Daily
দক্ষিণ দিনাজপুরের মহিষবাথান। বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুপ্রাচীন মুখা শিল্পের আঁতুড়ঘর। লোকে বলে, প্রায় কয়েকশো বছর আগে, এই জেলার কুশমণ্ডি ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকার চাষিরা ফসল তোলার আগে মুখা পড়ে গম্ভীরা পুজো করতেন। সাথে আয়োজন করতেন এক বিশেষ ধরণের নাচের। ফসলের উপর থেকে মূলত অশুভ শক্তির নাশ ঘটিয়ে শুভ শক্তিকে বরণ করে নেওয়াই এই পার্বণের রীতি। সেই সময় থেকেই প্রাচীন প্রথা মেনে এই রীতি এগিয়ে নিয়ে চলেছেন সেখানকার মানুষজন।
আধুনিকতার মোড়কে গ্রাম-বাংলার বেশ কিছু পার্বণের প্রথা ম্লান হয়ে গেলেও বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ভালোরকম জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছে বাংলার এই মুখা শিল্প। দেখতে দেখতে এই মুখা শিল্প আর গম্ভীরা নাচের এই জনপ্রিয়তা পাশ্ববর্তী রাজ্য ছাড়িয়ে, ছড়িয়ে পড়েছে ভিন দেশেও। রাতারাতি মুখা শিল্পের জনপ্রিয়তা বাড়তেই মুখা তৈরিতে আগ্রহ বেড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বহু হস্তশিল্পীদের। আজ বহু মানুষের কর্মসংস্থানের দিশা দেখিয়েছে এই মুখা শিল্প। মহিষবাথান গ্রামীণ হস্তশিল্প সমবায় সমিতিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেশ ভালোরকম উপার্জন করছেন তারা।
মুখার সাথে যুক্ত হস্তশিল্পীদের আয় সুনিশ্চিত করতে সমস্তরকম সহযোগিতা করছেন জেলা প্রশাসন। তাদের তৈরি মুখা যেন সহজে লোকের কাছে পৌঁছয় এবং একইসাথে যাতে বিক্রির বহর বাড়ে, সেই জন্য একটি ওয়েবসাইটের ব্যবস্থাও করেছেন তারা। উদ্যোগ নিয়েছেন জেলার জেলাশাসক আয়েশা রানী স্বয়ং।
জেলাপ্রশাসনের এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার হস্তশিল্পীরা। সরকার এইভাবে তাদের পাশে থাকায় খুশির আমেজ শিল্পীমহলে।
বিক্রম লাহা
বিজনেস প্রাইম নিউজ