Trending
কোচবিহারে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হলেও দিন শেষে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। এবার সেই তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়েই নিজের পলিটিক্যাল কেরিয়ারকে মসৃণ করতে চাইছেন অনন্ত মহারাজ! বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। কিন্তু এই মুহূর্তে অনন্ত মহারাজের যা মতিগতি তা দেখে মনে হচ্ছে না, খুব বেশিদিন আর অনন্ত মহারাজকে হাতে পদ্ম ফুল ধরে থাকতে দেখা যাবে। তবে আজ যে টানটান উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেল কোচবিহারে তারপর বিজেপি যে অনন্ত মহারাজের ব্যবহারকে খুব একটা সোজা চোখে দেখবে না সেটা বলাই যায়। কেন? তিনি বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। এদিকে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি পৌঁছয় চকচকার দিকে, তখন মমতাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য একেবারে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন অনন্ত মহারাজ। মমতা পৌঁছতেই অনন্ত ছুট দিলেন মহারাজ তারপরই মমতার গলায় পরিয়ে দেন রাজবংশী উত্তরীয় আর সঙ্গে দিলেন রাজবঙ্গশীদের বিখ্যাত গুয়াপান। কিন্তু হঠাৎ কেন মেঘের আড়াল থেকে অকস্মাৎ প্রকাশ্যে মানে আজকের মিডিয়া ট্রেন্ডিং-এ চলে এলেন অনন্ত মহারাজ?
আসলে ২০২২ সালের দিকে তাকাই, তখন দেখতে পাব অনন্ত মহারাজ যে মঞ্চেই দেখা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আবার সেই মঞ্চেই দেখা করেছেন নিশিথ প্রামাণিকের সঙ্গে। তৃণমূলের শীর্ষ মাথারা অনন্তর এই খামখেয়ালি মনোভাবকে ভালোভাবে নেয় নি। তারপরই বিজেপির মাথারা অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠানোর প্রস্তাব রাখেন। বলা হয়, অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠানোর পিছনে অন্যতম কারিগর ছিলেন স্বয়ং নিশীথ প্রামাণিক। মুশকিল হয়, রাজ্যসভার সাংসদে গিয়েও অনন্ত মহারাজের সঙ্গে বিজেপির টিউনিং যে দুর্দান্ত হয়েছিল এমনটা নয়। মাঝেমধ্যেই বেসুরো বাজত অনন্ত-বিজেপির সম্পর্ক। তারপর অবশ্য একটু নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন অনন্ত মহারাজ। এদিকে ধূপগুড়ির আসন বিজেপি অনন্ত মহারাজকে নামিয়ে হাতছাড়া করে ফেলে। ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে তৃণমূল বিজেপির বেলুনটি ফাঁসিয়ে দেয় মানে বিজেপির ধস নামে সেখানে। ফলে বিজেপির সঙ্গে আরও দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় অনন্ত মহারাজের।
আমরা সকলেই জানি যে, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রটি জয় করার জন্য তৃণমূল কোন রকম কসুর করেনি। এদিকে বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি, বারবার বনিবনা না-হবার কারণে বিজেপির সঙ্গে কাজ এবং সম্পর্ক ভোঁতা হবার পুরো ফায়দা নেয় তৃণমূল। ভোট বাক্সে তার প্রতিফলন ঘটে। ঘরে ঘরে জোড়াফুল, বিজেপি প্রায় নির্মূল হয়। হ্যাঁ এটা ঠিক যে কোচবিহারের আসন ধরবার জন্য একেবারে আদাজল খেয়ে নেমে পড়ে তৃণমূল। সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির লড়াইটা যে একেবারে কড়ায় গণ্ডায় হবে সেটা বুঝতেও অসুবিধে হচ্ছিল না। আর দিন শেষে হলও তাই। তৃণমূলের পক্ষে যায় রাজবংশী ভোট, একইসঙ্গে অনন্তের ভোটের প্রতিফলন দেখা যায় তৃণমূলে যেতে। এবার সেই অনন্ত মহারাজের বাড়িতে পৌঁছে গেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তারপরই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি এবার বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ হাওয়াই চটিতে ভরসা রাখছেন? সেটা বলবে সময়। তবে আজ অনন্ত মহারাজের যা হাবভাব দেখা গেল তারপর যে বিজেপিকে সরিয়ে তৃণমূলেই আস্থা রাখছেন তিনি সেটা যেন আরও পরিষ্কার হয়ে গেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আপনারা কি মনে করেন জানান কমেন্ট বক্সে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ