Trending
দুটি পাতা, একটি কুঁড়ির ম্যাজিকে, মন্ত্রমুগ্ধ বাঙালি। আসলে বাঙালির সাথে চায়ের সম্পর্কটা অনেকটা একে ওপরের পরিপূরকের মত। তা সে লেমন টি, গ্রিন টি, মিল্ক টি বা ক্যামমেল টি- যাই হোক না কেন! চায়ের কোন রিপ্লেসমেন্ট হয় না। কিন্তু তাই বলে মুনলাইট টি? হ্যাঁ। ঠিকই শুনছেন। বাঙালির চায়ের জগতের নতুন অতিথি, ডুয়ার্সের এই মুনলাইট টি। চেখে দেখলে, আপনিও কিন্তু সুগন্ধি এই মুনলাইট টি-এর ফ্যান হয়ে যাবেন।
রাতের অন্ধকারে পূর্ণিমার চাঁদকে সাক্ষী রেখে একেবারে উৎসবের আমেজে এই বিশেষ চা পাতা তোলেন শ্রমিকরা। যেহেতু পূর্ণিমার চাঁদ সাক্ষী থাকে এই মুহূর্তের, তাই এই প্রসেসটার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ফুল মুন প্লাকিং’। বছরের পাঁচটা ফুল মুনে এই চা পাতা তুলতে রীতিমত ব্যাস্ত থাকেন স্থানীয় চা শ্রমিকরা। যার সূত্রপাত হয় পবিত্র দোল পূর্ণিমার পুণ্য তিথিতে। চাঁদের স্নিগ্ধ জ্যোৎস্নায় ডুবে থাকা বাগান থেকে একটা একটা করে চা পাতা তোলেন তারা। গত বছরের মত এবছরেও ডুয়ার্সের মাঝেরডাবরি চা বাগানের প্রায় ৬.২৩ হেক্টর জমিতে উৎসবের মেজাজে চলল এই ‘ফুল মুন প্লাকিং’। কেন?
রাতের অন্ধকারে এই বিশেষ চা পাতা তোলা হয় বলে চায়ের বিশেষ ফ্লেভরটা অ্যাকটিভেটেড অবস্থায় থাকে। এছাড়াও এই ফুল মুন চায়ের স্পেশ্যালিটিটা কি? শুনুন
উৎসবের মেজাজে এই মুনলাইট টি প্লাকিং-এর প্রিপারেশন চলে ফুল মুনের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই। শ্রমিকদের সুরক্ষার কথা ভেবে বাগান পরিষ্কার করেন মাঝেরডাবরি চা বাগান কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র চাঁদের আলোয় যাতে শ্রমিকদের কোন অসুবিধে না হয়, সেজন্য ব্যবস্থা করা হয় মশালের। কোথাও আবার আলোর ব্যবস্থাও আছে।
দামে এবং গুণে বেশ এক্সপেন্সিভ এই বিশেষ চা। বাজারমূল্যেও অন্যান্য চায়ের থেকে খানিকটা এগিয়েই আছে বলা যেতে পারে।
একবার ভাবুন, এই নিঃশব্দ রাত্রির দেশে,পাহাড়ের নীরবতা উপভোগ করতে করতে এই বিশেষ অ্যারোমাযুক্ত চায়ের ধোঁওয়া ওঠা একটা কাপ আপনার হাতে। কে বলতে পারে সুগন্ধি চায়ের প্রেমে পরে অজান্তেই হয়তো গেয়ে উঠলেন – “ এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই”।
অভিজিৎ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার