Daily
বাঙালির উৎসব তো সারাবছরের। বিশ্বকর্মা পুজো, দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো… আরও কত কি। আর পুজো মানেই চাঁদমালা মাস্ট। প্রতিমার পুজো হবে, অথচ তার হাতে চাঁদমালা থাকবে না, এমনটা আবার হয় নাকি! বাংলাজুড়ে চাঁদমালার ডিম্যান্ড সারাবছরের। আর এখন তো বাঙালির সবচেয়ে বড় পুজো। তাই বেছে বেছে বেস্ট চাঁদমালাটাই চাই। তা এত চাঁদমালা আসে কোথা থেকে? জানেন? পুজোর চাঁদমালা যোগানের এপিসেন্টার খুঁজতে বিজনেস প্রাইম নিউজ পৌঁছে গিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগণা জেলার অশোকনগরের কল্যাণগর পৌর এলাকায়। এটিই বাংলার সবচেয়ে বড় চাঁদমালা সরবরাহ ক্ষেত্র।
এখানকার প্রায় ১০০-১৫০ টি পরিবার এই চাঁদমালা তৈরির সঙ্গে যুক্ত। আর প্রায় ২০০০ এর বেশি কর্মচারী রয়েছেন এই কাজের সঙ্গে। এখানকার মহিলারা দশভুজা। একা হাতে সংসার সামলান আবার চাঁদমালাও তৈরি করেন। প্রখ্যাত চাঁদমালা শিল্পী সঞ্জয় বিশ্বাস আমাদের জানালেন, কীভাবে এই চাঁদমালার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে এখানকার অর্থনীতি।
দেখার মত সব চাঁদমালা তৈরি করেন এখানকার শিল্পীরা। এখন পুজোর সময়। তাই চাহিদাও প্রচুর। তাই দিনরাত এক করে এই কাজেই ব্যস্ত সকলে। কিন্তু এত ব্যস্ততার মধ্যেও কেমন যেন বিষণ্ণ হয়ে রয়েছেন শিল্পীরা। কিন্তু কেন?
একে মূল্যবৃদ্ধি, তার উপর করোনার আফটার এফেক্ট, দুটোর চাপে পড়ে ঠিকঠাক অক্সিজেন পাচ্ছেন না চাঁদমালা শিল্পীরা। অথচ দারুন ডিম্যান্ড রয়েছে এই চাঁদমালার। পশ্চিমবঙ্গে তো বটেই, এর পাশাপাশি দিল্লি, মহারাষ্ট্রেও এখানকার চাঁদমালার ভালোরকম ডিম্যান্ড রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকায় ধাক্কা খাচ্ছেন চাঁদমালা শিল্পীরা।
ভবিষ্যতে তাদের অনেক বড় পরিকল্পনা আছে বলে জানালেন এখানকার শিল্পীরা। তাই তারা পাশে চাইছেন সরকারকে। ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা ভেবে সরকার যদি এখন শিল্পীদের পাশে দাঁড়ান তাহলে দিন ফিরবে শিল্পীদের। এমনটাই জানালেন শিল্পী সঞ্জয় বিশ্বাস।
গত দুবছর শেষে এবারের পুজো যেন একটু অন্যরকম। পরিচিত ভিড়, ব্যস্ততা, আর ব্যবসায় জোয়ার আশার প্রত্যাশা। চাঁদমালা শিল্পীরাও ঘুরে দাঁড়াতে চান, শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে তাই সরকারকে পাশে চান। এখন সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায় কি না, সেটাই দেখার।
সুব্রত সরকার
অশোকনগর