Daily
অর্থমন্ত্রীর 8 দফা প্যাকেজে বাড়বে না বাজারের চাহিদা। হাল ফিরবে না অর্থনীতির। সুরাহা হবে না গরিব মানুষের। গোটা প্যাকেজটাকেই বিরোধীরা হীরক রাজার দরবারে মন্ত্রীর নাটুকে প্রতিবেদন বলেই কটাক্ষ করেছেন।
কোভিডের প্রথম ঢেউ থেকে দ্বিতীয় ঢেউ এই নিয়ে মোদি সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দু-দুবার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেন অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে। বিরোধীদের বক্তব্য, মরচে ধরা অর্থনীতির চাকায় এই প্যাকেজ কোন লুব্রিকেটিং এর কাজ তো করলই না উল্টে গাড়ির স্পিডও তুলতে পারল না বাস্তবের রাস্তায়।
অর্থনীতিবিদ থেকে শিল্পপতি। শিল্পপতি থেকে আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থাগুলি। সর্বোপরি দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সম্মিলিত অভিযোগ, মোদি সরকার শোনেন কম বলেন বেশি। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে উদয় কোটাকের মত অর্থনীতিবীদ তথা শিল্পপতিদের সরকারের প্রতি পরামর্শ ছিল, মানুষের হাতে নগদের যোগান বাড়ালেই হাল ফিরবে বাজারের। আর বাজারের হাল ফিরলেই ঘুরতে শুরু করবে দেশের অর্থনীতির চাকা। সংকুচিত জিডিপি আবারো প্রসারিত হবে।
দেশের তামাম অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে শিল্পপতিদের যাবতীয় পরামর্শকে পাশে সরিয়ে রেখে গতকাল অর্থমন্ত্রী যে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেন, তাকে পর্বতের মূষিক প্রসব বলেই কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস সহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
মূলত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে গ্যারান্টি যুক্ত ঋণনীতি ঠিক কত অংশের মানুষের কাজে আসবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, ব্যাঙ্ক তাদেরকেই ঋণ দেবে যারা অতীতে ঋণ শোধ করতে পেরেছেন। উৎপাদন থেকে পর্যটন। পর্যটন থেকে প্রক্রিয়াকরণ সমস্ত সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্র থেকে কর্মহীন হয়ে বহু মানুষ আজ ঘরে বসে রয়েছে। তাদের হাতে নগদের জোগান না আসলে বাজারে চাহিদা তৈরি হবে কি করে? আর বাজারে যদি চাহিদাই না থাকে তবে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পসংস্থাগুলি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েই বা কী করবে?
গতকালের 8 দফা আর্থিক প্যাকেজে অর্থমন্ত্রী সীতারামন বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোট ৬.২৯ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। যার মধ্যে প্রকৃতপক্ষে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজকোষ থেকে বের হবে মাত্র ০.০৫ শতাংশ। বেশিরভাগটাই জোগাবে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
বিরোধীরা এই তথ্য সামনে এনে অর্থমন্ত্রীকে পরিষ্কার বলতে চেয়েছেন, বিপুল জনসমষ্টির দেশ ভারতে যদি কমপক্ষে প্রতিটি মানুষের হাতে নগদের যোগান দিতে পারতেন অর্থমন্ত্রী তাহলে এক ধাক্কায় করোনার দুষ্ট ক্ষতকে ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারতো আর্থিক বৃদ্ধির গ্রাফটি।
অর্থমন্ত্রীর এই প্যাকেজ ভারতের আমজনতার কতটা কাজে লাগবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট অভিযোগ, ভ্যাকসিনে জিএসটি প্রত্যাহার না করে, মানুষকে ক্রেডিট না দিয়ে মোদি সরকার বরং মানুষকে ডিসক্রেডিট করে দিচ্ছেন।
তলানিতে থাকা বৃদ্ধির রেখা আদৌ সূর্যের মুখ দেখতে পাবে কিনা তার উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে অন্তত আরো কিছুদিন।
ব্যুরো রিপোর্ট, বিজনেস প্রাইম নিউজ