Daily
শীতের হাওয়া বইতে শুরু করলেই রংবাহারি ফুলগুলি যেন প্রাণ ফিরে পায়। যাদের ফুলের শখ তাঁরা টব কিনে বিভিন্ন প্রজাতির রংবেরংয়ের ফুলের গাছ টবে লাগান। তাই শীতের আমেজ এলেই যেন বেড়ে যায় ফুলের টবের চাহিদা। ফলে, টব তৈরিই যাদের পেশা তাঁদের জন্য শীতকাল উপার্জনের একটা দারুণ মরশুম। টব তৈরির ব্যস্ততা এই সময় বেড়ে যায় অনেকটাই। আর এই টব তৈরি করে যেমন একজন উদ্যোগী জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন তেমনি এ কাজে যুক্ত থেকে রোজগারের সন্ধান পান বহু শ্রমজীবী মানুষ। এমনই একজন উদ্যোগী সন্ন্যাসী পাল।
নদীয়ার হাড়িপুকুরের সন্ন্যাসীবাবু টালি তৈরি করেই সংসার সামলাতেন। এটাই ছিল তাঁর পারিবারিক পেশা। কিন্তু টালির চাহিদা ক্রমশ কমতে থাকায় বিকল্প কোন পেশার কথা ভাবছিলেন সন্ন্যাসীবাবু। তারপরেই শুরু হয় ফুলের টব তৈরির কারবার। গত দু’বছর ধরে টব তৈরি করছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর তৈরি টব ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। ব্যস্ততা এতটাই বেড়েছে যে টব তৈরির জন্য ১৫ জন কর্মচারী কাজ করছেন তাঁর তত্ত্বাবধানে। যারা সন্ন্যাসীবাবুর এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার পরে খুঁজে পেয়েছেন সুস্থ, স্থিতিশীল আয়ের দিশা।
টগরীর মত আরো অনেকেই রোজগারের দিশা দেখতে পেয়েছেন। আর এই টব তৈরির ব্যবসা এখন অনেকটাই তুঙ্গে। স্থানীয় জায়গা থেকে মাটি কিনে নিজেই টবের ছাঁচ তৈরি করে বিভিন্ন আকৃতির মাটির টব তিনি তৈরি করছেন। সন্ন্যাসীবাবুর তৈরি টব চলে যাচ্ছে বোলপুর, বিরাটি, নৈহাটি, কল্যাণী, কাঁচরাপাড়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠা নার্সারি শিল্পে।
সন্ন্যাসীবাবুর এই উদ্যোগের কারণেই আজ ১৫ জন শ্রমিকের পেট ভরছে। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হরিণঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গৌতম কীর্তনিয়া। এমনকি উদ্যোগী মৃৎশিল্পীকে সবরকম সাহায্য করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আমাদের রাজ্যে ফুলের টবের চাহিদা থাকে সবসময়। আর শীতকালে এই টবের চাহিদা অনেকটা বেড়ে যায়। আর টব শিল্প যে এভাবে সংসারের চাকা ঘোরাতে পারে সেই ছবিটাই যেন স্পষ্ট করে ধরা পড়ল সন্ন্যাসীবাবুর এই উদ্যোগে। যাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শ্রমিকরা। যারা কিছুটা হলেও পেয়েছেন স্বস্তি। সন্ন্যাসীবাবুর টব তৈরির কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে।
সুব্রত সরকার
নদীয়া