Story
হাতে আর মাত্র কয়েকদিন। বাপের বাড়ি আসছে উমা। গোটা রাজ্য জুড়ে এখন চলছে তারই চূড়ান্ত প্রস্তুতি। আয়োজনের কোনরকম ত্রুটি রাখতে চাইছেন না পুজোর সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা। মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা এখন উঠেছে যেমন চরমে, তেমনি শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন শোলার শিল্পীরা। এই যেমন উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের সাহা পাড়া এলাকার সুনীল মালাকার।
বাপ-ঠাকুরদার আমলের ব্যবসা সুনীলবাবুর। শোলার টোপর, শোলার অলঙ্কারের মত বিভিন্ন জিনিস তৈরি হয়ে আসছে কালিয়াগঞ্জের মালাকার পরিবারে। এখন সেই হাল ধরেছেন সুনীলবাবু। বিগত ৬০ বছর ধরে তিনি তৈরি করছেন এই শোলার অলঙ্কার। সামনে পুজো। তাই ব্যস্ততা পৌঁছে গিয়েছে চরমে। বর্তমানে সুনীল মালাকার এবং তাঁর স্ত্রী মায়া মালাকার একযোগে তৈরি করে চলেছেন শোলার বিভিন্ন কারুকার্য। তবে সারাবছর তেমন ব্যস্ততা না থাকলেও সুনীল মালাকারের ব্যস্ততা সবথেকে চরমে পৌঁছয় বিশ্বকর্মা পুজো থেকে কালীপুজো পর্যন্ত।
তাঁর তৈরি শোলার অলঙ্কার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়। তার মধ্যে অন্যতম হল কাটিহার, কিষাণগঞ্জ, ইসলামপুরের মত বিভিন্ন এলাকা। ষাটের কোটা পেরিয়েছেন বহুদিন। কিন্তু ভাটা পড়েনি উদ্যমে। বছরের পর বছর ধরে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি। কিন্তু এই অলঙ্কার তৈরির কাঁচামাল কোথা থেকে সংগ্রহ করেন সুনীল মালাকার?
সবসময় যে উপার্জন ভালো হয় তা নয়। কোনরকমে চলে যাচ্ছে সংসার। তবে সুনীলবাবু যে শোলার অলঙ্কার তৈরির নেশা থেকে বেরোতে পারেননি। তাই শত কঠিন পরিস্থিতি এলেও কিন্তু শোলার শিল্পই ধরে রেখেছে তাঁর সংসারের হাল। তবে এবারের বাজার বেশ খারাপ। লাভের অঙ্ক এই বছর কমেছে অনেকটাই।
তবে এই ব্যপারে সরকার যথেষ্ট সাহায্য করবে বলে জানালেন জেলার ক্ষুদ্র এবং কুটির শিল্প দফতরের আধিকারিক সুনীল চন্দ্র সরকার। বার্ধক্য ভাতার পাশাপাশি আর কি কি উপায়ে সুনীল বাবুকে সাহায্য করা যায়, সেই বিষয়ে জানালেন তিনি।
সংকুচিত হয়েছে কাজের বাজার। কমেছে বরাত। তবু যেটুকু অর্ডার পেয়েছেন সেটাই নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে শেষ করতে চাইছেন কালিয়াগঞ্জের মালাকার দম্পতি। হাতে আর কতটুকু সময়ই বা রয়েছে?
অনুপ জয়সোয়াল
উত্তর দিনাজপুর