Daily
রাজ্যে বিশ্বকর্মা পুজোর আগেই শিল্প সংক্রান্ত নীতিতে বড়োসড়ো পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার।
শিল্প সংক্রান্ত নতুন নীতিতে রাজ্যে যেমন শিল্পে বিনিয়োগের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে তেমনি উজ্জ্বল হবে রাজ্যে কর্মসংস্থানের মানচিত্রও। এমনটাই আশা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
তৃতীয়বার রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পর মুখ্যমন্ত্রী ক্রমশ স্পষ্ট করছিলেন শিল্প নিয়ে তাঁর সরকারের ভাবনাচিন্তা। মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনাচিন্তায় সীলমোহর পড়ল গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে। পাশ হলো বেসরকারি শিল্পতালুক গড়ার নতুন নীতি।
পানাগড়ে সরকারি শিল্প তালুকে একের পর এক কলকারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাজ্যে তৈরি করবেন একাধিক বেসরকারি শিল্পতালুক। ২০১৪ সালের তৈরি বেসরকারি শিল্পতালুক আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে নতুন করে রাজ্যে শিল্পায়নের পালে আরো একটু অক্সিজেন জোগাতে, প্রয়োজনীয় লগ্নি টানতে উদ্যোগী হলেন রাজ্য সরকার।
বেসরকারি শিল্পতালুক গড়তে হলে এতদিন উদ্যোগপতিকে জোগাড় করতে হত ২০ একর জমি। এখন থেকে ২০ একরের পরিবর্তে কলকাতা পুরসভা, দুই ২৪ পরগনায় ও হাওড়ায় ৫ একর জমি থাকলেই শিল্পপতি করতে পারবেন তাঁর নিজস্ব বেসরকারি শিল্পতালুক।
আগে বেসরকারি শিল্প তালুকের ক্ষেত্রে শিল্পপতিদের সম্প্রসারণের কোন সুযোগ না থাকলেও এখন থেকে শিল্পপতিরা তাঁর শিল্পতালুক সম্প্রসারিত করতে পারবেন মর্জি মাফিক। সে ক্ষেত্রে অবশ্য থাকছে কিছুটা পরিমাণ জমির শর্ত।
পুরনো আইনে গুদাম ঘর বা লজিস্টিক হাব তৈরির সম্ভাবনা শিল্পপতিদের ছিল না। কিন্তু নতুন আইনে এগুলির পাশাপাশি হিমঘরকেও শিল্প তালুকের আওতায় এনে দিয়েছেন রাজ্য সরকার।
পুরনো আইনে নির্দিষ্ট পরিমান কাজ শেষের পরেই মিলত বিশেষ সহকারী ছাড় বা ইনসেন্টিভের সুবিধা। কিন্তু নতুন আইনে তিনটি কিস্তিতে শিল্পপতিরা যথাক্রমে ২০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ এমনকি ৫০ শতাংশ হারে সরকারি ছাড়ের সুবিধা পাবেন।
সরকারি ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ দপ্তরের অধীনে তৈরি করা হয়েছে শিল্পপতিদের জন্য এক জানালা নীতি। কোন একজন শিল্পপতি এই দপ্তর থেকেই পাবেন শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরের ছাড়পত্র।
রাজ্য সরকার ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্যে মোট ১০০ টি বেসরকারি শিল্পতালুক গড়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন। শিল্পতালুক আইনে পরিবর্তন নিয়ে আসায় বেসরকারি শিল্পপতিদের সামনে তৈরি হলো প্রচুর সম্ভাবনা।
বেসরকারি শিল্পতালুক রাজ্যে যত বেশি করে গড়ে উঠবে ততই বদলাতে থাকবে রাজ্যে শিল্পায়নের মানচিত্র। একইসঙ্গে এই শিল্প তালুকে রাজ্য সরকার পোল্ট্রি উৎপাদন এবং মৎস্য উৎপাদনেও জোর দেওয়ায় রাজ্যে কৃষিভিত্তিক শিল্পের সামনে তৈরি হলো প্রচুর সম্ভাবনা। আর এই সম্ভাবনা ভিতরেই লুকিয়ে রয়েছে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ।
রাজ্যের শিল্পপতিরা এখন কিভাবে রাজ্য সরকারের সাহায্যকে বাস্তবায়িত করতে পারবেন সেটাই এখন দেখার।
ব্যুরো রিপোর্ট
বিজনেস প্রাইম নিউজ