Daily
বাঙালি একদিকে যেমন ভোজনরসিক, উৎসবপ্রিয় তেমনি অন্যদিকে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে থাকেই। কারণে বা অকারণে সুযোগ আর সময় পেলেই বাঙালি বেরিয়ে পড়েন। বাঙালির এই চিরকালিন অভ্যাসে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল করোনা। অতিমারি পর্বে কলকাতায় যেমন দুর্গা পুজো হয়েছে নমো নমো করে, তেমনি আবার পুজোর সময় বাঙালির বেরনোতেও টানা হয়েছে সীমারেখা। কিন্তু এবারে সেই করোনার ভয় নেই। বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব একেবারে দোরগোরায়। অন্যদিকে পুজোর সময় ছুটিতে বেরনোর জন্য বাঙালি আর অপেক্ষা করেনি। তার একটা আভাস পাওয়া গেল বিজনেস প্রাইম নিউজে। বাঙালির অতি প্রিয় উত্তরবঙ্গে এবার মানুষের ভিড়। হোটেল থেকে হোম স্টে- সর্বত্র বুকিং হয়ে গেছে ৭০%। এখন প্রতি বছর উত্তরবঙ্গে ঘুরতে যাওয়া বাঙালির অভ্যাস। কিন্তু তাতেও উত্তরবঙ্গের এমন বহু জায়গা বা হোমস্টে রয়েছে, যার সম্পর্কে বাঙালি তেমন একটা ওয়াকিবহাল নন। তেমনি একটি জায়গা হল মিরিকের সরকারি রিসর্ট সুইস কটেজ।
মিরিক বললেই প্রথমে মাথায় আসে পাহাড়ের চূড়ায় নীল জলের একটি বড় ঝিল যার চারিদিক পাইন গাছ দিয়ে ঘেরা। পাহাড়ে গরমের ছুটিতে বা পুজোর ছুটিতে সময় কাটাতে আসা পর্যটকদের জন্য এটি একটি স্বর্গের মতো। ১৭৬৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই হিল স্টেশন। আর ছবির মত সুন্দর এই হিল স্টেশন মিরিক থেকে সুইস কটেজের দূরত্ব অবশ্য খুব বেশি নয়। মিরিক থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই সুইস কটেজে রয়েছে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা। এমনকি কটেজের উচ্চতা থেকে মিরিক শহরকে দেখলে তার সৌন্দর্য আরো বহুগুণ বেড়ে যায়। মিরিকে অন্যান্য বছরের মতন এই বছরেও বেশ ভালো রকম পর্যটকদের পা পড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। চালু হয়ে গিয়েছে বোট পরিষেবা।
এমনিতেই উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির একটা বড় অংশ নির্ভর করে এই পর্যটন শিল্পের ওপর। টানা দু’বছর করোনার জন্য সেই পরিষেবায় লাগে ভাটার টান। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই আবারও ছন্দে ফিরছে উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্প। পুজোর সময় উত্তরবঙ্গে ভিড় এমনিই দেখতে পাওয়া যায়। এই বছরেও সেই ট্র্যাডিশন থেকেছে বহাল। তার ওপর চলতি বছর রাজ্য সরকারের তরফে দুর্গা পূজার জন্য দশ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে এই বড় একটা ছুটিকে কাজে লাগিয়ে ফের উত্তরবঙ্গ মুখো হচ্ছে পর্যটকরা। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং ডুয়ার্সের অধিকাংশ হোটেলেই বুকিং প্রায় ৭০ শতাংশ শেষের পথে। বাকি হোটেল এবং হোমস্টেতে বুকিংও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হবে বলে আশায় বুক বেঁধেছেন ব্যবসায়ীরা। তাই সবমিলিয়ে বলাই যায়, অতিমারির ভয় কাটিয়ে পুজোর মুখে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্প।
অরূপ পোদ্দার
শিলিগুড়ি