Trending
স্বপ্ন বড় হওয়া উচিৎ। স্বপ্ন পূরণের জন্য করতে হবে কম্মো। কাজ করে যাও মামা, ফলের আশা করো না। ফল থাকুক বা না-থাকুক দুগ্গা, কাজটা থেকেই যাবে। কিন্তু মোদীজি… স্বপ্ন দেখলেন, স্বপ্ন দেখালেন…আর স্বপ্নপূরণের জন্য নোটবন্দির নির্দেশ দিলেন…ওয়াহ ক্যা বাত।
মনে পড়ছে দিনটার কথা। ২০১৬, ৮ নভেম্বর। দেশের অর্থনীতির ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল মোদীজির এই মন কি বাত। এক রাতেই ঘুম উড়েছিল ১৩০ কোটি মানুষের। এটিএমে তিন ঘন্টা, চার ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেছেন দেশবাসী।
প্রত্যাশা ছিল করাপশন ফ্রি ইন্ডিয়া। সাধারণ মানুষ ভাবলেন, আরে মোদীজি বলছেন যখন, তখন আলবাত কালা ধন পাকড়াও করবেনই করবেন। ভারত করাপশন ফ্রি কান্ট্রি হবে! চাট্টিখানি কথা! মোদীজি সময় নিলেন মাত্র ৫০ দিন। বলেছিলেন, যত কালো টাকা আছে সব পাইপয়সা ফেরত আনা হবে। কিন্তু…হে…হে…হে…মোদীজি স্বপ্ন দেখেছেন। কাজও করেছেন। ৫০০ আর ১০০০ টাকা বাতিলও করলেন। কিন্তু কালো টাকা? তারিখ পে তারিখ…তারিখ পে তারিখ…হায় হায়…
তখন কিন্তু দেশে, বিদেশের বহু ইকোনমিস্ট পদ্মফুলের পদক্ষেপে পেয়েছিলেন কাঁটা। সেই কাঁটায় বিদ্ধ হবে ইকোনমি, সেটাও বলেছিলেন। কিন্তু হল কি? দেশের যত বড় টাইপ ফেমাস মানুষ রয়েছেন, মানে যাদের কথা আমআদমি শোনে, তারা তো প্রত্যেকে মোদীর জন্য আওড়ালেন প্রশংসা আর প্রশংসা। লং রানে এটা নাকি হেব্বি কাজে দেবে। এখানে কটা মানুষ আর ইকোনমিস্টের কথা শুনে সকালে ঘুম থেকে ওঠেন? এদের বাত, মন কি বাত। চায়ে পে চর্চা। আমেরিকা, ইউরোপের মত দেশের মাথারা এই ক্যালি দেখাতে পারবেন? করাপশন রুখে দেবার জন্য নোট বাতিলের পরামর্শ। মোদীজি করে দেখালেন। পুরো হেলিয়ে দিলেন সিস্টেম। ওয়ার্ল্ড পলিটিক্সে নম্বর ওয়ান পারসোনালিটি। আমেরিকা থেকে আমতা সব্বাই অবাক। দেখুন, এসবের মধ্যেও এলো ২ হাজার টাকার নোট। কিন্তু…কিন্তু ২ হাজারের নোট নিয়ে চাপেই থাকেন মধ্যবিত্ত। সবসময় কি আর ২ হাজারের খুচরো থাকে বলুন? সুতরাং, চিন্তায় পড়ল আমআদমি। আমআদমি মানে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত। কি যে কেলো? তার ওপর আবার মোদীজির মন কি বাত, ঘর ঘর মে ১৫ লাখ… কালো টাকা উদ্ধার করলেই সেটা পসিবল। কিন্তু আশায় বাঁচে… কী মোদীজি…
দেশের প্রতিটা রাজ্যে পদ্মফুল থাকুক, এটা চান না এমন নেতা, মন্ত্রীরা তো রেগেমেগে চেঁচিয়ে উঠলেন। মোদীজির মন কি বাত সব বরবাদ। সেই খোঁচা এখনো ভোলেননি সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ তো সাফাই দিলেন, নোটবন্দি আসলে লাভের লাভ কিছুই দিল না। শুধু দিল লোকসান।
মোদ্দা কথা, নোটবন্দির উদ্দ্যেশ্য ছিল জাল নোট উদ্ধার। কিন্তু হল কি? আরবিআই তো এক্কেবারে উল্টো কথা বলল। সেটা আরবিআইয়ের মন কি বাত কিনা জানা নেই। মার্চে যে অর্থবর্ষ শেষ হল, সেখানে বলা হল জাল নোটের অঙ্ক কমে তো নিই বরং বেড়েছে। ৫০০ টাকার জাল নোটের পরিমাণ যেমন বেড়েছে ১০.৭ শতাংশ। তেমনি ২ হাজার টাকার জাল নোটের পরিমাণ বেড়েছে ৫৪%। আরে ভাই ১০ টাকা, ১০০ টাকা, ২০০ টাকা…সব নোটের জাল নোট শুধু বেড়েছে আর বেড়েছে। লাভ হুয়া ক্যা? এদিকে আবার কোভিডের পর ডিজিটাল লেনদেন ইন্ডিয়াকে ডিজিটাল বানাচ্ছে। কিন্তু পকেট গরম সবার। দোকান, বাজার সব জায়গায় দেশবাসীর ম্যাক্সিমাম লোক ভালোবাসে কাগজের নোট। এখনো নগদ টাকা চলছে ফুল ফর্মে। এমনকি এই ছ’বছরে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৭১.৮৪ শতাংশ, মানে ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি টাকা রেকর্ড ভায়া রেকর্ড। এবার আপনিই বলুন। কিই বলবেন একে? নোটবন্দির ছ’বছর পর কালা ধন কোথায়? কি হাল আমআদমির? ইকোনমির ডেভেলপমেন্টের জন্য মোদীজির এই মাস্টারস্ট্রোক আসলে ফ্লপ নাকি হিট? বলুন আমাদের। আমরাও শুনব। আপাতত আজকের মত এখানেই খেল খতম করছি। নোটবন্দির দিনটা ভাবুন আর তার সঙ্গে লাইক শেয়ার সাবস্ক্রাইব করুন।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ