Daily
রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপুল সমর্থনের অক্সিজেনে তৃতীয়বারের জন্য নবান্নের নীল কুর্সিতে বসলেও থেকে গিয়েছে অনেকগুলি কাঁটা।
মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের জয়ের পথে এই কাঁটাগুলি তাঁকে বিড়ম্বনায় ফেলবে কিনা আর সেই বিড়ম্বনা থেকে তিনি কিভাবে বেরিয়ে এসে রাজ্যকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন সেটাই এখন আর্থিক বিশেষজ্ঞদের জোর জল্পনার বিষয়।
বিগত দুটি টার্মে মমতার সরকারকে বিরোধী দলগুলি ও আর্থিক বিশ্লেষকেরা একে মেলা খেলার সরকার বলে তুলনা করেছেন। রয়ে গিয়েছে রাজকোষের বিপুল ঘাটতি। এই বিপুল ঘাটতির মধ্যেই তৃতীয়বারের জন্য নবান্ন দখল করে তাঁরই চালু করা বিভিন্ন প্রকল্প কিভাবে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করবে সেটাই এখন মা মাটি সরকারের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ।
আম্ফান পুনর্বাসন থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, রাজ্যে সকলের জন্য ভ্যাকসিন, স্বাস্থ্য সাথী, সবুজ সাথী, খাদ্য সাথী, রুপশ্রী, কন্যাশ্রীর মত একের পর এক জনমোহিনী কর্মসূচি তাঁকে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে যে বসিয়েছে, তা বিশ্লেষকেরা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু সেইসঙ্গে তাঁরা এ প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছেন, রাজ্যের সীমিত আর্থিক ক্ষমতায় মুখ্যমন্ত্রী কিভাবে আগামীতে তাঁর স্বপ্নের সোনালী কর্মসূচিগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন? একদিকে, কেন্দ্রের ঘরে বকেয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ এখনো রাজ্যের রাজকোষে ঢোকেনি। উল্টে ৮ দফা নির্বাচনে রাজ্যের রাজকোষ থেকে ব্যয় হয়ে গিয়েছে কমবেশি ১৪০০ কোটি টাকা। স্বভাবতই, অতিমারির এই দ্বিতীয় ঢেউতে রাজ্য সরকার বা মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্প গুলিতে কিভাবে নগদের জোগান অব্যাহত রাখবেন সেটাই বড় প্রশ্ন।
কেন্দ্রীয় সরকার কতটা হৃদয় দিয়ে তার সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের পাশে দাঁড়াবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। নির্বাচনের আগে যে পরিমাণ ভ্যাকসিনের যোগান রাজ্যের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ছিল নির্বাচনের পরে সেখানেই দেখা দিয়েছে প্রচন্ড সংকট। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্য না করলে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসবেন। ধর্নায় বসলে কি রাজ্যবাসীর সমস্যার সমাধান হবে? এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অর্থনীতিবিদেরা।
সব দিক থেকে বিচার করলে জনমোহিনী প্রকল্পের অর্থ কোথা থেকে আসবে আর কীভাবেই বা মুখ্যমন্ত্রী সেই অর্থ যোগান দিয়ে এগিয়ে বাংলার স্লোগানকে মেলে ধরবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।।
ব্যুরো রিপোর্ট