Market
ঘরের টাকা পাচার করা হচ্ছে বিদেশে। অঙ্কটা যে কারুর মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আর সেটাই যত দিন যাচ্ছে, ততই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের জন্য। একটি তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করার অঙ্কটা দাঁড়িয়েছে ৫৯০ কোটি ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবেদনটি তুলে ধরে মার্কিনী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিনানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি। সেই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যা ব্যবসা-বাণিজ্য হচ্ছে তার ২০ শতাংশ টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। স্বাভাবিকভাবেই যা একটা দেশের অর্থনীতির জন্য যথেষ্ট অ্যালার্মিং। কিন্তু কেন এই টাকা পাচার করা হচ্ছে, টাকা পাচারের দিক থেকে ভারত নিজে কতটা কঠিন মনোভাব ধরে রাখতে পেরেছে, জানতে হলে প্রতিবেদনটি দেখুন পুরোটা।
বিশ্বে টাকা পাচারের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে লাতিন আমেরিকা। মেক্সিকো থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা পাচারের খবর শুনতে পাওয়া যায়। সূত্রের খবর, মেক্সিকো থেকে পাচার হওয়া টাকার পরিমাণ ৪ হাজার ২৯০ কোটি ডলার। অন্যদিকে মেক্সিকোর পরে যে দেশটি থেকে সবচেয়ে টাকা পাচার হয়েছে তার নাম মালয়েশিয়া, এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। এই দেশটি থেকে টাকা পাচার করা হয়েছে ২ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। একটি তথ্য বলছে, টাকা পাচারের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে টাকা পাচার করার ছবিটা যত দিন যাচ্ছে ততই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। মনে করা হচ্ছে, এই সকল দেশগুলো থেকে টাকা পাচার করার অঙ্কটা ছুঁয়েছে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের গণ্ডি। টাকার অঙ্কে বিচার করলে দাঁড়ায় প্রায় ৯০ লক্ষ কোটি টাকা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে এই পাচার করা অর্থ? জানা যাচ্ছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সহ আমেরিকা, কানাডায় এই টাকা পাচার করে দেওয়া হচ্ছে। আর এই গোটা কর্মকাণ্ডের পিছনে রয়েছে সমাজের প্রভাবশালী মাথারা। কিন্তু কেন বাড়ছে টাকা পাচার? অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বেসরকারি ক্ষেত্রে ক্রমশই বিনিয়োগের জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতি। এদিকে আমদানি করার অঙ্কটা যত দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে। সেই অনুযায়ী কতটুকুই বা রফতানি করা হচ্ছে? ফলে একদিকে শিল্পক্ষেত্রে যখন বিনিয়োগ কম, তখন আমদানি খাতে খরচ হয়ে যাচ্ছে বেশি। ফলে টাকা বাইরে যাওয়ার রাস্তাটাও অনেকটা মসৃণ হয়েছে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভাগ্যে এ যেন বড় ধরণের ফাঁড়া। এখন কিভাবে বাংলাদেশ সরকার টাকা পাচার আটকাতে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে, সেটাই দেখার।