Trending
ভারতের অর্থনীতিতে নয়া সংযোজন
খুলছে ভারতের দীর্ঘতম সি-লিঙ্ক অটল সেতু
সেতু তৈরিতে খরচ ১৮ হাজার কোটি
আরব সাগরের বুক চিঁরে ছুটবে গাড়ি। ২০ মিনিটেই পেরিয়ে ফেলা যাবে দু-ঘন্টার রাস্তা। একইসঙ্গে আপনি দেখতে পাবেন এলিফ্যান্টা কেভ এবং মুম্বাইয়ের আনরিভিল্ড স্কাইলাইন ভিউ। সমুদ্রের ওপর তৈরি মুম্বাইয়ের সেই চোখ ধাঁধানো সেতু একেবারে প্রস্তুত। যা আজ থেকেই খুলে যাচ্ছে সর্বসাধারণের জন্য।
এটাই ভারতের দীর্ঘতম সমুদ্র সেতু। এই অটল সেতু মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং নভি মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে দ্রুত সংযোগ তৈরি করবে। কমবে দুরত্ব, বাঁচবে সময়। মুম্বাইয়ের হেভি ট্রাফিক পেরিয়ে গাড়ি চালানর ঝক্কিও কমবে। শুধু তাই নয়, মুম্বই থেকে পুনে, গোয়া এবং দক্ষিণ ভারতে যাতায়াতের সময়ও কমিয়ে দেবে এই অটল সেতু। যা দৈর্ঘ্যে, প্রায় ২২ কিলোমিটার।
৬ লেনের এই সেতুকে কন্ট্রোল করবে আরটিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। যাতায়াত সজজ করার পাশাপাশি ভারতের অর্থনীতিতেও ভালোরকম প্রভাব থাকছে এই অটল সেতুর। কেন জানেন? কারণ মুম্বাই সরকার জানিয়েছেন যে, মুম্বই ট্রান্স হারবার লিঙ্ক দিয়ে প্রতিদিন ৭০ হাজারেরও বেশি যানবাহন যাবে। যাওয়া এবং ফেরা মিলিয়ে ট্যাক্স দিতে হবে মোট ৫০০ টাকা। আর ৭০ হাজার গাড়ি যাতায়াতের ফলে টোলের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা আদায় হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখানেই রয়েছে ভারতের প্রথম ওপেন টোল প্লাজা। যেখানে ট্যাক্স দিতে গেলে আপনাকে গাড়ি থামাতেও হবে না। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে সহজেই সময় বাঁচিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে।
এটি একটি অর্থোট্রপিক স্টিল ব্রিজ। যা অত্যাধুনিক জাপানিজ টেকনোলজি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। যা কিনা ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম। শুনলে অবাক হবেন যে, এই সেতু তৈরিতে এমন সমস্ত উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে যা দিয়ে ১৭ টা আইফেল টাওয়ার এবং ৪ টে হাওড়া ব্রিজ তৈরি করা যায়। সেতু যাতে ঝড়ের গতিবেগ যাতে সহ্য করতে পারে, তারজন্য বিশেষ ডিজাইন করা হয়েছে।সেফটি সিকিউরিটির পাশাপাশি পরিবেশের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। সেতুর অংশ ফ্ল্যামিঙ্গো সুরক্ষিত এলাকা এবং বারকের মধ্য দিয়ে যাওয়ায় সেউড়ি থেকে একটি ৮.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নয়েজ ক্যান্সেলেশন ব্যারিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এি সেতু মুম্বাই তথা গোটা ভারতবর্ষের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
দেখুন, পরিবহণের পাশাপাশি ভারতের অর্থনৈতিক মানচিত্রেও এটা একটা অনেক বড়ো অ্যাচিভমেন্ট। একবার ভাবুন, একটা সমুদ্র বন্দর থেকে আরেকটা সমুদ্র বন্দরে যাতায়াতের সময় যদি কমে। কিংবা একটা এয়ারপোর্ট থেকে আরেকটা এয়ারপোর্টে যাওয়ার সময় যদি কমে, তাহলে ঐ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ঠিক কতটা পরিমাণে বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, এখানকার ব্যবসা এনবং ইন্ডাস্ট্রি সম্প্রসারণের জন্য এই সেতু একটা ট্রাম্প কার্ড হতে চলেভছে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও এই অটল সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম।
মুম্বাইয়ের রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞদের মতামত, আগামীদিনে মুম্বাইয়ের জেসমস্ত অঞ্চল এখনও ডেভলপড হয় নি, সেই সমস্ত অঞ্চলেও আবাসন, হোটেল কিংবা ইন্ডাস্ত্রিয়াল বিল্ডিং তৈরি হবে। ভারতের দুটো ইম্পরট্যান্ট শহর মানে মুম্বাই এবং পুনের মধ্যে কানেক্টিভিটি সহজ হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্টও বাড়বে। যার ফলে, ভারতের ৫ ট্রিলিয়ন ইকোনমি হওয়ার জার্নিটা আরও অনেক বেশি স্মুদ হবে। সবমিলিয়ে মুম্বাই তথা ভারতের ডেভেলপমেন্ট অ্যাচিভমেন্টে অটল সেতু একটা ব্লেসিং বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।