Daily
রাজ্যের শিল্পে বিনিয়োগ টানতে এবার নিজের হাতেই রাশ তুলে নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৈরি করলেন নতুন শিল্প উন্নয়ন পর্ষদ। সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সীলমোহর পড়ল ওয়েস্টবেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন বোর্ড তৈরীর সিদ্ধান্তে।
বিগত দশ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা বারবার অভিযোগ জানিয়ে আসছিল শিল্পে রাজ্যে ক্রমবর্ধমান খরার প্রসঙ্গে। তাই তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, শিল্পের ব্যাপারে এবার তিনি কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে চলেছেন। সেই পদক্ষেপে এবার বাস্তব রূপ পেল নতুন বোর্ড তৈরি সিদ্ধান্তে।
সেই বাম আমল থেকে দ্বিতীয় তৃণমূল সরকার পর্যন্ত এ রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগের বিষয়ে শিল্পপতিদের অনীহা ছিল বিরোধীদের হাতিয়ার। বেশিরভাগ শিল্পপতিদের বক্তব্য ছিল, পশ্চিমবঙ্গে শিল্পে বিনিয়োগের যেমন উপযুক্ত পরিবেশ নেই, তেমনি নেই চটজলদি কাগজপত্রে সরকারি ছাড়পত্রের ব্যবস্থা। এইবার শিল্পপতিদের রাজ্যে বিনিয়োগের আকর্ষণ বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী আটটি দপ্তরকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে গঠন করলেন এই নতুন শিল্প উন্নয়ন পর্ষদ।
আসুন দেখে নেওয়া যাক নতুন এই ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন বোর্ডের গঠন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রমোশন বোর্ড বা পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন পর্ষদ তৈরি হবে
• অর্থ, শিল্প, ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, বস্ত্র, পর্যটন, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরগুলিকে নিয়ে।
এবার দেখে নেওয়া যাক কারা কারা সদস্য হবেন এই বোর্ডের
• শিল্পোন্নয়ন নিগম, শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম, এবং মুখ্য সচিবকে নিয়ে এই পর্ষদ বা বোর্ড তৈরি হবে। এছাড়াও আটটি দপ্তরের সচিবরা এই নতুন বোর্ডের সদস্য হবেন। শিল্পসচিব হবেন এই নতুন বোর্ডের আহবায়ক।
• এই বোর্ডের শীর্ষে থাকবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোর্ড নিয়মিত বসবে, আলাপ-আলোচনা করবে বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে।
তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের শিল্পের মরা গাঙ- এ জোয়ার আনতে যে মরিয়া এই নতুন শিল্প উন্নয়ন বোর্ড তার সবথেকে বড় প্রমাণ।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু এই নতুন বোর্ড বা পর্ষদের মাথায় থাকছেন তাই শিল্প সংক্রান্ত কোন প্রস্তাব আর অযথা দফতরগুলির হয়রানির শিকার হবে না। প্রকৃত অর্থেই, রাজ্যের শিল্পের মানচিত্রে এখন থেকে তৈরি হল এক জানালা নীতি।
কোন শিল্পপতি যাতে অকারণে হয়রানির শিকার না হন সেটাও যেমন এই নতুন বোর্ডের নজরে থাকবে তেমনি রাজ্যের জেলায় জেলায় কোন শিল্পপতি যাতে শাসকদলের রোষানলে না পড়েন এবার থেকে সেটাও দেখবে এই নতুন বোর্ড। নতুন বোর্ডের নতুন দিশা যে অচিরেই রাজ্যের শিল্প মানচিত্রকে বদলে দেবে এমনটাই আশা করছেন রাজ্যের বণিকসভার সদস্যরা।
ব্যুরো রিপোর্ট, বিজনেস প্রাইম নিউজ।