মুকেশ অম্বানির বাড়িতে কোন এসি নেই, পাখাও নেই। তারপরেও মুকেশ অম্বানির অ্যান্টিলিয়াতে প্রতি মাসে যে ইলেকট্রিক বিল আসে তা দিয়ে কলকাতায় আপনি কিনে নিতে পারবেন একটা লাগজারি ফ্ল্যাট। এবার এটা দেখে আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, মুকেশ অম্বানির বাড়িতে ফ্যান বা এসি না থাকলেও কিভাবে এতো টাকা বিল আসে যে তা দিয়ে একটা ফ্ল্যাট কিনে নেওয়া সম্ভব? পুরোটা শুনলে আপনি চমকে যেতে বাধ্য কিন্তু।

মুকেশ অম্বানি দেশের ধনীতম, এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি। সদ্য কনিষ্ঠ পুত্রের বিয়ে দিয়েছেন ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে। দেশ, বিদেশের তাবড় ব্যবসায়ী, সেলিব্রিটি এবং রাজনীতিবিদদের পা পড়েছে এই বিয়ের অনুষ্ঠানে। সেখানে গিয়ে তাঁরা কিছুটা আত্মহারা। যাগযজ্ঞের যা বহর চোখে পড়েছে, তারপর অনন্ত অম্বানির বিয়ে যে বিশ্বের সবথেকে ব্যয়বহুল বিয়ে হল, সেই নিয়ে অনেকেরই কোন ধন্ধ নেই। মুকেশ অম্বানির মন্ত্র যেন- লিভ লাইভ কিং সাইজ। সেই ছবি তাঁর জীবন যাপনের ছত্রে ছত্রে ধরা দেয়। তাই মুকেশ অম্বানি যে বাড়িতে থাকেন সেটাও যে বিশ্বের ধনীতম বাড়ি হবে সেটায় আর নতুন কী? আছে, মুকেশ অম্বানি যেভাবে লাইফ স্টাইল লিড করেন, সেখানে প্রতিদিনই নতুন নতুন নানা তথ্য সব উঠে আসে। মুকেশ যে বাড়িতে থাকেন তার নাম অ্যান্টিলিয়া। আজকের বলব, এই অ্যান্টিলিয়া নিয়ে। যেখানে এসি, পাখা নেই সেখানে অ্যান্টিলিয়া কিভাবে নিজের ঘর ঠাণ্ডা রাখে? কিভাবেই বা থাকেন তাঁরা?

মুকেশ অম্বানির বাড়ি অ্যান্টিলিয়ার দাম প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। এই বাড়িতে রয়েছে ২৭টা ফ্লোর। এখানেই ২০১২ সাল থেকে বিলাসবহুল জীবন কাটান অম্বানি পরিবার। একটা রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, অ্যান্টিলিয়ায় প্রতি মাসে শুধু বিদ্যুতের খরচ আসে প্রায় ৭০ লাখ টাকা! ভাবতে পারছেন? প্রতি মাসে শুধু বিদ্যুৎ খরচ বাবদ নাকি ৭০ লাখ টাকা প্রতি মাসে দিতে হচ্ছে মুকেশ অম্বানিকে। এই টাকা একজন ভারতীয় মধ্যবিত্ত পরিবার সারা জীবনে জমাতে পারে। আর সেই টাকা নাকি এক মাসে শুধু বিদ্যুতের বিল খরচেই বেরিয়ে যাচ্ছে! কেন? তাও তো ঐ বাড়িতে কোন এসি বা পাখা নেই। মুকেশ অম্বানির বাড়ি অ্যান্টিলিয়া যেখানে সেই জায়গাটা বিশ্বের অন্যতম ধনী এলাকায়। বাড়িটার নকশা করা হয়েছে ক্রিস্টাল, মার্বেল এবং মুক্তো দিয়ে। অ্যান্টিলিয়া তে রয়েছে ছ’তলা গাড়ি রাখার জায়গা। দেড়শোর ওপর গাড়ি থাকে খোদ মুকেশ অম্বানির। বলা হয়, প্রত্যেকটা ফ্লোরের এতটাই হাইট, যে দেখে ২৭ তলা হলেও আসলে যেন ৬০ তলার সমান। প্রত্যেক ফ্লোরের ডিজাইন আলাদা আলাদা। একটি ফ্লোরের সঙ্গে অন্য ফ্লোরের ডিজাইনে অনেক ফারাক। এই অ্যান্টিলিয়াতে রয়েছে প্রায় ৬০০ জন কর্মচারী। রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও এই বাড়ির কোন ক্ষতি হবে না। অ্যান্টিলিয়ায় রয়েছে ৯টি ফ্ল্যাট। যা অ্যান্টিলিয়ার বিভিন্ন ফ্লোরকে কানেক্ট করেছে। এই অ্যান্টিলিয়াতে আছে প্রাইভেট মুভি থিয়েটার। রয়েছে জাকুজি, স্পা, জিমখানা আরও কত কী। অ্যান্টিলিয়ার বাড়ি যেন সবদিক থেকেই লাগজারিতে পরিপূর্ণ। কিন্তু সেই বাড়িতে নেই কোন এসি বা ফ্যান। তারপরেও কেন ৭০ লাখ টাকা বিল আসে জানেন?

বলা হয় মুকেশ অম্বানির বাড়িতে যে দেয়াল রয়েছে সেগুলো এমন ইউনিক ডিজাইনে বানানো যে, সেগুলো আমার-আপনার বাড়ির নর্মাল দেওয়ালের মত নয়। ফলে বাইরে থেকে হাওয়া এসে এই দেওয়ালে প্রবেশ করে। তারপর সেই দেওয়াল থেকে হাওয়া ঠাণ্ডা হয়ে ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। বলা হয়, বাইরে যত গরমই থাকুক না কেন, ঘরের ভেতরে টেম্পারেচার অনেকটাই কম থাকে। সেই ঠাণ্ডা হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে ফ্লোরের সর্বত্র। আর সেই কারণে অ্যান্টিলিয়ায় কোন ফ্যান বা এসির প্রয়োজন পড়ে না। তবে এসবের মধ্যেও আলাদা করে বলতে হয় নীতা অম্বানির বাথরুমের কথা। সেই বাথরুমের অনেক কিছুই নাকি স্বয়ংক্রিয়। কম্পিউটারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় টেম্পারেচার, জলের ফ্লো।

তাহলে বুঝলেন তো কেন মুকেশ অম্বানির বিদ্যুতের বিল খরচ পৌঁছে যায় ৭০ লাখ টাকায়, তাও আবার প্রতি মাসে! আজকের প্রতিবেদন নিয়ে আপনাদের কী মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ।

জীবন হোক অর্থবহ