Trending
প্রি-কোভিড আর পোস্ট কোভিডে অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির মতন সিনে ইন্ডাস্ট্রিতেও বড়সড় চেঞ্জ এসেছে। আমরা প্রত্যেকেই সেটা লক্ষ্য করেছি। সিনেমা হিট, সিনেমা ফ্লপ, সিনেমা বয়কট এসব বাদ দিয়েও যদি শুধু এন্টারটেনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির কথাই ধরি, তাহলে এই চেঞ্জ এসেছে মানুষের দেখার অভ্যাসে। মানে সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্স ইত্যাদি জায়গায় গিয়ে টাকা-পয়সা খরচ করে মানুষ আর সিনেমা তেমন দেখছেন না। স্বাভাবিকভাবেই, এটার জন্য প্রযোজকদের কপালে পড়ছে চিন্তার ভাঁজ। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, ঠিক কি কারণে মানুষ হলমুখী হচ্ছেন না? অনেকেই এর জন্য দায়ি করছেন ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে। সত্যিই কি তাই?
২০১৮ সাল। সেই সময় ওটিটি প্ল্যাটফর্মের এই দাদাগিরি তেমন একটা ছিল না। আর যে কারণে এক্ষেত্রে পুঁজির অঙ্কটা ছিল ২৫৯০ কোটি টাকা। কিন্তু এই পাঁচ বছরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম কার্যত মাল্টিপ্লেক্স, সিনেমা হলগুলোকে যে গিলে খেয়ে নিচ্ছে তার একটা ছোট প্রমাণ দেওয়া যাক। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য এই পুঁজিটা পৌঁছে যেতে পারে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকায়। মানে, প্রতি বছর ৩৬% বৃদ্ধি পাচ্ছে এই ওটিটির ব্যবসা। এমনকি বলা হচ্ছে, বিনোদন জগত থেকে যে আয় আসছে তার ৭-৯ শতাংশ এসেছে স্রেফ ওটিটি প্ল্যাটফর্ম থেকেই। আর এটাই কার্যত ঘুম উড়িয়ে দেওয়ার মতন, অন্তত মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিনেমা হলমালিকদের কাছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এভাবে জনপ্রিয়তা কুড়োচ্ছে?
আসলে করোনার পর, সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভ্যাসে একটা হ্যাভক চেঞ্জ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ওটিটি সেই চেঞ্জে খানিকটা নুন ছেটানোর কাজ করছে। কিরকম? একটা সিনেমা দেখার জন্য যেখানে এককালীন বেশ কিছু টাকা খরচ করতে হয়, সেখানে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সাবস্ক্রাইব করে নিলে, দর্শকদের এন্টারটেনমেন্টের জন্য অন্য কোথাও যেতে হচ্ছে না। এতো ধরণের কনটেন্ট, এতো বৈচিত্র্য- সেটা আর কোথায় পাওয়া যাবে? নেই ধরাবাঁধা সময়ের ঝামেলা। যখন ইচ্ছে, যখন মন চাইবে তখনই দেখে নেওয়া যায় পছন্দের সিনেমা বা সিরিজ। আর হাই স্পিড ইন্টারনেটের যুগে সেটাই যেন বড় রকমের সমাধান এনে দিয়েছে গ্রাহকদের কাছে। মানুষের হাতে এখন পুঁজি কম। তাই একটা সিনেমার জন্য আর অত টাকা খরচ করতে চাইছেন না কেউই। পছন্দের ভাষায়, পছন্দের কনটেন্ট নির্বাচন করে শুধু দেখতে পারলেই হল, নিজের মর্জিমতন। এখানেই বলে রাখি। বর্তমানে, ডিজনি হটস্টারে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা রয়েছে ১৪ কোটি। অ্যামাজন প্রাইমে ৬ কোটি, নেটফ্লিক্সে ৪ কোটি, জি ফাইভে ৩.৭ কোটি এবং সোনি লিভে প্রায় ২.৫ কোটি। সিনেমা হোক সিরিজ- মানুষ শুধু বোঝে এন্টারটেনমেন্ট, এন্টারটেনমেন্ট আর এন্টারটেনমেন্ট। ওটিটির দৌলতে এখন এন্টারটেনমেন্ট আমার আপনার দোরগোড়ায়। আর সেটাই যেন নতুন করে চাপ বাড়িয়েছে মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিনেমা হলমালিকদের কাছে। কিন্তু আপনিও কি ওটিটি প্ল্যাটফর্মকেই বেছে নেবেন সিনেমা দেখার জন্য? তাহলে মাল্টিপ্লেক্স বা সিনেমা হল মালিকদের অবস্থা ঠিক কোথায় দাঁড়াবে? প্রশ্নটা রইল আমাদের থেকে। মতামত জানান কমেন্ট বক্সে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ