সব ফুল লাগে না পুজোয়। বরং ডেকোরেশনের জন্য বিভিন্ন রংবাহারি ফুলের চাহিদা থাকে ঊর্ধ্বমুখী। জারবেরা ফুল অনেকটা তেমনি। পুজোর কাজে না লাগলেও ডেকোরেশনের জন্য এই ফুল চাষ করলে লাভের অঙ্ক ভালোই থাকে চাষিদের। এবার সেই ছবিটাই ধরা পড়ল নদীয়া জেলার পারুলিয়া গ্রামে।

নদীয়া জেলার হরিণঘাটা ব্লকের পারুলিয়া গ্রাম। এই গ্রামের কৃষক অসীম মণ্ডল। আগে গাঁদা ফুলের মত বিভিন্ন ফুলের চাষ হলেও জারবেরা ফুলের চাষেই এখন লাভের অঙ্ক দেখতে পারছেন কৃষক অসীম মণ্ডল। বছরে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন এই জারবেরা ফুল চাষ করেই। তাঁকে এই ফুল চাষে উৎসাহিত করেছে হর্টিকালচার বিভাগ এবং কৃষি বিজ্ঞানীদের পরামর্শ। গত কয়েক বছর আগে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানপালন দফতরের একটি সেমিনারে গিয়েছিলেন অসীমবাবু। সেখানেই জারবেরা ফুল সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। তারপর পলি হাউজে শুরু করেন এই ফুল চাষ। বিভিন্ন জাতের জারবেরা ফুল তো রয়েছেই। সঙ্গে রয়েছে ডালিয়া এবং পাতা বাহার সহ বিভিন্ন ফুল। একইসঙ্গে পেয়েছেন সরকারি অনুদান।

১০০০ স্কোয়ার মিটারে পলি হাউজ তৈরি করে জারবেরা ফুল চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। সেক্ষেত্রে সরকারি অনুদান পাওয়া যায় ৮ লক্ষ টাকা মতন। কৃষক অসীমবাবু এই ফুল চাষ করেছেন ৫০০ স্কোয়ার মিটারে জমির উপর। এক্ষেত্রে অসীমবাবুর খরচ হয়েছে ৮ লক্ষ টাকা মতন। সরকারি অনুদান পেয়েছেন ৪ লক্ষ টাকা। পুণা থেকে চারা আনিয়ে এই ফুল চাষ করা শুরু করেন তিনি। কিভাবে এই ফুলের চাষ হয়, শুনে নেব কৃষক অসীমবাবুর মুখ থেকেই।

এমনিতে জারবেরা ফুল বাজারজাত করার কোন সমস্যা নেই। তাই লাভের অঙ্ক বাড়াতে জারবেরা ফুল চাষ করা যেতেই পারে। তবে পলি হাউজে কি করে জারবেরা ফুল চাষ করা যায় এবং সরকারের সহযোগিতা কতটা থাকে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন উদ্যানপালন দফতরের কৃষি বিজ্ঞানী সোমা গিরি।

প্রতি পিস ফুলের দাম পৌঁছে যায় ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা। এমনকি কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে ঘরের মধ্যে দশ দিন পর্যন্ত রাখা যায় এই জারবেরা ফুল। একবার জারবেরা ফুল চাষ করলে কম করে ৫ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যে পৌঁছে যায় জারবেরা ফুল। বর্তমানে এই ফুলের বিক্রি লোকাল বাজারে কম হলেও কলকাতায় এই ফুলের চাহিদা এখন বেশি পাওয়া যায়। পলিহাউজের মধ্যে এই বিশেষ পদ্ধতিতে জারবেরা ফুলের চাষ কৃষি বিজ্ঞানীদের পরামর্শে করতে পারলে লাভের অঙ্ক ক্রমশই বাড়বে ফুলচাষিদের।

দেবস্মিতা মণ্ডল
নদীয়া