Trending
একদিকে চলছে অম্বানি পরিবারে মহাউৎসব। ছেলের বিয়ে বলে খরচে কার্পণ্য করছেন না মুকেশ অম্বানি। বিয়ের আসরে যেন চাঁদের হাট। দেশ, বিদেশের তাবড় ব্যবসায়ী, বিশ্ববিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী, এই দেশ ঐ দেশের শীর্ষ মন্ত্রী, বলিউডের একাধিক তারকা সঙ্গে দেশের শাসক, বিরোধী নেতা- কে নেই সেই আমন্ত্রিতের লিস্টে! শুধু বিয়ের কথা ধরলে দেশের অন্যতম ব্যয়বহুল বিয়ের অনুষ্ঠান হতে চলেছে অনন্ত অম্বানির বিয়ের, যার খরচ হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। অনেকেই মজা করে বলছেন, মুকেশ অম্বানি যেরকম এলাহি খরচ করছে বিয়ের অনুষ্ঠানে সেই টাকা তো তুলতে হবে। তাই হয়ত জিও-র খরচ বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের থেকে এভাবেই টাকা তুলে নেবেন অম্বানি। যাই হোক, এসব রঙ্গ রসিকতার কথাগুলো একদিকে সরিয়ে রেখে বরং কংগ্রেসের তরফ থেকে একটা প্রস্তাবের কথা বলা যাক। যা সত্যি করতে পারলে দেশের বেশ কিছু সমস্যা মিটে যেতে পারে। কংগ্রেসের তরফ থেকে এই বক্তব্য এসেছে যখন অনন্ত অম্বানির বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে একেবারে মধ্য গগনে। কী সেই প্রস্তাব এবার সেটা বলব।
জি-২০ গোষ্ঠীর যে দেশগুলো রয়েছে তার অন্যতম মাথা ভারত। তবে এবারে জি-২০-র প্রেসিডেন্ট হচ্ছে ব্রাজিল। সেই ব্রাজিলের পক্ষ থেকেই একটা প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত করতে পারলে প্রত্যেকটা দেশ নিজের আভ্যন্তরীণ বহু সমস্যা মেটাতে পারবে। এমনকি গোটা বিশ্ব এই বিষয়ে একমত হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সেখানেই মোদীর অবস্থান কি হবে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তবে প্রশ্নটা বলার আগে বরং ব্রাজিলের প্রস্তাবটা কী, সেটা বলে নেওয়া যাক। ব্রাজিল প্রস্তাব দিয়েছে, ধনকুবেরদের ২ শতাংশ সম্পদ কর দেওয়া উচিৎ। ব্রাজিল বলছে, যাদের সম্পত্তির মূল্য ১০০ কোটি ডলারের বেশি, তাঁদের থেকে বছরে ২ শতাংশ সম্পদ কর আদায় করতে পারলেই ২৫ হাজার কোটি ডলার আয় হতে পারে। অতি ধনীদের থেকে এই কোয় আদায় নিয়ে ব্রাজিলের পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন দিয়েছে ফ্রান্স, স্পেন, সাউথ আফ্রিকা, জার্মানি। চলতি মাসের শেষের দিকেই রয়েছে জি-২০ বৈঠক। সেই বৈঠকে কি আদৌ এই বিষয় নিয়ে মোদী সরকার সায় দেবেন? কী অবস্থা নেবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। তিনি বলেছেন, ব্রাজিলের এই যুক্তি নিঃসন্দেহে দারুণ। এই মুহূর্তে ভারতে ১৬৭ জন রয়েছেন যাদের সম্পত্তির মূল্য ১০০ কোটি ডলারের বেশি। তাঁদের থেকে যদি ২ শতাংশ করে সম্পদ কর নেওয়া হয়, তাহলে বছরে আয় হতে পারে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা। সেই টাকা স্কুল এবং হাসপাতালে খরচ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন জয়রাম রমেশ।
ব্রাজিলের এই যুক্তিকে সমর্থন জানিয়েছে আফ্রিকা ইউনিয়নগুলো। ফলে মোদী সরকার এখন কী অবস্থান নিতে পারে সেই নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের তরফ থেকে। কংগ্রেসের তরফ থেকে ব্রাজিলের এই অবস্থানকে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। আর মোদী জমানায় বিত্তবানদের নিয়ে হাজারো কটুক্তি ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে বিরোধীদের তরফ থেকে। মোদী সরকার এমনিই অস্বস্তিতে কারণ ধনী-দরিদ্রের অসাম্য মোদী জমানায় নাকি চড়া। অসাম্য টেক্কা দিয়েছে নাকি ব্রিটিশ যুগকেও। দেশের ১ শতাংশ মানুষের হাতে প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি সম্পত্তি। এহেন পরিস্থিতিতে মোদী সরকার স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে। এখন কংগ্রেসের তরফ থেকে যে প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে তারপর মোদী সরকার অস্বস্তিতে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে অতি বিত্তবানদের নিয়ে মোদী সরকারের অবস্থান কী হতে পারে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। রাহুল নিজেও এখন খুব বেশি বিত্তবানদের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখছেন না। এখনো মোদী সরকারকে বিত্তবানদের নিয়ে বিঁধেই চলেছেন। ফলে সম্পদ কর আদায়ের মত বিষয় নিয়ে মোদী সরকার কি মুখ খুলবে নাকি কুলুপ এঁটে বসেই থাকবে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে কংগ্রেস শিবির। আপনারা কি মনে করেন? সেটা বরং কমেন্ট করে লিখে জানিয়ে দিন।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ