লোকসভা নির্বাচনী পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছেন বিজেপির প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্র। এদিকে বসিরহাটের সব আলো শুষে নিয়েছেন একা তৃণমূলের হাজি নুরুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রী মোদীর গলা ফাটানো, রেখা পাত্রকে সঙ্গে নিয়ে শুভেন্দুর প্রতিবাদী বৈঠক, সমাবেশ কিছুই কাজে লাগে নি। বরং বিজেপি যেভাবে এতো কিছুর পরেও তৃণমূলের কাছে বড়রকম নাস্তানাবুদ হল তার দায় কে নেবেন? রেখা পাত্রের উপরে সেই দায় চাপানো যাবে না কোনভাবেই। কারণ রেখা পাত্রের রাজনীতিতে হাতেখড়ি এই নির্বাচন থেকেই। তাহলে কি শুভেন্দুর উপরেই সব দায় গিয়ে বর্তায়? কেন এতো কিছুর পরেও রেখা পাত্র নির্বাচনে হাজি নুরুল ইসলামের কাছে হেরে ভূত হলেন সেই প্রশ্ন এখন ঘোরাফেরা করছে। হেরেছেন নাকি জোর করে হারানো হয়েছে? আপাতত এই প্রশ্নই ঘুরছে সর্বত্র।

রেখা পাত্রের পাশে বিজেপি যেভাবে দাঁড়িয়েছে তারপর কার্যত বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে চেয়েছিল। এই অবস্থায় বিজেপি মনে করেছিল রেখা পাত্রই সন্দেশখালির দুর্গা হয়ে দাঁড়াবেন। কিন্তু দিনের শেষে সাধারণ মানুষ পছন্দ করলেন হাজি নুরুল ইসলামকে। ফলে প্রথম ৫ রাউন্ড ভোট গণনায় সেই প্রভাব লক্ষ্য না করা গেলেও, ষষ্ঠ রাউন্ড গণনার পর থেকেই হাজি নুরুলের ফলাফল একটা ম্যাজিকাল টার্ন নেয়। এগোতে শুরু করেন হাজি নুরুল ওদিকে পিছিয়ে পড়তে থাকেন রেখা পাত্র। রেখা পাত্রের গাড়ির পিছনে তৃণমূলের তাড়া করার ছবিটাও আমরা দেখেছি। তারপরেই দেখা যায় বসিরহাট জুড়ে সবুজ আবিড় উড়তে, ওদিকে বিজেপি কার্যত দাঁড়াতেও পারে না। এরপরেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, ৬ রাউন্ড গণনার পর থেকেই যেভাবে তৃণমূল নিজের ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে তা দেখে একেবারে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, রেখা পাত্রের কেন্দ্রে এমন কি রহস্যজনক ঘটনা ঘটল যে পিছিয়ে পড়া হাজি নুরুলের আসন জেতার সংখ্যাটা অনেকটাই বাড়তে শুরু করল?

৬ রাউন্ড গণনার পর দেখা যায় হাজি নুরুল একবার এগিয়ে গেছিলেন প্রায় ৫ লক্ষ ভোটে। যা সেই সময় অবাক করে দিয়েছিল অনেককে। যা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোনদিন ডায়মন্ডহারবারে করতে পারেন নি। এরপরই বিজেপি যখন চেপে ধরে তখন ফের আরেকবার ভোট গণনা করা হয়। দেখা যায় গলদ রয়েছে গুন্তিতে। আসলে সেই সময় হাজি নুরুল এগিয়েছিলেন মাত্র দেড় লক্ষ ভোটে। তারপরই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কিভাবে ভোট গণনার সময় এই ভুল হল? শুভেন্দু অধিকারী সেই সময় বলেছিলেন, ভোট গণনার সময় কেন্দ্রে নাকি অন্য ব্যপার রয়েছে? তাহলে কী অন্য কোন খেলা হয়েছে? অনেকেই তো বলছেন, তৃণমূলের এই বিপুল জয়ের নেপথ্যে কি অন্য কোন খেলা হয়েছে? এই প্রশ্নটাই এখন সবথেকে বেশি ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু সত্যিই কি তৃণমূল খেলা খেলছে? কারণ অনেকেই বলছেন যে তৃণমূল খেলা খেলে নিয়েছে। আর তৃণমূল যেভাবে খেলেছে তার সামনে প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপি দাঁড়াতেও পারে নি। এখন বিষয়টা হচ্ছে যে, তৃণমূলের উপর দায় চাপিয়ে কি রাজ্য বিজেপির মাথারা সব দায় ঝেড়ে ফেলতে পারবেন? তৃণমূলের লক্ষ্য বিজেপিকে হারানোর। তারা সেটা করবেই। কিন্তু বিজেপি কি কোনভাবে তৃণমূলকে হারাতে পারবে এই বাংলায়? শুভেন্দু অধিকারী যা দাবি করছেন সেটা যদি সত্যি হয়, তাহলে কি রেখা পাত্রের হারের পিছনে তৃণমূলের অন্য খেলা চলেছে? কী বলছেন শুভেন্দু আর কী বলছেন রাজ্য বিজেপির মাথারা? এই নিয়ে আর কী বলতে চাইছেন রেখা পাত্র? আপনারা কি মনে করেন জানান কমেন্ট বক্সে।

বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ