Trending
ফুটবল। দ্য গ্রেটেস্ট গেম অন প্ল্যানেট আর্থ। ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে মানুষের উন্মাদনার অন্ত নেই। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পায় কাতার। ফিফার নিয়ম মেনে ২০১৮ সাল নাগাদ বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতিতে আদা জল খেয়ে নেমে পড়ে কাতার। শুরু হয় দেশজুড়ে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ। গোটা কাতার জুড়ে গড়ে ওঠে সাত সাতটি স্টেডিয়াম। সুন্দর, ঝাঁ চকচকে, শীততাপনিয়ন্ত্রিত। বিপুল টাকা ব্যয়ে ফিফার নিয়ম মেনেই স্টেডিয়াম তৈরি করে কাতার। কিন্তু বিশ্বকাপ শেষে স্টেডিয়ামগুলোর কি হবে? ধ্বংস করে দেওয়া হবে? নাকি পুনরায় সেগুলোকে ব্যবহার করা হবে?
স্টেডিয়াম ৯৭৪। বিশ্বকাপের ইতিহাসে তৈরি প্রথম অস্থায়ী স্টেডিয়াম। মডিউলার স্টিল আর ৯৭৪ টি শিপিং কন্টেইনার দিয়ে তৈরি বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে স্টেডিয়াম ৯৭৪। কাতারের এই একমাত্র স্টেডিয়াম যেটি শীততাপনিয়ন্ত্রিত নয়। যে কারণে এটিতে আয়োজিত প্রতিটি ম্যাচই সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয়। আরব সাগরের পারে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামটির আসনসংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি। স্টেডিয়ামের এই নিপুণ নকশার ভূয়সী প্রশংসা করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বকাপ শেষে ভ্যানিশ হয়ে যাবে এই স্টেডিয়ামটি! হয়ত আগামী ১৮ ডিসেম্বরই বিশ্বকাপ শেষের সাথেই লাস্ট হুইসেল বাজবে স্টেডিয়াম ৯৭৪-এর।
স্টেডিয়াম ভেঙে ফেলার ফলে যাতে কোনরকম দূষণ না হয়, সেদিকটাও নজরে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রয়োজনে কন্টেইনারগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই চরম পরিণতি হতে চলেছে স্টেডিয়াম ৯৭৪-এর? সে বিষয়ে কোন বক্তব্য এখনও অবধি স্পষ্ট না হলেও, শোনা যাচ্ছে যে হয়তো উরুগুয়েতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে এই স্টেডিয়ামটি। আর প্যান-সাউথ আমেরিকার হস্টিং প্ল্যান বাস্তবায়িত হলে, ২০৩০-এর বিশ্বকাপে ফের দেখা যাবে এই ভ্যানিশড স্টেডিয়ামকে। আয়রনিকালি, ফুটবল ইতিহাসে স্টেডিয়ামটি ভ্যানিশড হয়ে গেলেও ভবিষ্যতে সকলের মধ্যে অদৃশ্য স্টেডিয়াম হিসেবে একটা অস্তিত্ব থেকেই যাবে।
স্টিল আর কন্টেইনারে ঘেরা স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম। কিন্তু যে অগনিত দর্শক এই ম্যাচগুলো দেখতে এসেছিলেন তারা প্রত্যেকেই স্বীকার করেছেন যে এ এক অন্য অভিজ্ঞতা। মেটাল ফিল্ডের উপর দিয়ে প্লেয়ারদের দৌড়ে যাওয়ার শব্দ কেমন হয়। যদিও ম্যাচ চলাকালীন দর্শকদের উন্মাদনায় সে আওয়াজ ফিকে হয়ে গিয়েছিল। লিফট থেকে টয়লেট সর্বত্রই ছিল সেই ধাতব চমক। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, স্টেডিয়ামের যেকোনো প্রান্ত থেকে মাঠের দুরত্ব সমান মনে হত। আর ফুটবল ইতিহাসে যেটি, “ স্টেডিয়াম ড্যাট ডিসঅ্যাপিয়ার্ড” হিসেবে সকলের মধ্যে বেঁচে থাকবে।
বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে স্টেডিয়াম থেকে মেট্রোরেল, রাস্তাঘাট সমস্ত প্রিপেরেশন পিছু কাতার খরচ করেছে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার। কিনতি বিশ্বকাপ শেষে এই এতগুলো স্টেডিয়াম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকবে? না তেমনটা একেবারেই না। স্টেডিয়াম ৯৭৪ ছাড়া বাকীগুলোতে হয়তো ফের ২০২৪ আর ২০৩০-এর এশিয়ান গেমসে ফের সেই উন্মাদনা নজরে আসতে পারে। তবে, এখনই সবটা ক্লিয়ার নয়। কিন্তু স্টেডিয়ামগুলো যে পুনরায় ব্যাবহার করা হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ