Market
ফলের রাজা আম। বাংলায় বৈশাখ এসে গেলেই আমের চাহিদা বৃদ্ধি পায় গোটা বাংলা জুড়ে। স্বাভাবিকভাবেই, গোটা রাজ্য জুড়ে আম চাষি থেকে আম ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা দেখলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয়। ছোট, বড় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পাইকারি বাজারে গিয়ে আম ব্যবসাকে চাঙ্গা করে তোলেন।
ফুলিয়ার আমের হাটে প্রতিবছরের মতন এই বছরেও ব্যস্ততা পৌঁছে গিয়েছে চরমে। ফুলিয়ার এই হাট বসে একেবারে ফুলিয়া স্টেশনের পাশেই। মোটামুটিভাবে শান্তিপুর এবং তার আশেপাশের এলাকায় যত আমের ফলন হয় তার অধিকাংশটাই বিক্রির জন্য আসে ফুলিয়ার এই হাটে। এখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। কলকাতা, নৈহাটি, কৃষ্ণনগর ও আশপাশ এলাকার আম ব্যবসায়ীরা এই হাট থেকে পাকা আম কিনে ব্যবসা পরিচালনা করেন। আবার ব্যবসায়ীরা কখনও কলকাতা, আবার কখনও বা আশেপাশের এলাকা থেকে এই ফুলিয়া স্টেশনে নেমে পড়ে চলে আসেন এই আমের হাটে। সেই ব্যস্ততার সুর ধরা পড়েছে এই বছরেও। যদিও এই বছর ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ চাহিদা মেটাতে পারেনি আমের ফলন। ব্যস্ততার সঙ্গে ব্যবসায় ভাটার টান যে এই বছর আম ব্যবসায়ীরা ভালোরকম টের পেয়েছেন, সেটা ধরা পড়ল সরাসরি বিজনেস প্রাইম নিউজের ক্যামেরায় ফুলিয়ার আমের হাট থেকে।
ফুলিয়ার আমের হাটে নামলে নজরে পড়বে শুধু আমের ঝুড়ি। কখনো ট্রেনে, তো কখনো ছোট গাড়ি করে এই আম পৌঁছে যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু এবার ফলন কম হওয়ায় আমের দাম চড়া। ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকার নিচে কোন আম নেই। স্বাভাবিকভাবেই, আমের মরশুমে আম কেনার চাহিদা অনেকটা কমে আসার কারণে, সেই প্রভাব পড়েছে আম ব্যবসায়ীদের ওপরেও। ফলে ব্যবসার রমরমা যে অন্যান্য বছরের মতন এই বছরে একটু কম, সেই কথা স্বীকার করলেন আরেক ব্যবসায়ী সাজেদ আলী।
সাধারণত বাগান লিজ নিয়ে চাষ করা হয় আম। দুই বছরের জন্য লক্ষাধিক টাকা খরচ করে একেকটা আমের বাগান লিজ নেন চাষিরা। এছাড়া ওষুধ খরচ একটা বড় খরচ। রয়েছে পেপার, কার্বাইডের মতন আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ। এরপর বাজার পর্যন্ত নিয়ে আসা। তারপর ব্যবসা হয়ে গেলে আড়তদারকে দিতে হয় কিছুটা। সবমিলিয়ে আমের ব্যবসা প্রতি বছরই চাঙ্গা থাকে ফুলিয়ার হাটে। কলকাতা থেকেও প্রতিদিন আম ব্যবসায়ীরা আসেন এই হাটে। দিনে একেকজন ব্যবসায়ী ২০-৩০ টা ঝুড়ি কিনে নিয়ে যান। হিমসাগর, ল্যাংরা আমের অঢেল ফলন প্রতি বছর ফুলিয়ার হাটকে ভালোরকম অক্সিজেন দেয়। ফুলিয়া স্টেশনকে কেন্দ্র করেই চলতে থাকে মহাযজ্ঞ। যার মধ্যমণি এই হিমসাগর বা ল্যাংরা। এই বছরেও সেই চাহিদায় পড়েনি ভাটা। কিন্তু ফলন কম। তাই চড়া দামে বিক্রি করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই আম ব্যবসায়ীদের। সেই ব্যস্ততাই বিজনেস প্রাইম নিউজের ক্যামেরায় এবার ধরা পড়ল ফুলিয়ার আম হাটে।