর এখন রাম মন্দিরের ছাদ চুইয়ে জল। মোদী জিতে গদিতে বসলেও অশনি সঙ্কেত যেন ফেউ এর মত তাড়া করে বেরাচ্ছে তাঁকে। এবার বিষয়টা হচ্ছে, সত্যিই কি মোদী সরকার পতনের দিকে এগোতে শুরু করেছে?
নরেন্দ্র মোদীর গদি যে দোদুল্যমান সেটা সত্যি। কারণ শরিক নির্ভর সরকার গঠন করেছে নরেন্দ্র মোদী। আর এই যে শরিক তারা কারা? একদিকে চন্দ্রবাবু নাইডু আর অন্যদিকে নীতিশ কুমার। বিষয়টা হচ্ছে, মোদী যদি অন্য কোন শরিকের সঙ্গে এই সরকার গঠন করতেন তাও না হয় কংগ্রেসের আশা ভরসা একটু ধাক্কা খেত। কিন্তু নীতিশের নিজস্ব কোন নীতি নেই। তিনি আজ এখানে-কাল ওখানে গেছো দাদার মত লাফিয়ে লাফিয়ে বেরান। ট্র্যাক রেকর্ড সেরকম। ইনফ্যাক্ট মোদীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পর নীতিশ বলেওছিলেন এবার আর অন্য কোথাও নয়। থাকবেন তো মোদীকে সাথ আর তাতেই বিহারের বিকাশ। এসব দেখে কংগ্রেসের তো মুষড়ে পড়ার কথা। সেটা আর হচ্ছে কই? কংগ্রেস মুষড়ে তো পড়েই নি বরং আরও খুশি হয়েছে। কারণ নীতিশ এবং নাইডু দুজনের উপর ভর করেই তো এই সরকার। ফলে কতদিন টিকবে সেটাই এখন প্রশ্নচিহ্ন। আর কংগ্রেস নিজেও বলেছে, তারা এখনই অনাস্থা পর্ব এনে বিষয়টা আজাইরা প্যাঁচাল করতে চায় না। তাই ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ পলিসি নিয়ে ধীরে ধীরে কোণঠাসা করতে শুরু করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। মানে এনডিএ সরকারকে। বিহারে শুরু হবে বিধানসভা নির্বাচন। অনেকেই বলছেন যে, নীতিশের মোদী সমর্থন ঐ সময়টুকু পর্যন্ত। যেই না মিটবে, সঙ্গে সঙ্গে নীতিশের ডিগবাজি খেল শুরু হতে পারে। চন্দ্রবাবু নাইডু এখন থিতু। অন্ধ্রে ভোটপর্ব মিটে গেছে। ফলে এখনই তার লম্ফঝম্ফ বিশেষ যে দেখা যাবে তেমন নয়। তবে এদিকে নীতিশ যদি হাত ছেড়ে দেন তখন নাইডু কতদিন আর মোদীর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করবেন সেটা একটা প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। আর এই বিষয়টা নিয়ে অনেকেই আগাম ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার মধ্যে যেমন রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রথম থেকেই বলেছিলেন এবারের এনডিএ সরকার পঙ্গু সরকার। যেকোন দিন এনডিএ-র বেলুনে সেফটি পিন ফুটিয়ে দিতে পারেন নীতিশ, নাইডু। আর সেটা হলেই ইন্ডিয়া জোটের জন্য কেল্লাফতে। আর গত দুবারের টার্মে মোদীর এসব কোন আশঙ্কা না থাকলেও, এবার কিন্তু সেটা পুরোমাত্রায় রয়েছে। তাই নরমে-গরমে একজোটে এগোতে চাইছেন মোদী। তবে কংগ্রেস তলে তলে কিভাবে তার মোকাবিলা করবে সেটাই দেখার। ইন্ডিয়া কি নীতিশ, নাইডুকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিজের ঘরে টেনে আনতে পারবে? আপনাদের মতামত শেয়ার করে জানান আমাদের। সঙ্গে লাইক করুন, কমেন্ট করুন। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ