Daily
চাষবাসে আগ্রহ রয়েছে অথচ পর্যাপ্ত জমি না থাকার কারণে অনেকেই পিছিয়ে আসছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, মিশ্র চাষের কথা ভেবে দেখেছেন কখনও? কৃষিকাজের ক্ষেত্রে মিশ্র চাষ কিন্তু এখন টপ ট্রেন্ডিং। ছোট একফালি জমিতেই গুছিয়ে মিশ্র চাষ করা যেতে পারে। কীভাবে? চলুন ঘুরে আসি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ব্লকের নকিবসান গ্রামের রবীন্দ্র মান্নার প্রদর্শনীক্ষেত্র থেকে।
জমির পরিমাণ মাত্র ১ বিঘা। ছোট জমি। তাতে কি? সেই ছোট জমিকেই ঠিক কতভাবে কাজে লাগান যায়, তা তিনি হাতেনাতে প্রমাণ করে দিয়েছেন। একদিকে যেমন চলছে বিভিন্ন শাক-সবজি, বাহারি পাতার চাষ, অন্যদিকে তেমনই চেম্বার তৈরি করে জিওল মাছও চাষ করছেন তিনি। জিওল মাছ হিসেবে শিঙি, কই, ট্যাংরার চাষ করেছেন তিনি। এখন তার চেম্বারে মাছের সংখ্যাটা প্রায় ১০ হাজার। একটি চেম্বারে তো আবার প্যাডি কাম ফিশ চাষও করছেন। মাছের স্বাস্থ্যের খেয়াল রেখেই। আর এই সমস্ত মাছ বাজারে বিক্রি করে ভালো দামও পাচ্ছেন রবীন্দ্র বাবু।
মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে রবীন্দ্র বাবু পাশে পেয়েছেন ব্লকের কৃষি দপ্তরকে। কৃষি দপ্তরের আতমা প্রকল্পের সহায়তায় তিনি আজ সফল। মিশ্র চাষের আগ্রহ দেখিয়ে তিনি প্রথম যোগাযোগ করেন স্থানীয় কৃষি দপ্তরের সঙ্গে। এরপর কৃষি আধিকারিকরা তার জমি পর্যবেক্ষণ করে দেখেন এবং মাছের চারা দিয়ে তাকে সাহায্যও করেন। আগামীদিনে তিনি যাতে এই অভিনব চাষের ক্ষেত্রে আরও উন্নতি করতে পারেন, সেই চেষ্টাই করছে কৃষি দপ্তর।
রবীন্দ্র বাবু কিন্তু শুধুমাত্র জিওল মাছ চাষেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। সম্প্রতি তিনি ইলিশ চাষের ট্রায়ালও শুরু করেছেন। আর বাজার সামনে হওয়ায় একেবারে ঘরের থেকে এসে মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। তাই মার্কেটিঙের জন্য আলাদা খাটনির কোন প্রশ্নই নেই। ভবিষ্যতে তার এই প্রদর্শনীক্ষেত্রের আরও প্রসার ঘটবে। এমনটাই আশা করেন কৃষি আধিকারিকরা।রবীন্দ্র বাবুর এই অভিনব মিশ্র চাষের আইডিয়া শুধুমাত্র তাকেই উপকৃত করেনি। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করেছে স্থানীয় এলাকাকেও। তাকে দেখে আরও অনেক চাষি এই মিশ্র চাষে আগ্রহ দেখাবে বলেই আশাবাদী স্থানীয় কৃষি দপ্তর।
প্রসূন ব্যানার্জি
পূর্ব মেদিনীপুর