Trending
শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, শিল্প আনতে ব্যর্থ?
গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে, উন্নয়ন কি টোকা মারে?
আচ্ছা, এই কথাগুলো কি খুব পলিটিক্যাল হয়ে গেল? দশতলা আর একচালা- পরিষেবা যাতে সর্বত্র পৌঁছয় সেদিকেই তো লক্ষ্য রাখা সুস্থ রাজনীতির ক্যারিশ্মা। আগামীকাল পঞ্চায়েত নির্বাচন। গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ ভোট দিতে যাবেন। আর দিনের শেষে নির্বাচন, সুষ্ঠু হওয়া প্রয়োজন। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা নজর দিয়েছি কেন, সেটা আই বটনে ক্লিক করে পুরো প্রতিবেদনে দেখে নিতে পারবেন। তবু এখানে বলে দিই ছোট্ট করে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের নজর ঘোরানোর অন্যতম কারণ কোন দলের সঙ্গে দলাদলি নয়। ৫ বছর অন্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। সুতরাং যে দল জেতেন, সেই দল প্রতিশ্রুতি দেন বহু কিছু। যার পুরোটা ঘিরেই থাকে রুরাল ডেভেলপমেন্ট, রুরাল ইকোনমি। কাঁচা রাস্তা পাকা হল? নিকাশি নালা কি দোকানের সামনে এখনো তৈরি হবে নাকি বর্ষা এলেই ফের জল থইথই অবস্থা? ক্রেতা না এলে মার খাবে বিক্রেতার ব্যবসা? আচ্ছা ঐ গরীব মানুষটা কি আবাস যোজনার টাকা পান? লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কি চিরস্থায়ি সমাধান হতে পারে? বার্ধক্য ভাতা প্রত্যেকে পাচ্ছেন? গ্যাসের দাম যেভাবে বাড়ছে তারপরেও কি কেন্দ্রের নজর গ্রামের মানুষগুলোর ওপর পড়বে না? গরীব মানুষ কোথায় যাবেন? মানে মোদ্দা কথা- গ্রামাঞ্চলের মানুষ মানেই দিশেহারা আর নিঃস্ব থাকার যে প্রবণতা বা ট্র্যাডিশন সেটা থেকে তো বেরিয়ে আসতে হবে। রুরাল ডেভেলপমেন্ট না হলে দেশের সার্বিক ডেভেলপমেন্ট হবে কী? মনে হয় না। সুতরাং গ্রামের সার্বিক উন্নয়ন মাস্ট। আমাদের নজর ঠিক এখানেই। উন্নয়ন…উন্নয়ন আর উন্নয়ন…আদৌ কি হয়েছে? নাকি হচ্ছে? প্রতিশ্রুতিই সার? নাকি অসাড়? আসুন, আজকের এই প্রতিবেদনে বিজনেস প্রাইম নিউজের চোখ দিয়ে আপনাদের দেখাই গ্রামের মানুষগুলোর উন্নয়নকে ঠিক কী নজরে দেখছেন। চলুন প্রথমেই ঘুরে আসা যাক নদীয়া থেকে। দেখুন কী বলছেন নদীয়ার গ্রামের মানুষ।
আমরা বলছি না। নদীয়ার মানুষ বলছেন। ভাবুন তো আমার আপনার মা, বাবাকে যদি একবেলা অনাহারে কাটাতে হয়, যদি ১০০ দিনের কাজের টাকাটা আমার-আপনার ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ঠিক করে না-আসে, যদি বৃষ্টির জল ভেঙে পড়া বাড়ির ছাদ দিয়ে ঢুকে পড়ে, আবাস যোজনার টাকা না-পেলে যদি সেই ভাঙা ছাদটা আমি আপনি তৈরি না করতে পারি, তাহলে রুরাল ডেভেলপমেন্ট হয়েছে- এই শব্দবন্ধগুলো কি খুব সারকাসটিক ঠেকে না? অন্ন, বস্ত্র আর বাসস্থান- এগুলোর মিনিমাম একটা শিওরিটি দিতে হবে সেটা যে দলই সরকারে থাকুন না কেন। আর বেশি বলব না। এবার বরং চলে আসি আমরা পশ্চিম বর্ধমানে।
এটাই তো হয়। এক জেলার গ্রামের মানুষ খুশি হন না। তখন অন্য জেলার গ্রামের মানুষ আবার পরিষেবা নিয়ে বেশ খুশি থাকেন। তার মানে কি পরিষেবা জেলা, গ্রাম, কোন জেলা পরিষদে কার কতটা পাওয়ার সেটা দেখে হয় নাকি? তাহলে পলিটিকাল কোথায় হল, বরং বিষয়টা তো পারশিয়াল হয়ে গেল। ভোট ব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে নিশ্চয়ই এগুলো করা হয় না। কারণ নির্বাচন হয় প্রতিশ্রুতির শতকরা দেখে। প্রতিশ্রুতি পূরণ হচ্ছে কিনা সেটা জানার জন্য এবার বরং আমরা চলে যাই মেদিনীপুর। দেখি সেখানকার অবস্থা কী রকম? কী বলছেন গ্রামের মানুষ।
দেখুন নির্বাচন যত এগিয়ে আসে, ততই শাসক-বিরোধী তরজা বাড়ে। এই তরজা কিসের? বিরোধীরা খোঁজে শাসকের গলদ। আর শাসক দেখায় নিজেদের কাজ। একটা উৎসবের বাতাবরণ। কিন্তু দিনের শেষে কি সত্যিই সেটা উৎসব থাকে নাকি উন্নয়নের ছবিটা সবজায়গায় পৌঁছতে পারছে কিনা, সেটাও বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং কেউ বলবেন হয়েছে আর কেউ বলবেন হয়নি। তার মানে কী পুরোটাই বিফলে যাবে? একেবারেই তা নয়। কিন্তু ক্ষোভ তো থেকেই যায়। গরীব, খেটে খাওয়া মানুষের অভাব অভিযোগ শুনবে কে? চলুন ক্যামেরা নিয়ে পৌঁছনো যাক উত্তর দিনাজপুর। এখানে অভাব, অভিযোগের সঙ্গে আমার ভোট উৎসবেরও একটা গন্ধ রয়েছে।
গণতন্ত্রের উৎসব আর ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায় জানেন? দুর্গা পুজো, কালী পুজো শেষ হয়ে গেলে মানুষের মন ভারক্রান্ত হয়। আবার এক বছরের অপেক্ষা। কিন্তু নির্বাচনের উৎসব শেষ হলে মানুষের মনে নামে খুশির জোয়ার। কারণ সেখানে থাকে আশা-ভরসা। ফেলে আসা বছরগুলোয় যে যে অভাব, অভিযোগ সাধারণ মানুষের ছিল নিশ্চয়ই নির্বাচনের পর সেটা আর থাকবে না। অর্থাৎ ঘরে ঘরে কাজ হবে। জমি ভরাট ফসল থাকবে। প্রত্যেকের মাথায় ছাদ থাকবে। প্রত্যেকে দুবেলা পেট ভরে খেতে পারবেন। কেউ বেকার থাকবেন না। সবাই সৎভাবে রোজগার করবেন। তবেই না জোর গলায় বলা যাবে- হ্যাঁ, ডেভেলপমেন্ট হয়েছে। আর যদি ডেভেলপমেন্ট না-হয়েই থাকে তাহলে তাকে কী আর উৎসব বলা যায়? আর বলা গেলেও সেটা কি খুব বৃহৎ অর্থে জাস্টিফায়েড হবে? আর গণতন্ত্রের উৎসব তখনই হবে যখন আট থেকে আশি, সবার মুখে হাসি দেখা যাবে। আর এই কথাটা বলা খুব প্রয়োজন। আজ যে কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে আপনাদের ভিজিট করালাম, তার নিরিখে আপনারাই বিচার করে বলুন, পাঁচ বছরে উন্নয়ন কী হয়েছে?
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ