Trending
এটা কি ছেলেখেলা? একবার কর্মীছাঁটাই আরেকবার কর্মী ফেরত চাই। বলি হচ্ছে টা কি? আপনারা সকলেই জানেন যে টুইটার অধিগ্রহণের পরই ৫০ শতাংশ কর্মীকে কোম্পানি থেকে বরখাস্ত করেছেন ইলন মাস্ক। মাত্র ১৫ দিনের একটা নোটিশ দেওয়া হয় কর্মীদের। খুব ঠাণ্ডা মাথায় টুইটারের সমস্ত কর্মীকে একটা মেইল পাঠান মাস্ক। কেমন ছিল সেই ফরম্যাটটা? তাতে লেখা ছিল, যে টুইটার বর্তমানে চরম আর্থিক ক্ষতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তাই টুইটারকে সুস্থ পথে পরিচালনা করার জন্য বিশ্বব্যাপী কর্মী হ্রাস করতে বাধ্য হচ্ছে টুইটার। তাই শুক্রবার নাগাদ সংস্থার প্রতিটি কর্মী একটি মেইল পাবেন, যেখানে লেখা থাকবে “Your Role in Twitter”। যারা কাজে থাকছেন তারা কোম্পানির মেইলে পাবেন আর যারা কাজ হারাচ্ছেন তারা মেইল পাবেন তাদের পার্সোনাল আইডিতে। ফর ইয়োর ইনফরমেশন, ওয়ার্ন অ্যাকট অনুযায়ী, যদি কোন বড় কোম্পানি মাস লে-অফ করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে তাকে মিনিমাম ৬০ দিনের নোটিশ পিরিয়ড রাখতে হয়। সেসব ঠিকাছে। কিন্তু এতকিছুর পর আবার কর্মীদের ফেরত চাইছেন কেন তিনি? তাহলে কি টুইটার পরিচালক কনফিউসড? নাকি নিজের ইমেজ নিয়ে একটু বেশিই কনসার্ন?
৪৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে টুইটারের নিউ বস এখন ইলন মাস্ক। যার মধ্যে আবার ১৩ বিলিয়ন ডলার নাকি তিনি ধার নিয়েছেন। আর মালিকিয়ানায় আসার পরই নির্মমভাবে কর্মীছাঁটাই করেছেন তিনি। এদিকে আবার টুইটার ব্লু টিক নিয়েও চর্চায় রয়েছেন মাস্ক। যদি ধরেও নেই যে টুইটার কেনার খরচ সামলাতে ব্লু টিকের বিনিময়ে তিনি প্রতিমাসে ৮ ডলার করে নেবেন। কিন্তু একটা কথা বলুন তো, ক’টা লোক টুইটার ব্যবহার করে? মাত্র ৪৫০ মিলিয়ন মানুষ। তাহলে এবার একটু হিসেবের খাতাটা খুলে চটপট অঙ্ক কষে বলুন দেখি, এই ব্লু টিক বেচে একজ্যাক্টলি কত টাকা উঠবে? আর তা দিয়ে কি মাস্কের লোন নেওয়া অঙ্কের ভরপাই সত্যিই হবে? কি, পেনটা আটকে গেল তো? স্বাভাবিক। তবে, টেসলা, স্পেসএক্সের মতো প্রোজেক্ট প্ল্যানার যে এরকম একটা নির্মম ডিসিশন নিতে পারে, সেটা একটু অস্বাভাবিক। কাজেই মার্কেটে মাস্কের ইমেজটা যে এভিল টাইপ হয়ে উঠেছে, তা বলতেই পারেন।
যদিও কর্মচ্যুত কর্মীদের উদ্দেশ্যে মাস্ক বলেছিলেন,
১ঃ যারা কর্মচ্যুত হচ্ছেন, সেইসব এমপ্লয়িদের কম্পেন্সেশন এবং বেনিফিট যা ছিল, তা আগামী একবছরের জন্য একই থাকবে।
২ঃ কর্মচ্যুত কর্মী আগামী ২ মাসের মাইনে পাবেন।
৩ঃ কর্মচ্যুত কর্মীদের কোন ইক্যুইটি থাকলে, তারও ক্যাশ ভ্যালু তারা পাবেন।
কিন্তু এত কিছুর পরেও শেষ রক্ষা হল না। ওই যে নিউটন বলেছিলেন, এভ্রি অ্যাকশন হ্যাজ ইটস ইকুয়াল অ্যান্ড অপজিট রিঅ্যাকশন। স্বল্প সময়ের নোটিশ পেয়ে টুইটারের কর্মচ্যুত বহু কর্মী মাস্কের এগেইনস্টে ক্লাস অ্যাকশন ল-স্যুট ফাইল করে। ভারতে যদিও এসব হয়না। তাই ভারতের বাইরে টুইটার কর্মীরা কাজ হারিয়ে মাস্কের বিরুদ্ধ কেস ফাইল করেন। কিন্তু মাস্ক এসব বিষয়ে কিচ্ছুটি বলেননি। প্রসঙ্গত, টুইটার জানিয়েছে যে, কোম্পানি থেকে কর্মচারীদের বরখাস্ত করাটা আসলে মিস্টেক ছিল। আগামীদিনে টুইটারের এভলিউশনারী কাজের ক্ষেত্রে এই সমস্ত কর্মীদের কাজের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান কাজে লাগবে মাস্কের। তাই কর্মীদের ফেরত আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, টুইটারের মাস লে-অফের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া সহ চারিপাশে যে গর্জন উঠেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কি ভয় পেয়েছেন মাস্ক? আর তাই জন্যই কি সুরটা নরম করে কর্মীদের ফিরে আসতে বলছেন মাস্ক? নাকি সত্যিই বাই মিস্টেক তিনি কর্মী ছাঁটাই করেছেন এবং এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাদের ফেরত আসতে বলছেন?
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ