Story
বি পি এন ডেস্ক: বিমাক্ষেত্রে আবারও বাড়তে চলেছে প্রিমিয়ামের অঙ্ক। ২০২০ অর্থবর্ষে এর আগেও গ্রাহকদের গুনতে হয়েছিল প্রিমিয়ামের বাড়তি অঙ্ক। তারপর এই নতুন অর্থবর্ষে আরও এক দফায় প্রিমিয়াম বৃদ্ধির ইঙ্গিত এই ক্ষেত্রে ছবিটাকে আরও একটু বেআব্রু করে দিয়েছে। এই বৃদ্ধির পরিমাণ কমবেশি ২০%।
প্রিমিয়াম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোম্পানিগুলির বক্তব্য, কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে রিস্ক ফ্যাক্টর অনুযায়ী ক্লেমের পরিমাণও হয়েছে দ্বিগুণ। তাই প্রিমিয়াম বৃদ্ধি ছাড়া অন্য কোন পথ নেই।
কোম্পানিগুলো যখন প্রিমিয়াম বৃদ্ধির পথে হাঁটার ভাবনা চিন্তা করছে তখন দেখে নেওয়া যাক গোটা ভারতে বিমার ছবিটা। ভারতে ৯৮৮ মিলিয়ন লোকের অর্থাৎ প্রায় ৭৫% মানুষ এখনও পর্যন্ত কোন ধরণের বিমার আওতাভুক্ত নন। যা কিনা জনসংখ্যার নিরিখে ইউরোপের মোট জনসংখ্যার থেকেও বেশি। ভারতে কেবলমাত্র ৮% লোকই বিমার আওতাভুক্ত। ভারতের প্রকৃত ছবি অনুযায়ী জনসংখ্যার বিশেষত শ্রমশক্তির ৮২% নিয়োজিত রয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রে। গুনতির হিসেবে ৩৯২.৩১ মিলিয়ন মানুষ যা কিনা আমেরিকার লোকসংখ্যার থেকেও বেশি, রয়ে গিয়েছেন বিমা সুরক্ষা কবচের আওতার বাইরে।
২০১৬-১৭ সালে হ্যান্ডবুক অন ইন্ডিয়ান ইনশিওরেন্স স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্য অনুযায়ী ঐ বছর ভারতে ৩২৮ মিলিয়ন লোকের জীবন বিমা পলিসি ছিল। যা কিনা আইআরডিএ-র তথ্য অনুযায়ী শতাংশের হিসেবে মাত্র ২৫%। অর্থাৎ ৭৫% মানুষ গুনতির হিসেবে ৯৮৮ মিলিয়ন ভারতীয় রয়ে গিয়েছেন সুরক্ষা কবচের আওতার বাইরে। তাই বার্ষিক প্রিমিয়াম গ্রোথে রাশিয়া রয়েছে ৪৮.২%, চিন রয়েছে ২১.১%-এ। সেখানে ভারতের অবস্থান মাত্র ৮%-এ। আবার ডলারের হিসেবে পলিসির ঘনত্ব অনুযায়ী সাউথ আফ্রিকার ঠিক পরেই রয়েছে ভারতের অবস্থান।
আবার জিডিপিতে এই বিমা ক্ষেত্রে ভারতের যোগদান বেশ কম। মাত্র ২.৭২%। সেখানে সাউথ আফ্রিকার যোগদান ১১.৫২%।
তবে ভারতে বিমাক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত বাজার উর্বর হলেও সেখানে বৃহত্তর অংশের মানুষ এই সুরক্ষাবৃত্তের বাইরে থাকায় এই ক্ষেত্রটিতে ধারাবাহিক বৃদ্ধি খুব একটা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যদিও সাম্প্রতিক কয়েকটি অর্থবর্ষে ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বিমায় বৃদ্ধি এইক্ষেত্রটির উজ্জ্বল ভবিষ্যতকেই চিহ্নিত করছে। ২০১৭-র আইআরডিএ-র রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে প্রায় ৬৫% মানুষ এই ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বিমার আওতায় রয়েছেন। যার মধ্যে আইআরসিটিসি, প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনাও রয়েছে।
এর মধ্যে যদি প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা ও আইআরসিটিসি প্রকল্পকে বাদ দেওয়া হয় তবে ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা বিমায় আওতায় থাকছেন দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ২৫%।
এই যেখানে দেশের বিমা ক্ষেত্রের পরিসংখ্যান সেখানে অতিমারি এবং অতিমারি পরবর্তী পর্যায়ে কোম্পানিগুলি সম্মিলিতভাবে আরও এক ধাপ প্রিমিয়াম বাড়ালে ছবিটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটাই ভাবিয়ে তুলছে দেশের আর্থিক মহলকে।