Daily
গতকাল কোচবিহার সীমান্তে সীতাইতে বিএসএফের গুলিতে ১ ভারতীয়সহ মোট ৩ জনের যখন মৃত্যু হল ঠিক তখনই কলকাতায় আজ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা।
কেন্দ্রীয় সরকার সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তিতে, পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব ও অসমে বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সীমান্ত থেকে বর্তমান ১৫ কিমির জায়গায় বাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে হয় ৫০ কিমি। এর ফলে তিন রাজ্যেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রশ্নে বাহিনীর ক্ষমতা ও প্রভাব অনেকখানি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুই দিক থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে এই বৈঠককে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে সীমান্ত সংলগ্ন জেলাগুলিতে পরিকাঠামো উন্নয়ন, সার্বিক উন্নয়ন সহ একাধিক পোশাকি বিষয় থাকলেও ঘুরেফিরে সেই আলোচ্যসূচিতে বাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধির কথাই তোলা হবে বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে পাঞ্জাব বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। রাজ্যগুলির অভিযোগ, এর ফলে রাজ্য প্রশাসনের এক্তিয়ার অনেকটাই খর্ব হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তির সমর্থনে অনুপ্রবেশ, বেআইনি অস্ত্র চোরাচালান, বেআইনি মাদকসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়গুলিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলেও পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলির অভিযোগ, বাহিনীর ক্ষমতা বৃদ্ধি সরাসরি খর্ব করবে রাজ্যের আইন শৃংখলার এক্তিয়ারকে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে, প্রায় ১৩ টি জেলার আইনশৃঙ্খলা সরাসরি চলে যাবে বাহিনীর দখলে।
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আইন শৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু হঠাৎ করে তিন রাজ্যে বাহিনীর যেভাবে নজিরবিহীন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হলো তা রীতিমতো যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী বলেই বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। বিশ্লেষকদের আরো অনুমান, পরবর্তীতে পাঞ্জাব রাজ্য কিংবা পশ্চিমবঙ্গের পক্ষ থেকে বিষয়টি আদালতে নিয়ে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের যাতে মুখ না পড়ে সেই জন্যই কি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের তড়িঘড়ি রাজ্যে আগমন ? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এখন প্রশ্নের উত্তর কত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে সেটাই এখন দেখার।
ব্যুরো রিপোর্ট