Daily
আর নয় উন্নয়নশীল দেশের তকমা। এবার উন্নত দেশ হিসেবে উঠে আসবে ভারত। সময়সীমা আর ২৫ বছর। ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে ভারত গড়ার ডাক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
বর্তমানে অ্যাডভান্সড এশিয়া বললে উঠে আসে হংকং, জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এবং চিন অধিকৃত তাইওয়ানের মত দেশগুলির নাম। আর উন্নয়নশীল দেশের তকমা রয়েছে ভারত, চিন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের গায়ে। এবার সেই তকমা ছেঁটে ফেলতে হবে। আর নয় উন্নয়নশীল, এবার হবে উন্নত। ডেভেলপড কান্ট্রি হিসেবে নাম থাকবে ভারতের। সেই লক্ষ্যেই এগোনো প্রয়োজন বলে ভাবছেন মোদী। বর্তমানে এশিয়ায় আর্থিকভাবে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত এবং চিন। এদিকে দুই দেশের মধ্যেই দীর্ঘ বছর ধরে রয়েছে আদায়-কাঁচকলা সম্পর্ক। চিনের অর্থনীতির উত্থান অনেকটা অলৌকিকতার সামিল। বর্তমানে চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি। ক্রয়ক্ষমতা এবং জিডিপির বিচারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই চিনের অবস্থান। আবার অন্যদিকে, সম্প্রতি ব্রিটেনকে পিছনে ফেলে দিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ভারত। মনে করা হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হবে। উল্লেখ্য, এই কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজের জমি মজবুত করার কাজটা খুব ভালোভাবেই করে আসছে ভারত। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখে বারবার উঠে এসেছে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ডাক। অর্থাৎ, অন্য দেশের ওপর নির্ভর করার ক্ষমতা কমিয়ে আনার প্রোজেক্ট। শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বত্র ভারত নিজের দাদাগিরি দেখাবে। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্টার্ট আপের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি মনে করছেন, স্টার্ট আপের সংখ্যা যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে অর্থনীতি শক্তপোক্ত হবে অনেকটাই।
এখানেই চমকে দেওয়ার মত তথ্য। চলতি বছরে স্টার্ট আপের নিরিখে ভারত রয়েছে তিন নম্বরে। স্টার্ট আপের মধ্যে ১০০-টি এখন ইউনিকর্ন। আমেরিকা এবং চিনের পরেই ভারতে এত বেশি ইউনিকর্ন রয়েছে। যার প্রশংসা করতে শোনা গেছে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে। এই ইউনিকর্নগুলো ভারতের অর্থনীতির জমি মজবুত রেখেছে। তার প্রভাব পড়েছে চলতি বছরে। ভারতের আর্থিক গ্রোথ নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশের তকমা এখনো গা থেকে ঝাড়তে পারেনি ভারত। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মাত্র ২৫ বছরের মধ্যে উন্নত দেশ হয়ে ওঠার জন্য মোদীর দাওয়াই কী?
সম্প্রতি কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে গ্লোবাল ইনভেস্টরস মিট হয়। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিশা দেখালেন। তিনি মনে করছেন, ২৫ বছরের মধ্যে ভারতকে উন্নত দেশ হিসেবে যদি উঠে আসতে হয়, তার জন্য প্রয়োজন রয়েছে আরও বেশি বিনিয়োগের। দেশে যত বেশি বিনিয়োগ হবে, ততই উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছতে কম কাঠখড় পোড়াতে হবে ভারতকে। কোন সন্দেহ নেই যে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্ব দরবারে ভারত কিন্তু নিজের ইমেজ এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। তার জন্য কাজ করেছে মোদী ম্যাজিক। বিশ্বে সবচেয়ে পপুলার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এক নম্বরে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও বিদেশমন্ত্রী এস.জয়শঙ্করের ক্যারিশ্মা বিশ্ব দরবারে ভারতের প্রতি অন্যান্য দেশের সম্ভ্রম শুধু বাড়িয়ে গিয়েছে। একদিকে যখন কোভিড, মূল্যবৃদ্ধির মত একাধিক সমস্যা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে টলিয়ে দিচ্ছে, তখন ভারতের শীর্ষ ব্যাঙ্ক আরবিআই-এর একের পর এক পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে খোদ আইএমএফ। এছাড়াও, ভারত এখন তাঁবেদারির পথে হাঁটছে না। আমেরিকা, চিন, ইউরোপ, রাশিয়া- সর্বত্রই ভারত কথা বলছে চোখে চোখ রেখে। ফলে সবমিলিয়ে ভারতের ইমেজ গোটা বিশ্বে ভালোরকম প্রভাব ছড়িয়েছে। এবার লক্ষ্য উন্নয়নশীল দেশের তকমা হটিয়ে উন্নত দেশ হিসেবে নাম তোলার। আপাতত সেই লক্ষ্য নিয়েই ভারতীয়দের এগিয়ে আসার ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আপনার কি মনে হয়? মোদী মন্ত্রই কি উন্নত ভারত গড়ার কাজ করবে? মতামত জানান, আমাদের কমেন্ট বক্সে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ