Trending
হঠাৎ হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড। চিনের অঙ্গুলিহেলনেই যে পুরো কাজটা হচ্ছে, সেটা বুঝতে পেরেছে ভারত। একইসঙ্গে ভারত সরকারের রোষের মুখে পড়ার সম্ভাবনা প্রচণ্ডর সবথেকে বেশি। আকস্মিক এই সিদ্ধান্ত নেবার কারণে। সমস্যায় পড়েছেন নেপাল এবং ভারত বর্ডার সংলগ্ন দার্জিলিং জেলার পানিট্যাঙ্কির ব্যবসায়ীরা। নেপাল সরকার কেন কি জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই নিয়ে অলরেডি আমরা একটা প্রতিবেদন করেছি। সেটা দেখে নিতে পারেন আই বটনে ক্লিক করে। তবে কথামতন আজ বিজনেস প্রাইম নিউজ পৌঁছে গিয়েছে একেবারে পানিট্যাঙ্কিতে। নেপাল সরকারের কান্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত কিভাবে ভারতের ব্যবসায়ীদের ভালোরকম দুর্ভোগে ফেলে দিল, সেটাই বলব আজকের প্রতিবেদনে। জানতে হলে স্কিপ না করে দেখুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন।
পানিট্যাঙ্কি হচ্ছে ভারত এবং নেপালের প্রায় বর্ডার এরিয়া। শিলিগুড়ি থেকে পৌঁছনো যায় এখানে। পানিট্যাঙ্কিতে পা রাখলেই বুঝবেন এই জায়গাটা পুরোটাই ব্যবসায়ীদের স্বর্গভূমি। মূলত ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা এখানে হরেক জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেন। যার সিংহভাগ ক্রেতা নেপালের। পরিস্থিতি বেশ স্বাভাবিক ছিল। নেপালের ক্রেতারা এখানে আসতেন। এবং থলি ভর্তি করে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিয়ে যেতেন। ফলে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কার কোন জায়গা ছিল না। সবই ঠিক ছিল কিন্তু ছবিটা একেবারে ঘুরে গেল নেপাল সরকারের কাণ্ডজ্ঞানহীন মনোভাব এবং সিদ্ধান্তের কারণে। মূল্যবৃদ্ধির চোখরাঙ্গানি সেই দেশে বাড়ছে। এদিকে চিনের চাপ রয়েছে প্রচ্ছন্ন। এমনই একটি সময়ে নেপাল সরকার সিদ্ধান্ত নিল যা পানিট্যাঙ্কির ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাজার প্রায় মাঠে মেরে দিল। গত ১৫ জুলাই নেপাল সরকারের পক্ষ থেকে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চালু হয় এক নতুন নিয়ম। সেই নিয়মে বলা হয়েছে, ভারত থেকে নেপালে যদি কোন জিনিস ক্রেতারা নিয়ে যান এবং তার ভ্যালু যদি একশো টাকা ছাড়িয়ে যায় তাহলে অতিরিক্ত কর দিতে হবে নেপালের আমজনতাকে। আর এটাই যেন সমস্যাকে আরও চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। নেপাল বর্ডার সংলগ্ন দার্জিলিং জেলার পানিট্যাঙ্কি এলাকায় ব্যবসায়ী রয়েছেন বারোশো মতন। ব্যবসায়ীদের মতে নেপাল থেকে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ এখানে আসতেন। প্রত্যেকদিন লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা হত। কিন্তু এই নিয়ম লাগু হবার পর থেকেই পানিট্যাঙ্কির ব্যবসা কার্যত মাছি মারছে। ক্রেতারা অতিরিক্ত কর দেবার ভয়ে আর পানিট্যাঙ্কিতে আসছেন না। ফলে যে ব্যবসায়িক কর্মকান্ড চলছিল সেটা কার্যত ধাক্কা খেল।
শুধু তাই নয়। এই ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডকে ঘিরে পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাঁদের উপার্জনও খুব একটা মন্দ হত না। বেশ ভালোভাবেই তাঁদের দিনলিপি লেখা চলছিল। কিন্তু এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে আজ পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত যারা, তাদের অবস্থাও তথৈবচ। ভালোরকম ব্যবসা না-হলে গাড়ির চাকা যে থমকে যাবে সেটা স্বাভাবিক ছিলই। অর্থাৎ সর্বত্র এখন হতাশা। একইঅবস্থা বাস মালিকদের। আগে যেখানে দৈনিক রোজগার হত ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, সেটাই কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।
চিনের কথায় যদি নেপাল ঘুঁটি ফেলে, তাহলে ভারত চেকমেট করতে খুব একটা সময় নেবে না। কিন্তু জিও পলিটিক্সের এই প্রতিযোগিতায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হন আমজনতা। এখানকার পরিস্থিতি সেই একই। একদিকে যেমন সমস্যায় পড়েছেন নেপালের ক্রেতারা। তেমনই অন্যদিকে হতাশা গ্রাস করছে পানিট্যাঙ্কির ব্যবসায়ীদের। অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দেবার কথা ভাবছেন। বর্ডার এরিয়ায় ব্যবসা চলবে রমরমিয়ে। কিন্তু এখানে যে একেবারে উলটপুরান। তাই পানিট্যাঙ্কির ব্যবসায়ীরা হতাশা থেকে বেরনোর জন্য তাকিয়ে রয়েছেন সরকারের দিকে। এখন অন্ধকার কাটবে কবে? তার কোন উত্তর নেই। শুধু আশা নিয়েই এখনো প্রত্যেকদিন দোকান খুলে বসছেন পানিট্যাঙ্কির ব্যবসায়ীরা। প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে লাইক করুন, শেয়ার করুন। সঙ্গে নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করে নিন বিজনেস প্রাইম নিউজ।
অরূপ পোদ্দার
পানিট্যাঙ্কি