সাধারণত একটি প্লেন ওড়াতে ঘণ্টায় ২,৫০৮ লিটার জ্বালানি খরচ হয়। তাহলে ভাবুন তো। প্রতিদিন এভাবে কতটা জ্বালানি খরচ হচ্ছে? প্রকৃতির কাছে কোন কিছুই অফুরন্ত নয়। এত বিপুল পরিমাণ ব্যবহার করলে সেই ভাণ্ডারও একদিন শেষ হয়ে যাবে। তখন? তাই আগে থাকতেই আসরে নামলেন বিজ্ঞানীরা। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির মরশুমে ঘাটতি মেটাতে গবেষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম বিফলে গেলো না। দীর্ঘদিনের চেষ্টায় সামনে এলো বহুপ্রতিক্ষিত সেই প্ল্যান্ট, যে কিনা সূর্যের আলো আর বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের মাধ্যমে কার্বন নিরপেক্ষ জ্বালানি বানাতে পারে। আসুন বন্ধুরা আজ আমরা কথা বলব এমনই একটা বিষয় নিয়ে। ভালো লাগলে শেয়ার করবেন, সাবস্ক্রাইব করবেন।

একদিকে বাড়ছে জ্বালানির দাম। অন্যদিকে বাড়ছে দূষণ। কিন্তু শিল্পের চাকা তো বন্ধ করলে হবে না। তাই বাঁচিয়ে রাখতে হবে দেশের শিল্পক্ষেত্রগুলো। আবার একইসঙ্গে মাথায় রাখতে হবে পরিবেশ দূষণের দিকটাও। কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে তো এর ওয়ে আউট বার করা মুশকিল। এমন এক জ্বালানি আবিষ্কারের খোঁজ তারা করতে শুরু করলেন যা একদিক থেকে হবে পরিবেশ বান্ধব। অন্যদিক থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে দূষণ। আবার প্লেনও উড়বে নিজের খেয়ালে। তবে এই সাফল্য তখনই সার্থকতা পাবে, যখন তা শিল্পক্ষেত্রে স্বীকৃতি পাবে। আর সবথেকে বড়ো কথা হল, শিল্পক্ষেত্রে বহুল ব্যবহারের জন্য যদি এই সৌর জ্বালানি ব্যবহার করা হয় তাহলে তার খরচ পড়বে লিটার প্রতি ১.২০ থেকে ২ ইউরো মত।

এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে সূর্যের আলো থেকে বাতাসের জলীয় বাষ্পকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে এই সৌর জ্বালানি তৈরি হয় সেই থার্মোকেমিক্যাল প্রক্রিয়ার নিখুঁত বিশ্লেষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। বায়ুমণ্ডল থেকে সরাসরি কার্বন ডাই অক্সাইড আর জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে সূর্যের আলোর মাধ্যমে বিভাজিত হয়ে তা সিন গ্যাসে পরিণত হয়। সিন গ্যাস হল কার্বন মনো অক্সাইড আর হাইড্রোজেনের মিশ্রণ। যা পরবর্তীতে কেরোসিন, মিথানল বা অন্যান্য হাইড্রোকার্বনে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। আর সবথেকে বড় কথা হল, প্ল্যান্টের মাধ্যমে এই সিনথেটিক লিকুইড তৈরি করতে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হয়, ঠিক সেই পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইডই বাতাস থেকে প্ল্যান্টটি গ্রহণ করে। অর্থাৎ অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হওয়ার কোনো জায়গাই নেই।

সিস্টেমটি শিল্পক্ষেত্রে কাজের জন্য এখন এক্কেবারে প্রস্তুত। এবং ভবিষ্যতে গবেষণা ক্ষেত্রেও একটু নতুন দরজা খুলে দেবে বলেই গবেষকদের অভিমত। তবে এই সৌর জ্বালানিকে বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমর্থনের বিশেষ প্রয়োজন। কারণ এক্ষেত্রে বিনিয়োগ দরকার বিপুল পরিমাণে। বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে মাত্র ০.১% শেয়ারের সুপারিশ করেছেন। আর এর প্রভাব পড়তে পারে উড়ান খরচে। তবে সেটাও বেশ সাময়িক। ভালভাবে দেখতে গেলে আখেরে লাভদায়ক হবে সৌর জ্বালানির ব্যবহার। উৎপাদন ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করবে। পরবর্তীতে যা দেশের প্রযুক্তিকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাবে।

ব্যুরো রিপোর্ট