Daily

স্রোতের অনুকূলে তো সবাই চলতে পারে। কিন্তু নায়ক সেই যে স্রোতের প্রতিকুলে হাঁটে এবং সফল হতে পারে। দেখুন অতিমারির কারণে দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোতে যে চিড় ধরেছে, সেটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সেই দুঃখের ভার আর কতদিন বয়ে বেড়াবেন? নিজেই কিছু করুন না। ধীরে হলেও সফল তো হবেনই। আজ এমনই এক নায়কের পরিচয় করাব আপনাদের সঙ্গে।
শিলিগুড়ির মাটিগাড়া ১ নং ব্লকের ব্লকের ঠিকনিকাটা এলাকার বাসিন্দা হিতেন্দ্রনাথ রায়। বিগত ৮ বছর ধরে বাড়ির উঠোনে ছোট একটা জায়গায় তিনি মাশরুম চাষ করছেন। খানিকটা নেশার বশেই বলতে পারেন। কিন্তু আসলে তিনি পেশায় একজন ইন্সিওরেন্স কর্মী। গত দুছরের ইতিহাসে সকলের যা ক্ষতি হয়েছে, হিতেন্দ্রনাথ বাবুরও তাই হয়েছে। অতিমারি আবহে যেখানে মানুষের পেটের ভাত জোগাড় করা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেখানে ইন্সিওরেন্সের কচকচানি কে আর শুনবে বলুন? তাই অবস্থা বেগতিক দেখে নেশাকেই পেশা করলেন তিনি। বানিজ্যিকভাবে শুরু করলেন মাশরুম চাষ। কিন্তু করোনা অতিমারির সময় যখন বাকি সব ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণটা সাংঘাতিক ছিল, তখন কীভাবে সারভাইভ করলেন হিতেন্দ্রনাথ বাবু?
শুধু মাশরুম চাষি হিসেবেই নন, তিনি নিজে একজন গাইড হিসেবেও পাশে দাঁড়াবেন বলেও আশ্বাস দিচ্ছেন সকলকে। কাজেই কেউ যদি হাতে-কলমে মাশরুম চাষ করতে চান, সে কিন্তু নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে পারেন হিতেন্দ্রনাথ বাবুর সঙ্গে। শুধু তাই নয়, কোন কোন সরকারি সাহায্য পাওয়া যেতে পারে এবং কীভাবে, সে বিষয়েও বিস্তারিত জানালেন তিনি।
সরকারি সহযোগিতা পেয়ে শুধু চাষ করলেই তো আর হল না। সেটা তো বিক্রির ব্যাবস্থাও করতে হবে। কাজেই এবার আমরা তার কাছ থেকে জেনে নেব যে তিনি ঠিক কোন কোন জায়গায় মাশরুম বিক্রি করেন। আর তার সাথে অবশ্যই, কত টাকা নিয়ে এই ব্যবসায় নামা যেতে পারে, বা চাষ করে কত টাকা রোজগার হতে পারে। সেটা আদৌ সলিড কোন উপার্জন কিনা, সবটাই জানব তার কাছ থেকেই।
একদিকে সফল মাশরুম চাষি, অন্যদিকে এখনও ইন্সিওরেন্স কোম্পানির কর্মচারী। এবং দুটো দিকই দারুন ব্যালেন্স করে চলছেন। সফল তো বটেই, অতিমারি যুদ্ধেও জয়ী তিনি। আর আজ শিলিগুড়ির একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবেও উদাহরণ তৈরি করেন তার এই মাশরুম চাষের মধ্যে দিয়েই। শিলিগুড়ি অঞ্চলের বেকারত্বে রাশ টানতে তার এই পরিকল্পনা যে বেশ কার্যকরী হবে, তা বলাই যায়।
অরূপ পোদ্দার
শিলিগুড়ি