Trending
এগিয়েও কি পিছিয়ে গেল বাম-কংগ্রেস জোট? বিজেপির রাস্তা আরও সাফ হল? পতনের হাতুড়ি পড়ল তৃণমূল ভবনের ছাদে?
বাম-কংগ্রেস জোট এখানে একত্রিত ভাবে বিশাল কোন আলোড়ন না ফেললেও বামেদের উত্থান নিঃসন্দেহে বঙ্গ রাজনীতির চর্চা হয়ে উঠেছে। তার অন্যতম একটা কারণ অবশ্যই ইয়ুথ। তরুণ রাজনীতি সচেতন বাঙালিদের মধ্যে শতরুপের ফ্যান ফলোয়িং যেমন রয়েছে, তেমনই দীপ্সিতা, মীনাক্ষী, সৃজন বা সায়নের ভক্ত সংখ্যা নেটিজেনদের মধ্যে কম নয়। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল বঙ্গ রাজনীতির রক্তিম অতীতকে আরও কিছুটা উসকে দিয়েছে বঙ্গ সাধারণের মনে। রেশন থেকে শাসন- করাপশন যেন তৃণমূলের পিছু ছাড়ে না। আর এই গোটা কর্মকাণ্ড সিবিআই, ইডির মত প্রতিষ্ঠান করলেও বিজেপির অঙ্গুলিহেলন ছাড়া যে হচ্ছে না সেই মত জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে তৃণমূল। এদিকে বামেরা স্বাভাবিকভাবেই কোন পক্ষ না নিয়ে স্বপক্ষের যুক্তি দেখিয়ে ফ্রন্টফুটে চলেই এসেছিল। তারপরই ঘটল একটা অঘটন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে বসলেন এটিঃ
পলিটিকাল এক্সপার্টরা বললেন, তৃণমূল পতনের কফিনে পেরেকটা হয়ত নিজেই মেরে দিলেন সুপ্রিমো। বিজেপির সঙ্গে পলিটিকাল রাইভালরি থাকতেই পারে। কিন্তু হিন্দু চেতনায় গিয়ে বিঁধেছে মমতার বক্তব্য। এমনটা নয় যে এটুকু বলেই তিনি চুপ করে গিয়েছেন। পরে বলেওছেন যে তিনি কোন প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা করছেন না। ব্যক্তি বিশেষে তাঁর আপত্তি রয়েছে। কিন্তু ততোক্ষণে যে স্ফুলিঙ্গ ধরে গিয়েছে। তালিকায় ভারত সেবাশ্রম সংঘ, রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন। একেবারে সনাতনী হিন্দুর গর্ভগৃহে। কিছু হিন্দুবাদীরা মনে করছেন যে, মুসলিম ভোটের দিকে তাকিয়েই মমতার এই একপেশে বক্তব্য। ফলে হিন্দুদের মধ্যে এই প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে, আর সেটাই স্বাভাবিক। সাধু, সন্ন্যাসীরা একের পর এক মন্তব্য করছেন ডিজিটাল, স্যাটেলাইট বা প্রিন্ট মিডিয়ায়। মমতার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে, মমতা বিরোধী মনোভাব বেশি চোখে পড়ছে। সেটা ছড়িয়েও পড়ছে হাওয়ার গতিতে।
বিজেপি নিজেদের জন্যই দূরদর্শী এজেন্ডা নিয়ে থাকে। সেটা ভালো কি খারাপ সেই বিতর্কে যাচ্ছি না। রাম মন্দির- এটা তাদের এজেন্ডা ছিলই। ৩৭০ ধারা বিলোপ- এটাও ছিল তাদের এজেন্ডায়। আর সেটা তারা করেছে। এই নিয়ে বিতর্কের মহাভারত লেখা হতে পারে, কিন্তু ফ্যাক্ট ইজ ফ্যাক্ট। আর বিজেপি খুব ভালোভাবেই জানে, লোকসভা ২০২৪ এর পরেই বিধানসভা ভোট। ততদিনে বাম-কংগ্রেস জোট আরও শক্তিশালী হতে পারত, যদিও দিনের শেষে সেই আলোটি আপাতত ঝাপসা হয়ে গেল। এই যে হিন্দু সনাতনীদের মধ্যে বারুদের ঘষাটি লেগে গেল, এই আঁচ শুরুতেই মিটে যাবে কিনা একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে থেকে গেল।
প্রধানমন্ত্রী নিজে এসে যখন তাঁদের প্রতিক্রিয়াকেই হাতিয়ার করে ভাবাবেগে প্রলেপ দেন, সেটা তখন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটের মত কাজ করে। সাধুদের মধ্যে যে বিক্ষোভের আঁচ এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা পরে বৃহৎ আকার নেবে নাতো? বিজেপির আসাটা মসৃণ হবে, জোরালো হবে আর বাম-কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যৎ আরও ক্ষীণ হবে- সেই দরজাই কি নিজের হাতে খুলে দিলেন মমতা?
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ