Trending
ভারতে বামেরা কোথায়? দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়। আর যে কারণে বাম বিরোধী দল যেমন বিজেপি তারা বামেদের নিয়ে তেমন ভাবিত নয়। তারা মনে করে এই মুহূর্তে ভারতের মত দেশে বামেদের উত্থান শীতকালে এক পশলা বৃষ্টি আসার মতনই। লাভের লাভ কিছু হয় না। ফলে বিজেপি তেমনভাবে ভাবিত নয় ভারতে বামপন্থীদের নিয়ে। কিন্তু ইউরোপের ছবিটা ধীরে ধীরে যে বদলাচ্ছে। সেখানে মূলত ইউরোপে বামেদের একটা উত্থান ভালোরকম নজর কাড়ছে। আর সেটা বিশ্ব অর্থনীতির চাকা অন্যদিকেও ঘোরাতে পারে। ব্রিটেনের পর ফ্রান্সে এবার বামেদের অভ্যুত্থান। ফ্রান্স পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এবার বামেদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা বেশ অবাক করে দিয়েছে মধ্যপন্থী ইমানুয়েল মাকরের দল এবং অতি দক্ষিণপন্থী দলগুলোকে। এখন ফ্রান্সের সংসদে সবথেকে শক্তিশালী হয়েছে বাম জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট। ৫৭৭-টি আসনের মধ্যে জয় ছিনিয়ে এনেছে বামেরা। পেয়েছে ১৮২টা আসন। এদিকে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর জোট পেয়েছে ১৬৮টি আসন। আর একেবারে ধরাশায়ী হয়ে র্যাঙ্কিং-এর তিন নম্বরে চলে এসেছে কট্টর ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি পেয়েছে ১৪৩টা আসন। নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর অনেকেই বলছেন, নতুন সরকারের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া। তারপরেই প্রশ্ন উঠছে আমাদের ভারতের রাজনীতি এবং কূটনীতির অবস্থান নিয়ে। ফ্রান্সে বামেদের অভ্যুত্থান দিল্লিকে কোনভাবে বিপদে রাখতে পারে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে, ফ্রান্সে বামেদের উত্থান নিয়ে সামান্য হলেও বিচলিত নয় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কারণ মনে করা হচ্ছে ভারতের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক অনেকদিক থেকেই মজবুত। ফ্রান্স এমন একটা দেশ যাদের সঙ্গে ভারত প্রতিরক্ষা, সিকিউরিটি, রণকৌশলের মত নানা গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে। বরং সেদিক থেকে দেখতে গেলে আমেরিকা অনেকভাবে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলার চেষ্টা করেছে। তার মধ্যে মানবাধিকার, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, অথবা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার- এসব নিয়ে মার্কিন মুলুক বারেবারে বিজেপির সরকারকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ফ্রান্সের তরফ থেকে সেভাবে কোন প্রতিক্রিয়াই লক্ষ্য করা যায়নি। আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার মনে করছে, ফ্রান্সে বামেদের এগিয়ে আসাটা কোনভাবেই ভারতের জাতীয় স্বার্থকে নস্যাৎ করবে না। বরং ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে যে ইতিবাচক পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে সেটা বজায় থাকবে।
তবে ফ্রান্সের ক্ষেত্রে একটা মুশকিল যেটা হয়ে আছে, সেটা হল সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার এখনো তৈরি হয় নি। অনেকেই মনে করছেন, ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। ফলে জোট কি হবে সেই সম্পর্কেও এখনো অনেকটাই অজানা। এই বিষয়ে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ম্যাক্রোর সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে বামেরা এগিয়ে থাকলেও ম্যাক্রো কোনভাবেই নাকি বামেদের সঙ্গে জোট করতে রাজি নয়। তিনি মনে করেন এর ফলে ভবিষ্যতে ফ্রান্সে বামপন্থী বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে যাই হোক না কেন, ভারত সামান্য হলেও বিচলিত। কারণ কেন্দ্র মনে করছে, ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কথা হয়েছিল ধীরে ধীরে সবটাই হয়ত চলে যেতে পারে বিশ বাঁও জলে। যদিও ফরাসি বামপন্থীদের মধ্যে অভিবাসন নিয়ে বহুবার কড়া মনোভাব নিতে লক্ষ্য করা গেছে, তবে এবারে মনে করা হচ্ছে, সেটা ভারতের জন্য তেমন একটা অ্যাপ্লিকেবল হবে না। মানে সেটা ভারতীয়দের জন্য খুব একটা চিন্তার বিষয় হবে না। তার কারণ হল, ভারতীয়রা বিদেশে যেখানেই কর্মের খাতিরে গিয়েছেন সেটা তাঁদের নিজস্ব মেধা, পরিশ্রমকে হাতিয়ার করেই। ফ্রান্সের অর্থনীতিকে পোক্ত করার পিছনে ফ্রান্সে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের অবদানকে অবহেলা করা যাবে না। ফলে ফ্রান্সের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতীয়রা আগের মতনই নিশ্চিন্তে নিজের কর্মজীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। আপনারা কি মনে করেন সেটা জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ