Daily
একুশ সালের শহীদ দিবসে এই প্রথম ভার্চুয়ালি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের স্ক্রিনের সামনে বসিয়ে ২১ দিক থেকে মোদি সরকারকে তুলোধোনা করে শহীদ দিবস পালন করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শরদ পাওয়ার থেকে পি চিদাম্বরম। বিরোধী শিবসেনা থেকে জয়া বচ্চন। সবাইকে একজোট করে ভার্চুয়ালি ২০২৪ এর মোদি বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজ শুরু করে দিলেন আজকের শহীদ দিবসের ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কৃষি থেকে শিল্প। বাণিজ্য থেকে ভ্যাকসিন। ওষুধ থেকে রেশন। তুলে আনলেন আম আদমির দিনগুজরানের নিত্য ইস্যুগুলোকে একের পর এক।
আরো একবার মনে করিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদির হাতে পড়ে ভারতীয় অর্থনীতির শোচনীয় দশাটাকে।
বেকারি থেকে মূল্যবৃদ্ধি। জ্বালানি থেকে রান্নার গ্যাস। দেশবাসীর জীবনযাপনের প্রতিটি দিক কিভাবে মোদী জমানায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে সে কথাও তুলে ধরলেন ভারতের সামনে তৃণমূল নেত্রী সর্বভারতীয় প্লাটফর্মে ভার্চুয়ালি।
মনে করিয়ে দিলেন ভারতের ঐতিহ্য। মনে করিয়ে দিলেন সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকারগুলিকে। প্রশ্ন তুললেন, পেট্রোল-ডিজেলের থেকে আয় হওয়া অর্থ কি কেন্দ্রীয় সরকার গোপনে আড়ি পাততে ব্যবহার করেছেন? প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের কাছে। বিচারপতিরা কি পারেন না স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে?
পরিকল্পনাবিহীন লকডাউনে কিভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে পরিযায়ীদের জীবন জীবিকা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে দেশবাসী দেখেছে মৃত্যু মিছিল। কি করেছে কেন্দ্র? এমন প্রশ্ন তুললেও বিঁধলেন বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারকে।
দাবি করলেন, কেন্দ্র থেকে যদি এখনই মোদি সরকারকে গদিচ্যুত না করা যায় তাহলে আগামীতে ভারতবর্ষে গণতন্ত্র নামক বিষয়টি আদৌ থাকবে কি? অর্থনীতির নীতি সমাজে কাদের স্বার্থ রক্ষা করছে সে প্রশ্ন এদিন তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবেদন করলেন সর্বভারতীয় বিরোধী নেতৃত্বের কাছে, যেন অবিলম্বে তৈরি করা হয় মোদি বিরোধী সর্বভারতীয় মঞ্চ।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে গোটা ভারতের নজর ছিল বাংলার বিকে। সেই বাংলায় মোদির বিজয়রথ আটকে দিয়ে বাংলার মানুষ যে মোদিকে উচিত শিক্ষা দিয়েছেন সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিতে ভোলেননি তৃণমূল নেত্রী এদিনের সভায় থেকে।
দেশে আজকে প্রধান সমস্যা করোনা পরবর্তী সময়ে থমকে যাওয়া অর্থনীতির পালে আবার হাওয়ার সঞ্চার করা। তবে কেন্দ্রে এই সরকার থাকলে মানুষের জীবন-জীবিকা সবই সংকটের মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খুব শিগগিরই মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন। দেখা করবেন দেশের বিভিন্ন মোদি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে। সেখান থেকেই শুরু হবে ২০২৪ এর অপারেশন মোদি আউটের সূচনা।
তবে করোনা, মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রোল-ডিজেলের ক্রমবর্ধমান দাম সব নিয়ে চলতি বাদল অধিবেশনে যেভাবে অস্বস্তিতে পড়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার সেখানে আজকের শহীদ দিবসের মমতার সর্বভারতীয় বার্তা মোদির চলার পথে যে আরও বেশকিছু কাঁটা বিছিয়ে দিল সে বিষয়ে বেশিরভাগ রাজনৈতিক বিশ্লেষক সহমত পোষণ করেছেন।
ব্যুরো রিপোর্ট, বিজনেস প্রাইম নিউজ