Daily

একদিকে যখন অতিমারি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে সর্বত্র বাজছে ঢাক, ঠিক তখনই চরম অমানবিকতার ছবি ধরা পড়ল একেবারে কলকাতার বুকে। বর্ষার কলকাতায় অবিরাম বৃষ্টি হয়ে চলেছে টানা তিনদিন ধরে। এর মধ্যেই বেডে শোয়ান রোগীকে বৃষ্টির মধ্যে নিয়ে যাওয়া হল পাশের স্টুডেন্ট হেলথ হোমে। রোগীর মুখে অক্সিজেন মাস্ক, রোগীর শরীর চাদর দিয়ে ঢাকা। তবে মুখ খোলা রয়েছে। ওপরে আড়াল করার মত কিছু নেই। বাইরে তখন অঝোর বৃষ্টি। কিন্তু সব কিছুকে উপেক্ষা করে রোগীকে শয্যা ঠেলে নিয়ে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। রোগীর জন্য জুটল না একটি অ্যাম্বুলেন্সও। শনিবারের বারবেলায় রোগীর প্রতি এমন চরম অবহেলার সাক্ষী থাকল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ হাসপাতাল চত্বর থেকে একজন রোগীকে নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেরোতে দেখা যায়। তারা হাসপাতালের এক নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে ট্রাম লাইন ধরে রাস্তার ওপর দিয়েই গড়িয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়। স্বাস্থ্য কর্মীদের একজনের মাথায় ছাতা থাকলেও রোগীকে ভিজতে হল বৃষ্টিতেই। জানা গিয়েছে, বেলঘড়িয়ার এক বাসিন্দা কিডনির অসুখে ভর্তি হয়েছিলেন এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে। শনিবার তার বুকে ব্যথা করায় তাঁকে চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় স্টুডেন্ট হেলথ হোমে। আর তখনই স্বাস্থ্যকর্মীদের এই কীর্তি ধরা পড়ে।
স্বাভাবিকভাবেই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বেজায় অস্বস্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডঃ ইন্দিরা দে অনুসন্ধানের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছেই। এমনিতেই রোগী কিডনির অসুখে ভুগছেন। যে কারণে তাঁর ইমিউনিটি বেশ কম। এর মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল। ফলে সর্দি-জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হতে পারেন। রোগীর অবস্থা খারাপ হলে কেই বা সেই দায় নেবে? তাছাড়া করোনার সময়ে এভাবে নিয়ে যাওয়ার কারণে রোগীও করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। চরম অমানবিকতার নিদর্শন বলে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস।
মানস চৌধুরী কলকাতা