Trending

কথিত আছে, অকালবোধনের সময় সন্ধি তিথিতে দেবী দুর্গাকে ১০৮টি পদ্ম নিবেদন করেছিলেন শ্রীরাম। তাই পদ্ম ফুল ছাড়া দেবীর পুজো অসম্পূর্ণ। প্রতি বছরই পুজোর আগে পদ্মফুলের চাহিদা বাড়ে উত্তরোত্তর। আর পদ্মচাষিরাও অপেক্ষা করে থাকেন এই সময়টার জন্য। কিন্তু এই বছর সব আশায় জল ঢালল অতিবৃষ্টি এবং নিম্নচাপ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট, পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী, তমলুক ব্লক সহ একাধিক এলাকার বহু চাষি পদ্মচাষের সাথে যুক্ত। কেউ দিঘিতে আর কেউ বা খালেতে পদ্মের চাষ করেন। কোলাঘাট ব্লকের নহলা, তাহালা, নারায়ন, পাকুড়িয়া, ভোগপুর এলাকাতেও বহু চাষি পদ্মচাষ করে থাকেন। সারা বছর পদ্মের চাহিদা মোটের উপর থাকলেও দুর্গা পুজোর সময় এই চাষ যেন অনেকটাই চাষিদের মনে আশার আলো জাগিয়ে তোলে। তাই পুজোর একটু আগে থেকেই পদ্ম চাষিরা হিমঘরে রেখে দেন পদ্মফুল। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে আজ পদ্ম চাষের দিঘি বা বাগান চলে গিয়েছে একেবারে জলের তলায়। ফলে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বহু পদ্ম ফুল। স্বাভাবিকভাবেই পুজোর মুখে ঘাটতি দেখা দেবে পদ্মের। ফলে দাম বাড়তে পারে অনেকটাই। কিন্তু তাতেও বা আর কতটুকু লাভের মুখ দেখতে পাবেন তাঁরা?
অতিবৃষ্টি ছাড়াও পদ্মচাষ ব্যহত হতে পারে শিশির পড়লে। শিশির পড়া শুরু হয়ে গেলে তখন পদ্ম ফুল আর সেইভাবে উৎপাদিত হয়না। সবমিলিয়ে তাই পুজোর সময় পদ্মের যে ব্যপক ঘাটতি তৈরি হবে সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন সারা বাংলা ফুলচাষি এবং ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়েক।
তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, পুজোর সময় হয়ত পাইকারি বাজারে একেকটি পদ্মের দাম পৌঁছতে পারে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। হিমঘরে পদ্ম ফুল রাখা হয়। যা প্রাথমিকভাবে পদ্মের জোগানে সাময়িক একটা সুরাহা দিতে পারে। কিন্তু সেখানেও রয়েছে একটা সমস্যা।
পদ্ম ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ। তাই বাংলায় যদি পদ্মের জোগানে ঘাটতি দেখা দেয় তখন অন্যান্য রাজ্য থেকে পদ্ম আনতে হতে পারে। মা এবার আসছেন ঘোটকে। ফিরবেন দোলায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অতিমারির মত দুর্ভোগ নিয়েই এই বছর পুজো করবেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু চাষে যে এত ব্যপক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হল পদ্ম চাষিদের, তার কোন সমাধানের পথ আপাতত পাওয়া গেল না। শুধু মায়ের আশীর্বাদের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে পদ্মচাষিদের।
প্রসূণ ব্যানার্জী
পূর্ব মেদিনীপুর