Trending

লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ইতিমধ্যেই সকলে জেনে গিয়েছি। বিজেপির বিজয়রথ থেমেছে ২৭০ এর আগেই। সরকার গঠনের জন্য তাই চন্দ্রবাবু নাইডু এবং নীতিশ কুমারের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে বিজেপিকে। এনডিএ-র আসন সংখ্যা সবমিলিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৩-তে। অন্যদিকে ইন্ডিয়া জোটের বিজয়রথ থেমেছে ২৩২ আসনে। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নি। অর্থাৎ এই লোকসভা নির্বাচনে যেমন বহু প্রার্থী জিতেছেন, তেমন আবার অনেকেই হেরেছেন। তবে যত যাই হোক, সক্রিয় রাজনীতিতে যারা আসছেন তাঁরা অনেকেই সাংসদ হবার লক্ষ্য রাখেন। অন্য পেশা থেকে ইদানিং রাজনীতিতে আসার প্রবণতা বেড়েছে। পলিটিক্যাল কেরিয়ারকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য। তাই আসুন আজ আমরা জেনে নিই একজন সাংসদ বছরভর কত টাকা বেতন পেয়ে থাকেন? বাড়ি, গাড়ি আর কী কী সুবিধে তিনি পান।
একজন সাংসদ মাসে বেতন পেয়ে থাকেন ১ লক্ষ টাকা। আগে এই বেতনের অঙ্ক অনেকটাই কম ছিল। তবে বছর কয়েক হল এই অঙ্কটা বেড়ে লাখে পৌঁছে গিয়েছে। বেতন বাড়ানো হয় ২০১৮ সালে। দেশের সাংসদদের এই বেতন বৃদ্ধি পাবার কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল মূল্যবৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতির মত ইস্যু। তাকে সামাল দিতেই সাংসদদের বেতন বাড়িয়ে করা হয়েছিল ১ লক্ষ টাকা।
বেতন ছাড়া সাংসদরা একাধিক ভাতা পেয়ে থাকেন। লোকসভার সাংসদ যারা হয়ে থাকেন, তাঁরা প্রতি মাসে পেয়ে থাকেন ৭০ হাজার টাকা ভাতা। এই ভাতা দেওয়া হয় নির্দিষ্ট সাংসদের যে সংসদীয় এলাকা রয়েছে সেখানে পরিষেবা দেবার জন্য। সাংসদ দফতরের কাজ কী? নির্দিষ্ট দফতরে যাতে সাধারণ মানুষের সুবিধে, অসুবিধে সবটুকু শুনে পরিষেবা দিয়ে যাওয়া যাতে সাধারণ মানুষের ন্যুনতম কোন অসুবিধা না হয়। তাই প্রয়োজন পড়ে নিজের একটি দফতর খোলার। দফতর খুলে সেখানে কর্মীদের নিয়োগ করে বেতন দেওয়ার জন্য এই টাকা বরাদ্দ করা হয়।
এটা ছাড়াও একজন সাংসদ প্রতিমাসে শুধু দফতর চালানোর জন্য মাসে ৬০ হাজার টাকা ভাতা পেয়ে থাকেন। এই টাকা দিয়েও তিনি নিজের দফতরে নিয়োজিত কর্মীদের বেতন দেবার কাজটি করতে পারবেন। এই কর্মীরা কোন ধরণের কাজ করেন? সাংসদের অনুপস্থিতিতে ফোন ধরা, দফতরকে সবদিক থেকে সচল রাখার মত সব ধরণের কাজ করে থাকেন এই কর্মীরা।
দাঁড়ান দাঁড়ান। সংসদে যখন অধিবেশন চলে তখন সাংসদদের সেখানে উপস্থিত থাকতে হয়। এমনকি স্থায়ী কমিটির বৈঠক হলেও সাংসদরা সেখানে উপস্থিত থাকেন। তার জন্য সাংসদদের প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এই টাকা দেওয়া হয় থাকা, খাওয়া প্রতিদিনের খরচা চালানোর জন্য। এটা তো গেল বেতন, ভাতার কথা। এবার আসি পরিবহনে।
একজন সাংসদ বছরে ৩৪ বার বিনামূল্যে প্লেনে ট্র্যাভেল করতে পারবেন। ট্র্যাভেল করার সময় সাংসদের সঙ্গে থাকতে পারেন তাঁর কাছের আত্মীয়রা। সেক্ষেত্রেও কোন টাকা লাগে না। যদি ট্রেনে ট্র্যাভেল করেন, তাহলে বছরভর বিনামূল্যে ট্রেনে ট্র্যাভেল করতে পারবেন। মিলবে প্রথম শ্রেণির কোচ। ব্যক্তিগত কাজে গেলেও যেমন বিনামূল্যে যেতে পারবেন। অর্থাৎ ট্রেনে করে বছরের যে কোন সময় যে কোন দিন একজন সাংসদ বিনামূল্যে এদিকে ওদিকে যেতে পারবেন। নিজের সংসদীয় এলাকায় যদি গাড়ি নিয়ে ঘোরেন, তাহলে জ্বালানির খরচ সাংসদকে দিতে হয় না। সেই টাকা দিয়ে দেওয়া হয় সাংসদকে।
সংসদে থাকার জন্য সাংসদকে থাকতে হয় দিল্লিতে। একেবারে অভিজাত এলাকায় সাংসদের জন্য বাংলো বাড়ি দেওয়া হয়। পাঁচ বছরের জন্য সেই বাড়ি তিনি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এখানে একটা ব্যপার রয়েছে। সাংসদ কতবার সাংসদ হয়েছেন তার ওপর নির্ভর করে বাংলো বাড়ির আকার এবং অবস্থান। যিনি প্রথম সাংসদ হয়েছেন তাঁর বাড়ির আকার অপেক্ষাকৃত ছোট হয় যিনি একাধিকবার সাংসদ হয়েছেন তাঁর বাড়ির আকার থেকে। দিল্লির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় থাকেন সিনিয়র মোস্ট সাংসদরা। আর যারা সরকারি বাংলো বা হোস্টেলে থাকতে চান না তাঁরা মাসে ২ লক্ষ টাকা বাড়িভাড়া পেয়ে থাকেন।
এবার আসি চিকিৎসা ক্ষেত্রে। সাংসদ এবং তাঁর নিকটাত্মীয়দের জন্য সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে চিকিৎসা মেলে। বিনামূল্যে চিকিৎসা মিলতে পারে দেশের যে কোন সরকারি হাসপাতালে এবং নির্দিষ্ট কিছু বেসরকারি হাসপাতালে।
শুধু ফোনের খরচ যদি ধরতে হয়, একজন সাংসদ বছরে দেড় লক্ষ টাকা পেয়ে থাকেন এই খরচ মেটানোর জন্য। এছাড়া বাড়িতে এবং নিজের দফতরে কাজের সুবিধের জন্য সাংসদ পেয়ে থাকেন হাই স্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা। সাংসদরা বছরে ৫০ হাজার ইউনিট বিনামূল্যে বিদ্যুৎ পেয়ে থাকেন। এছাড়া সাংসদরা বছরে চার হাজার কিলোলিটার জল পেয়ে থাকেন।
আর যে সকল সাংসদদের মেয়াদ ফুরিয়ে যায়, তাঁরা পেনশন হিসেবে পেয়ে থাকেন মাসে ২৫ হাজার টাকা।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ